৯ মাসে ন্যাশনাল ব্যাংকের লোকসান ১,১২৪ কোটি টাকা

চলতি বছরেও বড় ধরনের লোকসান দিয়ে যাচ্ছে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (এনবিএল)। বছরের প্রথম ৯ মাস জানুয়ারি-সেপ্টেম্বরে ব্যাংকটি ১ হাজার ১২৪ কোটি টাকা প্রকৃত লোকসান দিয়েছে। গত বছরের একই সময়ে ব্যাংকটি লোকসান করেছিল ৩৫৭ কোটি টাকা। ঋণ নেওয়া গ্রাহকেরা টাকা ফেরত না দেওয়ায় ব্যাংকটির এমন আর্থিক পরিণতি হয়েছে।

গ্রাহকদের ঋণ দিয়ে এনবিএলের যে পরিমাণ সুদ আয় হচ্ছে, তার দ্বিগুণ সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে আমানতকারীদের। ফলে বড় ধরনের ঘাটতিতে পড়ে ক্রমাগত লোকসান দিচ্ছে ব্যাংকটি। আজ মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লোকসানের আর্থিক তথ্য প্রকাশ করেছে ব্যাংকটি।

ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের একটি নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে ঋণ দিয়ে এর বিপরীতে সুদ আয় হয়েছে ১২ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা। অন্যদিকে একই সময়ে আমানতকারীদের সুদ পরিশোধ করেছে ২২ হাজার ৯৯ কোটি টাকা। ফলে সুদে নিট লোকসান দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এ ছাড়া পরিচালন খরচ ও অন্যান্য খাতে লোকসান হয়েছে। তবে সব মিলিয়ে ব্যাংকটির প্রকৃত লোকসান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১২৪ কোটি টাকা।

ওই নথি অনুযায়ী, বিপুল পরিমাণ ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ায় ব্যাংকটি ১৯ গ্রাহকের প্রায় ৫০৬ কোটি টাকা সুদ আয় খাতে নিতে পারেনি। এর মধ্যে সিএলসি গ্রুপের ৭৫ কোটি টাকা, এফএমসির ৪৮ কোটি টাকা, মিলেনিয়াম গ্রুপের ৩২ কোটি টাকা, ব্লুম সাকসেসের ৩৪ কোটি টাকা, ব্রডওয়ে রিয়েল এস্টেটের ৩২ কোটি টাকা, বেক্সিমকো গ্রুপের ৬৭ কোটি টাকা, ওপেক্স সিনহা গ্রুপের ৩৩ কোটি টাকা, পদ্মা ওয়েভিংয়ের ১৫ কাটি টাকা, রেডিয়াম কম্পোজিটের ১৩ কোটি টাকা, বসুন্ধরা গ্রুপের ৩৮ কোটি টাকা, নাসা গ্রুপের ২৩ কোটি টাকা, আরএসএ ক্যাপিটালের ১৯ কোটি টাকা, ফারাজি ও বাংলা ফিডের ৯ কোটি টাকা, ওয়াটার রাইডের ৬ কোটি টাকা, সান্তানার ১০ কোটি টাকা, ড্যাকিং স্মার্ট ব্যাটারির ১৮ কোটি টাকা, একটিভ ফাইনের ১২ কোটি টাকা, রূপায়ণ হাউজিংয়ের ৯ কোটি টাকা ও প্রকৃতি অ্যাসোসিয়েটের ৯ কোটি টাকা।

বেসরকারি খাতের প্রথম প্রজন্মের এই ব্যাংকটি ২০২২ সালেও বড় লোকসান করেছে। গত বছর  ব্যাংকটি ৩ হাজার ২৬০ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। ফলে ২০২১ সালের মতো ২০২২ সালেও শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি ব্যাংকটি।