সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন বলেছেন, ব্যক্তির ওপর ভ্যাটের চাপ বাড়িয়ে অর্থনীতির গতি বাড়ানো যাবে না। অর্থনীতির গতি ও করের আওতা বাড়িয়ে সরকারের আয় বাড়াতে হবে। এতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে, অর্থনীতিও ভালো থাকবে। সরকার এখন চাইলে দেশি-বিদেশি ঋণ নিতে পারে। বিদেশ থেকে ঋণ এনে অর্থ লুট হয়েছে। এ জন্য অর্থনীতিতে সমস্যা হয়েছে।
আজ বুধবার প্রথম আলো আয়োজিত ‘ডিজিটাল লেনদেনের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা: প্রেক্ষিত ভ্যাট বৃদ্ধি’ শীর্ষক এক আলোচনায় অতিথির বক্তব্যে মাসরুর আরেফিন এ কথাগুলো বলেন। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর প্রধান অতিথি ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘দেশে ছাপানো টাকা রয়েছে ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি। এর মধ্যে ব্যাংকের বাইরে রয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা। বাইরে থাকা এই অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে আনা আমাদের উদ্দেশ্য। এ জন্য করের ক্ষেত্রে যেসব বাধা রয়েছে, সেগুলো তুলে দিতে হবে। তা হলেই অর্থনীতির মূল স্রোতে এসব টাকা চলে আসবে।’
সিটি ব্যাংকের এমডি বলেন, ক্রেডিট কার্ডে ঋণ নিতে হলে রিটার্ন জমা দিতে হয়। তবে ব্যক্তিগত ভোক্তা ঋণ নিলে রিটার্ন জমা দিতে হয় না। এর ফলে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বাড়ছে না। ক্রেডিট কার্ডে ঋণে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া উচিত। দেশে মাত্র ২৫ লাখ কার্ড রয়েছে। ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক ১ কোটি হওয়া উচিত।
মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘ছোট ও মাঝারি (এসএমই) ঋণে খেলাপির হার খুবই কম। আমাদের ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ঋণে খেলাপি ১ শতাংশের নিচে। বিকাশের গ্রাহকদের আমরা ১১৮ কোটি টাকা অতিক্ষুদ্র (ন্যানো) ঋণ দিয়েছি। সেখানেও খেলাপির হার খুবই কম। অথচ ব্যাংকগুলোতে বড় ঋণে খেলাপির হার ২৫-৩০ শতাংশ।’
ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে নানা ঝুঁকি আছে উল্লেখ করে মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘এর মাধ্যমে গ্যাম্বলিং ও ক্যাসিনোসহ নানা ধরনের অপরাধের লেনদেন হচ্ছে। সব ব্যাংক এসব ঝুঁকি মোকাবিলা করছে। আমাদের ব্যাংকেও রাজশাহী ও কুষ্টিয়া শাখায় এমন ঘটনা ধরা পড়েছে। গানের শিক্ষকের হিসাবে তিন দিনে ৬৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এসব রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বাংলাদেশ ব্যাংককে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। না হলে তাদের প্রতিরোধ করা যাবে না।’