অগ্রাধিকার ব্যাংকিংয়ের প্রসার: গ্রাহকের জন্মদিনে যায় কেক, মেলে লাউঞ্জ সুবিধা
এই শ্রেণির গ্রাহকের জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, ঈদের মতো উৎসবসহ নানা দিবসে গ্রাহকের বাসায় কেকসহ উপহারসামগ্রী পাঠায় ব্যাংক। তাঁরা পরিবারসহ বিনা খরচে বিমানবন্দরে লাউঞ্জ ও গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া তাঁরা তারকা হোটেলে খাওয়া, বিমানভাড়া ও কেনাকাটায় নানা ছাড় পেয়ে থাকেন।
আপনি অনেক টাকার মালিক। দামি গাড়ি আর বিলাসবহুল বাড়িও থাকতে পারে আপনার। এরপরও ব্যাংকের চোখে আপনি একজন সাধারণ গ্রাহক। ব্যাংকিং সেবা নিতে আপনাকে লাইনে দাঁড়াতে হয়। কল সেন্টারে কথা বলতেও অপেক্ষায় থাকতে হয়। কিন্তু আপনি যদি বেশি আয় করার পাশাপাশি ব্যাংকে সঞ্চয় ও লেনদেন বেশি করেন, তাহলে হয়ে উঠতে পারেন প্রায়োরিটি বা বিশেষ অগ্রাধিকার পাওয়া গ্রাহক। তখন আপনার চাহিদামতো আর্থিক সেবা দিতে ব্যাংকের নির্দিষ্ট রিলেশনশিপ ম্যানেজার (আরএম) অপেক্ষায় থাকবেন।
এই সেবা দেওয়া হবে বিশেষ স্থানে। প্রয়োজনে তারা আপনার বাসায় গিয়েও সেবা দিয়ে আসবে। ব্যাংকগুলো আপনার জীবনের বিশেষ দিনগুলো আরও রঙিন করে তুলতে নানাভাবে পাশে থাকবে। সব মিলিয়ে আপনার পরিবারের জীবনযাত্রার সঙ্গী হয়ে উঠবে ব্যাংক।
একসময় শুধু উচ্চবিত্তরা এই সেবার গ্রাহক হলেও এখন মধ্যবিত্ত ও ভালো আয়ের গ্রাহকেরা এই সেবার দিকে ঝুঁকছেন। এতে তাঁদের একজনের সঙ্গে আরেকজনের পরিচয় ঘটছে। অনেক সময় ব্যাংকগুলো এসব গ্রাহককে নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ফলে সমাজে নতুন একটি শ্রেণি গড়ে উঠছে।
দেশে এ ধরনের অগ্রাধিকার পাওয়া ব্যাংক গ্রাহকের সংখ্যা এখন এক লাখের বেশি। তাঁরা ব্যাংকগুলোয় প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি আমানত জমা রেখেছেন। দিন দিন এ ধরনের গ্রাহকের সংখ্যা ও আমানতের পরিমাণ বাড়ছে। বদৌলতে ব্যাংকগুলোর প্রায়োরিটি তথা অগ্রাধিকার সেবা ক্রমেই বড় হচ্ছে।
বহুজাতিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯৯৯ সালে প্রথম দেশে প্রায়োরিটি বা অগ্রাধিকার ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। ২০০৯ সালে ইস্টার্ন ব্যাংক ও পরে দেশীয় বিভিন্ন ব্যাংক এই সেবা চালু করে। এতে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। ফলে অগ্রাধিকার ব্যাংকিং সেবার মান উন্নত হচ্ছে। যেমন সিটি ব্যাংক তাদের শাখার বাইরে পৃথকভাবে সিটেজেম সেন্টারের মাধ্যমে অগ্রাধিকার গ্রাহকদের সেবা দেয়। বর্তমানে ব্র্যাক ব্যাংক, ইউসিবি, প্রাইম ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি), সাউথইস্ট ব্যাংকসহ নতুন-পুরোনো আরও কিছু ব্যাংকের এই সেবা রয়েছে। ফলে গ্রাহকেরা বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন।
উন্নত বিশ্বে বহুজাতিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে এই সেবা দেওয়ার চর্চা আছে। বৈশ্বিকভাবে ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের সম্পদ ব্যবস্থাপনা, ব্যক্তিগত ব্যাংকিংসহ আরও কিছু সেবা দিয়ে থাকে। তবে আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে দেশের ব্যাংকগুলো এখনো ব্যাংকিং সেবার মধ্যেই রয়েছে। এর মাধ্যমে তারা একশ্রেণির গ্রাহকের জীবনযাত্রায় বাড়তি সুবিধা দেয়।
দেশে এ ধরনের অগ্রাধিকার পাওয়া ব্যাংক গ্রাহকের সংখ্যা এখন এক লাখের বেশি। তাঁরা ব্যাংকগুলোয় প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি আমানত জমা রেখেছেন।
অগ্রাধিকার গ্রাহকেরা কী সুবিধা পান
একসময় অগ্রাধিকার ব্যাংকিং সেবা ছিল মূলত সমাজের উঁচু শ্রেণির গ্রাহকদের জন্য, যাঁরা ব্যাংকিং সেবা নিতে গিয়ে বিশেষ গুরুত্ব আশা করেন। দেশীয় ব্যাংকগুলো এই সেবা চালু করার পর ভালো আয় করেন, এমন ব্যক্তিরাও এর গ্রাহক হতে শুরু করেন। তাঁরা ব্যাংকে গেলে বিশেষ গুরুত্ব পান। এই শ্রেণির গ্রাহকদের জন্য ব্যাংকের সব রকম কার্ড ও চেক বই হয় আলাদা ধরনের হয়। ফলে তাঁরা বাড়তি সুবিধা পান। শাখায় গিয়ে টাকা জমা দেওয়া বা উত্তোলন করা কিংবা অন্য কোনো সেবার জন্য তাঁদের অপেক্ষা করতে হয় না। ব্যাংকের ভেতরে বা আশপাশে পৃথক স্থানে প্রত্যেক গ্রাহককে নির্দিষ্ট কোনো ব্যাংক কর্মকর্তা সেবা দেন। কল সেন্টারের মাধ্যমে সেবা পেতেও তাঁদের অপেক্ষা করতে হয় না, সরাসরিই কথা বলতে পারেন তাঁরা।
এই শ্রেণির গ্রাহকের জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, ঈদের মতো উৎসবসহ নানা দিবসে গ্রাহকের বাসায় কেকসহ উপহারসামগ্রী পাঠায় ব্যাংক। তাঁরা পরিবারসহ বিনা খরচে বিমানবন্দরে লাউঞ্জ ও গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া বছরে একবার বিনা খরচে তারকা হাসপাতালে এ ধরনের গ্রাহকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, তারকা হোটেলে পরিবারসহ ডিনারের (রাতের খাবার) সুযোগ পান। সব ধরনের ব্যাংকিং সেবায় পান বিশেষ ছাড়। তাঁরা একদিকে আমানতে বেশি সুদ পান, অন্যদিকে কম সুদে ঋণসুবিধা পান। এ ছাড়া বিনিয়োগ, সম্পদ ব্যবস্থাপনাসহ নানা বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয় তাঁদের। এসব গ্রাহক তারকা হোটেলে খাওয়া, বিমানভাড়া ও কেনাকাটায় নানা ছাড় পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ ব্যাংকগুলো অগ্রাধিকার গ্রাহকদের জীবনযাত্রার সঙ্গী হয়ে যায়। ফলে তাঁরা অন্যদের তুলনায় আলাদা হয়ে ওঠেন।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের মাধ্যমে শুরু, পরে অন্যরা
১৯৯৯ সালে তৎকালীন বহুজাতিক এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংক রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রথম এই সেবা চালু করে। ২০০১ সালে এএনজেড গ্রিন্ডলেজকে অধিগ্রহণ করে আরেক বহুজাতিক ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। একই বছরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ঢাকার গুলশান ও চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে অগ্রাধিকার সেন্টার চালু করে। ২০০৩ সালে ব্যাংকটি রাজধানীর উত্তরায় আরেকটি সেবাকেন্দ্র খোলে। এখন ঢাকা ও চট্টগ্রামে ব্যাংকটির ৬টি অগ্রাধিকার সেবাকেন্দ্র রয়েছে। ৩৫ লাখ টাকা আমানত থাকলেই অগ্রাধিকার সেবার গ্রাহক হওয়া যায়।
২০০৯ সালে বেসরকারি খাতের ইস্টার্ন ব্যাংক অগ্রাধিকার ব্যাংকিং সেবা চালু করে। শাখার ভেতরেই পৃথক স্থানে দেশীয় ব্যাংকটি গ্রাহকদের সেবা দেয়। এখন সারা দেশে ২৩টি শাখায় অগ্রাধিকার সেবাকেন্দ্র রয়েছে ব্যাংকটির। এ জন্য রয়েছে নিবেদিত কর্মীবাহিনী। ব্যাংকটিতে ৫০ লাখ টাকা জমা রাখলেই এই সেবার গ্রাহক হওয়া যায়। ইস্টার্ন ব্যাংকের ১০ হাজার ৫০০ অগ্রাধিকার গ্রাহকের হিসাব জমা রয়েছে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এসব গ্রাহকের বড় অংশই ভূস্বামী, ব্যবসায়ী ও উচ্চ বেতনের চাকরিজীবী। সামনে ব্যাংকটি আরও অগ্রাধিকার সেবাকেন্দ্র চালুর পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।
আমরা বছরে পাঁচ-ছয়বার বিভিন্ন দিবসে তাঁদের কাছে পৌঁছে যাই। এর ফলে এই সেবা আলাদা পরিচিতি পেয়েছে। গ্রাহকদের সঙ্গে আলাদা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। গত চার বছরে আমাদের গ্রাহক ও আমানত দ্বিগুণ হয়ে গেছে।তানজেরী হক, প্রধান, প্রায়োরিটি অ্যান্ড উইমেন ব্যাংকিং বিভাগ, ইস্টার্ন ব্যাংক
ইস্টার্ন ব্যাংকের প্রায়োরিটি অ্যান্ড উইমেন ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান তানজেরী হক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই আমরা অগ্রাধিকার গ্রাহকদের চাহিদামতো সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমরা বছরে পাঁচ-ছয়বার বিভিন্ন দিবসে তাঁদের কাছে পৌঁছে যাই। এর ফলে এই সেবা আলাদা পরিচিতি পেয়েছে। গ্রাহকদের সঙ্গে আলাদা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। গত চার বছরে আমাদের গ্রাহক ও আমানত দ্বিগুণ হয়ে গেছে।’
ব্র্যাক ব্যাংকও ২০০৯ সালে প্রিমিয়াম ব্যাংকিং নামে অগ্রাধিকার ব্যাংকিং সেবা চালু করে। ব্যাংকটি শাখার ভেতরেই পৃথক স্থানে গ্রাহকদের এই সেবা দেয়। ৩০ লাখ টাকা জমা রাখলে এই সেবার গ্রাহক হওয়া যায়। এখন সারা দেশে ২৪টি শাখার মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক প্রিমিয়াম ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। ব্যাংকটিতে এই সেবার ১৫ হাজার গ্রাহক রয়েছেন, যাঁরা জমা করেছেন প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। গত বছরে ব্যাংকটির এই সেবার গ্রাহক ৬০ শতাংশ ও আমানত ৭০ শতাংশ বেড়েছে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের বাইরে অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য বাড়ছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো এতে গতি সঞ্চার করছে। ব্র্যাক ব্যাংক এসব স্থানে প্রিমিয়ার ব্যাংকিং সেবা ছড়িয়ে দিতে চায়।সেলিম আর এফ হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), ব্র্যাক ব্যাংক
ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন লিখিতভাবে বলেন, ‘ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের বাইরে অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য বাড়ছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো এতে গতি সঞ্চার করছে। ব্র্যাক ব্যাংক এসব স্থানে প্রিমিয়ার ব্যাংকিং সেবা ছড়িয়ে দিতে চায়। এই সেবার গ্রাহকের পরিবার ও পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সেবা পৌঁছে দিতে চায়। এখন এই সেবায় যাঁরা নিবেদিত কর্মী রয়েছেন, তাঁদের ভবিষ্যতে সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরামর্শক হিসেবে গড়ে তুলতে চায় ব্র্যাক ব্র্যাংক।’
নতুন মাত্রা যোগ করে সিটি ব্যাংক
অগ্রাধিকার ব্যাংকিং সেবায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে সিটি ব্যাংক। ২০১৩ সালে ব্যাংকটি শাখার বাইরে পৃথক স্থানে ‘সিটিজেম’ নামে এই সেবাকেন্দ্র চালু করে। এতে যোগ করা হয় বাড়তি অনেক সেবা। এখন রাজধানী ও চট্টগ্রামে ব্যাংকটির ৭টি কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রে রয়েছেন নিবেদিত কর্মী। সামনে আরও তিনটি সিটিজেম কেন্দ্র চালু করবে সিটি ব্যাংক। ৭৫ লাখ টাকা জমা করলে সিটেজেমের গ্রাহক হওয়া যায়। এই সেবার গ্রাহকেরা খাওয়া, রূপ ও শরীরচর্চা, কেনাকাটা, ভ্রমণসহ নানা ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন। ব্যাংকটির এই সেবার বর্তমান গ্রাহক ২৯ হাজার ৬৪১ জন, যাঁরা এ পর্যন্ত জমা করেছেন ১৫ হাজার ৪১২ কোটি টাকা। গত বছরে এই সেবার আমানত বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়েছে।
যাঁরা ব্যাংকের অগ্রাধিকার গ্রাহক, তাঁদের জীবনযাত্রা বুঝে সেবা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এ জন্য আমরা তাঁদের জন্য সিটিজেম সেন্টার গড়ে তুলেছি। এ ছাড়া শাখাগুলোর মাধ্যমেও তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী সেবা দেওয়া হচ্ছে।অরূপ হায়দার, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক, সিটি ব্যাংক
সিটি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক অরূপ হায়দার বলেন, ‘যাঁরা ব্যাংকের অগ্রাধিকার গ্রাহক, তাঁদের জীবনযাত্রা বুঝে সেবা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এ জন্য আমরা তাঁদের জন্য সিটিজেম সেন্টার গড়ে তুলেছি। এ ছাড়া শাখাগুলোর মাধ্যমেও তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী সেবা দেওয়া হচ্ছে। এতে গ্রাহকদের জীবনযাত্রা সহজ হয়ে উঠছে। বিশেষ গ্রাহকদের জন্য আমরা সর্বোচ্চটুকু করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ফলে এই খাতে আমাদের গ্রাহক প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সেই সুবাদে বাড়ছে ব্যাংকের আমানত।’
অন্যরাও এগিয়ে আসছে
২০১০ সালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি) ‘প্রিভিলেজ ব্যাংকিং’ নামে এই সেবা চালু করে। এখন ব্যাংকটির ৬টি কেন্দ্রে সেবাটি দেওয়া হয়। ৪০ লাখ টাকা জমা রাখলেই এই সেবার গ্রাহক হওয়া যায়। ব্যাংকটির এই সেবার গ্রাহক ২ হাজার ২০০ জন, যাঁরা জমা করেছেন ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) ২০১২ সালে ‘ইম্পেরিয়াল’ নামে অগ্রাধিকার ব্যাংকিং সেবা চালু করে। ব্যাংকটিতে ২৫ লাখ টাকা জমা করলেই এই সেবা পাওয়া যায়। এখন ১৭ হাজার ৮৪০ জন ইম্পেরিয়ালের গ্রাহক, যাঁরা জমা করেছেন ৬ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকটির ১৩টি কেন্দ্রে এই সেবা পাচ্ছেন গ্রাহকেরা। এই গ্রাহকদের জন্য রয়েছে বিমানবন্দরের লাউঞ্জ ব্যবহারের সুবিধা।
২০১৪ সালে প্রাইম ব্যাংক ‘মোনার্ক’ নামে অগ্রাধিকার ব্যাংকিং সেবা চালু করে, যেখানে ২০ লাখ টাকা জমা রাখলেই গ্রাহক হওয়া যায়। প্রায় সাড়ে ৭ হাজার গ্রাহক এই সেবার মাধ্যমে ব্যাংকটিতে ৫ হাজার কোটি টাকা জমা করেছেন। ৯টি সেন্টারের মাধ্যমে এই সেবা দিচ্ছে ব্যাংকটি।
সাউথইস্ট ব্যাংক ২০১৭ সালে ‘ইস্টিম’ নামে অগ্রাধিকার ব্যাংকিং সেবা দিতে শুরু করে। ২৫ লাখ টাকা জমা করলে সেবাটির গ্রাহক হওয়া যায়। এই সেবায় ১৬ হাজার ৬২৮ গ্রাহক প্রায় ৩ হাজার কোটি টাক জমা করেছেন। ৫টি কেন্দ্রের মাধ্যমে এই সেবা দিচ্ছে ব্যাংকটি।
এ ছাড়া ডাচ্বাংলা ব্যাংক ভিআইপি ব্যাংকিং, বহুজাতিক এইচএসবিসি সিলেক্ট ব্যাংকিং নামে এই সেবা দিচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় মধুমতি, মেঘনাসহ আরও কিছু ব্যাংক বিভিন্ন নামে এই সেবা দিচ্ছে।
অগ্রাধিকার ব্যাংকিং সেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা জানান, প্রত্যেক গ্রাহক বাড়তি গুরুত্ব চান। এ জন্য তাঁরা অগ্রাধিকার সেবায় আসছেন। এর ফলে এই সেবায় বেশি পরিমাণে আমানত আসছে, যা ব্যাংকের তহবিল খরচ কমাতে সাহায্য করছে এবং আলাদা ব্র্যান্ড ভ্যালু গড়ে উঠছে। সে জন্য ব্যাংকগুলো এই সেবা চালু করছে। আর যারা ইতিমধ্যে চালু করেছে, তাদের সেবায় নতুন নতুন সুবিধা যুক্ত হচ্ছে।