তরুণদের মাঝে অ্যাপের চাহিদা বেশি

মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), এক্সিম ব্যাংক

এই দ্রুত প্রাগ্রসর প্রযুক্তির যুগে আর্থিক সেবাকে শতভাগ ডিজিটাল করার জন্য প্রয়োজনীয় সব অবকাঠামো ইতিমধ্যেই প্রস্তুত হয়ে গেছে। প্লাস্টিক কার্ড, কনটাক্টলেস কার্ড এবং ইন্টারনেট, মোবাইল অ্যাপ এবং ফোন ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে কিউআর কোড-নির্ভর লেনদেনপদ্ধতি। যার ফলে কেনাকাটা, বিল পেমেন্ট, রিকশা ভাড়া—কোনো কিছুর জন্যই আর টাকার নোটে হাত দিতে হবে না। ডিজিটাল পদ্ধতিতেই ক্রেতার টাকা বিক্রেতার ব্যাংক হিসাবে বা এমএফএস হিসাবে চলে যাবে। এখন শুধু এই পদ্ধতিগুলোকে পরিচিত করা এবং জনপ্রিয় করে তোলার পালা। তাহলেই দেশের আর্থিক সেবা শতভাগ ডিজিটাল হয়ে যাবে। 

আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে অ্যাপ-নির্ভর পেমেন্ট দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্লাস্টিক কার্ডের মাধ্যমে এটিএম বুথ থেকে ক্যাশ উত্তোলনের সুবিধা থাকার কারণে প্লাস্টিক কার্ডের ব্যবহারকারীর সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই বেশি। লেনদেনের ক্ষেত্রে ক্যাশের প্রয়োজন যত কমে আসবে, অ্যাপ গ্রহণের হার ততই বৃদ্ধি পাবে। তরুণ গ্রাহকদের মাঝে অ্যাপের
চাহিদা বেশি।

শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক হিসাবে আমাদের ক্রেডিট কার্ড অপরেশনস ক্রয়-বিক্রয়ভিত্তিক। এখানে মুনাফা হিসাব করা হয় সরল হারে, কোনো চক্রবৃদ্ধির সুযোগ নেই। ফলে আমাদের ক্রেডিট কার্ডের ওপর আসলে সারা বছরই ছাড় থাকে। 

ক্রেডিট কার্ড মধ্যবিত্ত এবং চাকরিজীবীদের জীবনমানকে অবশ্যই উন্নত করেছে। ওষুধপত্র, চিকিৎসা খরচ এবং শিশুখাদ্যের মতো জরুরি পণ্য বলুন, আর নিত্যদিনের পণ্যই বলুন, ক্রেডিট কার্ডের কল্যাণে এসব প্রয়োজন সময়মতোই মেটানো সম্ভব হচ্ছে। ক্রেডিট কার্ড ঋণগ্রহীতাদের হিসাব পরিচালনার জন্য একটি কম খরচার সুবিধাজনক পদ্ধতি।

সরকার ইতিমধ্যেই ক্যাশলেস বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে। আমি সরকারি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। একটি পরিসংখ্যানে দেখতে পাই, এ বছরের শুরুতে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ইউজারের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৭ কোটি, প্রায় ১৯ কোটি মোবাইল কানেকশন একটিভ ছিল। তার অর্থ হচ্ছে, দেশে ক্যাশলেস ট্রান্সেকশনের মূল অবকাঠামো তৈরি হয়ে গেছে। এটাও সরকারের একটি বড় সাফল্য বলতে হবে। তবে ক্যাশবিহীন লেনদেনের পদ্ধতিগুলো জনপ্রিয় করে তোলার জন্য প্রচার চালাতে হবে।