৫ বছর ধরে টেকসই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও আইডিএলসি
বেসরকারি খাতের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে টেকসই রেটিং তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে ১০টি ব্যাংক ও ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্থান পেয়েছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েক বছর ধরে এই তালিকা প্রকাশ করে আসছে। এবারের তালিকা করা হয়েছে ২০২৪ সালের তথ্যের ভিত্তিতে। টানা পাঁচ বছর এ তালিকায় রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্স।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগ সম্প্রতি টেকসই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে এই তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম সাজানো হয়েছে আদ্যক্ষরের ভিত্তিতে। সে জন্য মানের দিক থেকে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আছে বা কোনটি পিছিয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এবার টেকসই ১০ ব্যাংকের তালিকায় রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ্–বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি (ইবিএল), যমুনা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান দুটি হলো আইডিএলসি ফাইন্যান্স ও আইপিডিসি ফাইন্যান্স।
টেকসই ১০ ব্যাংক হলো ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ্–বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি (ইবিএল), যমুনা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক। আর্থিক প্রতিষ্ঠান দুটি হলো আইডিএলসি ফাইন্যান্স ও আইপিডিসি ফাইন্যান্স।
২০২৩ সালের আর্থিক তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা ২০২৪ সালের তালিকায় ছিল ১০ ব্যাংক ও ৩ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকগুলো হলো ব্র্যাক ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক (ইবিএল), এক্সিম ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) ও উত্তরা ব্যাংক। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো আইডিএলসি ফাইন্যান্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স ও ইউনাইটেড ফাইন্যান্স।
নতুন তালিকায় বাদ পড়েছে এক্সিম ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) ও উত্তরা ব্যাংক। আর যুক্ত হয়েছে ডাচ্–বাংলা ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক। এ ছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ফাইন্যান্স বাদ পড়েছে।
মূলত পাঁচটি সূচকের ভিত্তিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর টেকসই রেটিং বা মান যাচাই করা হয়েছে। সূচকগুলো হলো টেকসই অর্থায়ন, সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম, পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে অর্থায়ন, টেকসই কোর ব্যাংকিং ও ব্যাংকিং সেবার পরিধি। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের লক্ষ্যে কয়েক বছর ধরে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে ঋণ প্রদান বা অর্থায়ন ও সামাজিক দায়বদ্ধতা পরিপালনসহ নানা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। যেমন অনেক ব্যাংক এখন সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার করছে, গাছ কাটা কমাতে কাগজের ব্যবহার কমিয়েছে এবং অফিসে বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে।
২০২২ সালের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি ২০২৩ সালের তালিকায় সাত ব্যাংক ও চার আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্থান পায়। তখন ব্যাংকগুলোর মধ্যে ছিল ব্র্যাক ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক,
ট্রাস্ট ব্যাংক ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো অগ্রণী এসএমই ফাইন্যান্সিং কোম্পানি, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স, আইডিএলসি ফাইন্যান্স ও লংকান অ্যালায়েন্স ফাইন্যান্স।
২০২১ সালের তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশ করা হয়েছিল ২০২২ সালের সাসটেইনেবল রেটিং বা টেকসই মানের তালিকা। তাতে স্থান পেয়েছিল ১০ ব্যাংক ও ৫ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সে বছরের তালিকায় ছিল ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক (ইবিএল), এক্সিম ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, এনআরবি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছিল অগ্রণী এসএমই ফাইন্যান্সিং কোম্পানি, এসএমই ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, বিআইএফএফএল, আইডিএলসি ফাইন্যান্স ও আইপিডিসি ফাইন্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, টেকসই কোর ব্যাংকিং সূচকের মধ্যে ব্যাংকগুলোর ঋণের মান, মূলধন পরিস্থিতি, এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমকেও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এ কারণে এবার নতুন চার ব্যাংক যুক্ত হয়েছে, আবার খারাপ পরিস্থিতির কারণে চারটি বাদ পড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা আরও জানান, সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর গত বছর ব্যাংকগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন বেশ স্বচ্ছতার সঙ্গে তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি ব্যাংকগুলো নিজেরাও এ বিষয়ে সক্রিয় হয়। এ জন্য আগের তালিকার কোনো কোনো ব্যাংক বাদ পড়েছে। এবারের তালিকাটি অনেকটাই স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রণয়ন করা হয়েছে।
জানতে চাইলে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই রেটিংয়ে স্থান করে নেওয়ার জন্য আমরা পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন বাড়িয়েছি। আবার কিছু ঋণের হিসাবে ত্রুটি ছিল, তা–ও ঠিক করা হয়েছে। এর ফলে লক্ষ্য অনুযায়ী আমরা তালিকায় স্থান করে নিয়েছি।’