ডিজিটাল লেনদেনবান্ধব নীতি দরকার

সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল

বছর পাঁচেক আগেও দেশের সব জায়গায় ডিজিটাল লেনদেনের বাস্তবায়ন বহুদূরের স্বপ্ন বলে মনে হতো। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির বাস্তবতায় ভর করে আমরা ‘ক্যাশলেস পেমেন্টে’র গুরুত্ব অনেকটাই উপলব্ধি করতে পেরেছি।

সাধারণ গ্রাহকের মধ্যে অভ্যস্ততা তৈরি হয়েছে এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ডিজিটাল লেনদেনের প্রক্রিয়াকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্পের সঙ্গে সংগতি রেখে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের সব লেনদেনের ৩০ শতাংশ এবং ২০৩১ সালের মধ্যে শতভাগ অনলাইন বা ক্যাশলেস লেনদেনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা ২০৪১ সালের মধ্যে সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের অন্যতম স্তম্ভ ‘স্মার্ট ইকোনমি’ তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। 

তবে সর্বস্তরে ক্যাশলেস লেনদেনের ব্যবস্থা গড়ে তুলতে উপযুক্ত নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রণোদনা দেওয়া জরুরি।

দেশে বর্তমানে গ্রাহকেরা ডিজিটাল পদ্ধতিতেই লেনদেন করতে পারছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ’ পথনকশার ভিত্তিতে ফুটপাতের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে ছোট ও মাঝারি ব্যবসা—সবকিছুকেই ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনে অন্তর্ভুক্ত করার কাজ চলছে। আর তাই সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিমধ্যে বাংলা কিউআর কোডের প্রচলন করেছে। 

২০১৯ সালে আমরা ‘ওয়ালেট লোডিং’ ও ‘অ্যাড মানি’ সুবিধা নিয়ে আসার মাধ্যমে মুঠোফোনে আর্থিক সেবা ও ব্যাংক কার্ড নেটওয়ার্কের মধ্যে লেনদেন নিশ্চিত করেছিলাম। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সময়ে আমরা ক্রেডিট কার্ড বিল পেমেন্ট এবং প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) গ্রহণের মতো সেবাগুলো সফলভাবে চালু করেছি। 

ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এটা এই সেবা নিতে মানুষকে নিরুৎসাহিত করছে। পিওএস যন্ত্র, কার্ড–সংক্রান্ত উপকরণ ও আর্থিক খাতসংশ্লিষ্ট অন্যান্য পণ্যের ওপর উচ্চহারে কর আরোপের ফলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। 

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সর্বত্র ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রয়োজন সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে আরও বেশি বিনিয়োগ। ডিজিটাল লেনদেনবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।