চার ব্যাংক পেয়েছে ৯৪৫ কোটি টাকার বিশেষ ধার, মানতে হবে শর্ত
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে যেসব ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়েছে, সেগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ ব্যবস্থায় তারল্য-সহায়তা দিয়েছে। প্রথম ধাপে ৯৪৫ কোটি টাকা ধার পেয়েছে চার ব্যাংক। এতে সুদের হার ধরা হয়েছে সাড়ে ১২ থেকে সাড়ে ১৩ শতাংশ। ব্যাংকগুলো হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টির (নিশ্চয়তা) বিপরীতে ইস্টার্ন ব্যাংক (ইবিএল), দ্য সিটি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি), ডাচ্–বাংলা ব্যাংক ও বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক এই ধার দিয়েছে। এর মধ্যে সিটি ব্যাংক একাই দিয়েছে ৭০০ কোটি টাকা।
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ইতিমধ্যে পরিবর্তন করা হয়েছে। এর সব কটি ব্যাংক এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ও নিয়ন্ত্রণে ছিল। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তৎকালীন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার আত্মগোপনে চলে যান। এরপর গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর। তিনি যোগ দিয়েই ব্যাংক খাতের সংস্কারে মনোযোগ দেন।
ধার নেওয়া দুর্বল ব্যাংকগুলোকে লিখিত ও মৌখিক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ব্যক্তি আমানতকারীরা টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন। এই টাকা দিয়ে অন্য ব্যাংকের ধারের টাকা শোধ করা যাবে না। ব্যাংকের আগের বা বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের কেউ জমানো টাকা তুলতে পারবেন না। নতুন করে কোনো ঋণ দেওয়া যাবে না। ডলার কেনার কাজেও এই টাকা খরচ করা যাবে না।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ৩০০ কোটি টাকা ধার পেয়েছে। এর মধ্যে সিটি ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা এবং এমটিবি ও ডাচ্–বাংলা ব্যাংক ৫০ কোটি টাকা করে দিয়েছে। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে সিটি ব্যাংক ৩০০ কোটি টাকা ও এমটিবি ৫০ কোটি টাকা দিয়েছে। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংককে ২৫ কোটি টাকা দিয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক। ন্যাশনাল ব্যাংক পেয়েছে ২৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সিটি ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা, এমটিবি ৫০ কোটি টাকা ও বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক ২০ কোটি টাকা দিয়েছে।
গ্রুপটির বিরুদ্ধে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ফলে তারল্যসংকটে পড়েছে ব্যাংকগুলো। এ ছাড়া মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদেও প্রশাসক বসানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, দুর্বল ব্যাংকগুলোকে গ্যারান্টির বিপরীতে যে টাকা ধার নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে তার ২৫ শতাংশ তারা প্রথম ধাপে পেয়েছে। এতে ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে আর টাকা ধার দেওয়া হবে না। তখন কৌশল পরিবর্তন করা হবে।
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ইতিমধ্যে পরিবর্তন করা হয়েছে। এর সব কটি ব্যাংক এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ও নিয়ন্ত্রণে ছিল। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তৎকালীন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার আত্মগোপনে চলে যান। এরপর গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর। তিনি যোগ দিয়েই ব্যাংক খাতের সংস্কারে মনোযোগ দেন।
যেসব ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণহীন ছিল, সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ বদলে দেওয়া হয়। একে একে ১১টি ব্যাংক ও ১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেন নতুন গভর্নর।
ব্যাংকগুলো হলো ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী, কমার্স, আল-আরাফাহ্, ন্যাশনাল, ইউসিবি, আইএফআইসি ও এক্সিম। আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি হলো আভিভা ফাইন্যান্স। এর মধ্যে নয়টিরই নিয়ন্ত্রণ ছিল সাবেক সরকারের ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচিত এস আলম গ্রুপের হাতে। গ্রুপটির বিরুদ্ধে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ফলে তারল্যসংকটে পড়েছে ব্যাংকগুলো। এ ছাড়া মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদেও প্রশাসক বসানো হয়েছে।
সারা বিশ্বে সম্পদমূল্যের ওপর ভিত্তি করে ব্যাংকগুলো বিশেষ তারল্য-সহায়তা পায়। বাংলাদেশে দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোর সম্পদমূল্য ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে। ফলে নতুন উপায়ে এসব ব্যাংককে তারল্য-সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তনের পর ক্ষুদ্র ও বড়, সব ধরনের আমানতকারী টাকা তোলার জন্য ব্যাংকগুলোতে ভিড় করছেন। এতে বেশির ভাগ ব্যাংকে তারল্যসংকট আরও প্রকট হয়ে ওঠে এবং সবাই টাকা পাচ্ছেন না। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া চলতি হিসাবে বড় ধরনের ঘাটতি থাকায় কয়েকটি ব্যাংকের চেক ক্লিয়ারিং সুবিধা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব ব্যাংকের গ্রাহকেরা এটিএম বুথ থেকেও টাকা তুলতে পারছেন না। এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সারা বিশ্বে সম্পদমূল্যের ওপর ভিত্তি করে ব্যাংকগুলো বিশেষ তারল্য-সহায়তা পায়। বাংলাদেশে দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোর সম্পদমূল্য ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে। ফলে নতুন উপায়ে এসব ব্যাংককে তারল্য-সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকগুলো হলো ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী, কমার্স, আল-আরাফাহ্, ন্যাশনাল, ইউসিবি, আইএফআইসি ও এক্সিম। আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি হলো আভিভা ফাইন্যান্স। এর মধ্যে নয়টিরই নিয়ন্ত্রণ ছিল সাবেক সরকারের ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচিত এস আলম গ্রুপের হাতে।