শীর্ষ কর্মকর্তাদের পদত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার: বাংলাদেশ ব্যাংক
পরিবর্তিত বাস্তবতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মচারীরা ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের যে পদত্যাগের দাবি করেছেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই ব্যক্তিদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে সদ্য পদত্যাগী সরকার। ফলে নতুন কোনো সরকারকেই তাঁদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এ ছাড়া কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া সরকারের কাছে পেশ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
আজ সকাল থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংকে অস্থিরতা শুরু হয়। কর্মচারীদের চাপের মুখে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর পদত্যাগপত্র দেন। এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মেজবাউল হক বলেন, তাঁরা পদত্যাগপত্র কার কাছে দিয়েছেন-তাঁদের নিয়োগ দিয়েছে সরকার; পদত্যাগপত্র দিতে হলে সরকারের কাছেই দিতে হবে। অন্য কারও কাছে তাঁরা পদত্যাগপত্র দিতে পারেন না।
গভর্নরের প্রসঙ্গে মেজবাউল হক বলেন, গভর্নর ছুটিতে আছেন; এখন ডেপুটি গভর্নর দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মচারীরা আজ প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের কাছে বিভিন্ন দাবি দাওয়া উত্থাপন করেছেন, যেমন পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসন, পে স্কেল, সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ ইত্যাদি। এসব অসন্তোষের কারণে কর্মচারীরা কেন শীর্ষ কর্মকর্তাদের পদত্যাগ দাবি করেছেন বলে উল্লেখ করেন মেজবাউল হক।
গভর্নরের অনুপস্থিতিতে ডেপুটি গভর্নরেরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে গভর্নরের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কিন্তু কর্মচারীরা ডেপুটি গভর্নরদের পদত্যাগ দাবি করায় তাঁরা সাদা কাগজে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হতে আরও সময় লাগলে কী হবে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নর জবাবে মেজবাউল হক বলেন, বাংলাদেশে ব্যাংকে দুই ধরনের কাজ হয়; প্রথমত, দৈনন্দিন কার্যক্রম; দ্বিতীয়ত, নীতিগত। দৈনন্দিন কার্যক্রম বিভাগীয় প্রধানেরাই চালিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু সরকার না থাকলে বড় ধরনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয় না। এখন মূলত দৈনন্দিন কার্যক্রমই চলবে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকেরা এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন সাতটি ব্যাংকের বিষয়ে জানতে চান। বলেন, এই সাতটি ব্যাংকের চলতি হিসাবে ঘাটতি আছে। বিশ্বের কোথাও কোনো ব্যাংক চলতি হিসাবের ঘাটতি নিয়ে চলতে পারে-এমন নজির নেই বলেই দেখা যায়। আপনারাই এসব করেছেন; এই বাস্তবতায় আপনাদের দিয়ে স্বায়ত্তশাসন সম্ভব কি না।
জবাবে মেজবাউল হক বলেন, এসব কিছু এখন নির্ভর করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর। তারা যে নির্দেশনা দেবে, তার ওপর। আইনি সংস্কারের কথা আমরা বলেছি; আজ যারা পদত্যাগের দাবি করেছেন তাঁদের আইনের ফাঁক ফোকর খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।