প্রবাসী আয়ে সাড়ে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, ছয় মাস ধরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি আসছে

মার্কিন ডলারছবি: সংগৃহীত

বিদায়ী জানুয়ারি মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন। গত বছরের একই মাসে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) এসেছিল ২১১ কোটি ৩১ লাখ ডলার। অর্থাৎ গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে এবার একই মাসে প্রবাসী আয় ৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি এসেছে।

সব মিলিয়ে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সাত মাসে প্রবাসীরা দেশে ১ হাজার ৫৯৬ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন। গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত ডিসেম্বরে ২৬৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা একক মাস হিসেবে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ।

জানুয়ারি মাসে যে আয় এসেছে, তার মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলো ৫১ কোটি ১১ লাখ, বিভিন্ন বিশেষায়িত ব্যাংক ১১ কোটি ৬০ লাখ, বেসরকারি ব্যাংকগুলো ১৫৫ কোটি ১৫ লাখ ও বিদেশি ব্যাংকসমূহ ৬৫ কোটি ডলার এনেছে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে দেশে ১ হাজার ৫৯৬ কোটি ১৮ লাখ মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ২৯১ কোটি ২৮ লাখ মার্কিন ডলার। ফলে অর্থবছরের ৭ মাস হিসাবে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৩০৫ কোটি ডলার।

গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রতি মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে। প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি এমন সময়ে এল, যখন দেশের বাজারে ডলার সরবরাহে ঘাটতি চলছে। বৈদেশিক মুদ্রার এই ঘাটতি মোকাবিলায় প্রবাসী আয় বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন।

মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ জোরালো হতে শুরু করে। সেই ধারাবাহিকতায় গত নভেম্বরে প্রবাসী আয় আসে ২২০ কোটি ডলার। এর আগের বছরের নভেম্বরে এসেছিল ১৯৩ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়। সেই হিসাবে গত নভেম্বরে প্রবাসী আয় বাড়ে প্রায় ১৪ শতাংশ। এ ছাড়া গত অক্টোবরে দেশে ২৩৯ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল, যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া গত আগস্টে ২২২ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ও অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় আসে।

প্রবাসী আয় হলো দেশে ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ, এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয় না, অথবা কোনো দায়ও পরিশোধ করতে হয় না। রপ্তানি আয়ের বিপরীতে দেশে ডলার এলেও তার জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে আবার বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয়। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতেও ডলারের প্রয়োজন হয়। ফলে প্রবাসী আয় বাড়লে দেশে ডলারের মজুত দ্রুত বাড়ে।