এখনো কেউ পাচারের টাকা ফেরতের সুযোগ নেননি

যেহেতু ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বিদেশ থেকে ওই অর্থ দেশে আসবে, সেহেতু প্রশ্ন করার সুযোগ নেই, তা বিদেশে বৈধ, নাকি অবৈধভাবে গচ্ছিত ছিল।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়
ছবি: সংগৃহীত

গত দেড় মাসে একজন করদাতাও ৭ শতাংশ কর দিয়ে পাচার করা টাকা বিদেশ থেকে দেশে আনেননি। এমনকি এই সুযোগ ব্যবহার করে বিদেশে বৈধভাবে গচ্ছিত টাকাও দেশে আসেনি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর বিভাগ সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটের বড় চমক ছিল বিদেশে পাচার করা টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া। তখন নীতিনির্ধারকেরা আশা করেছিলেন, এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে অনেকেই দেশে টাকা আনবেন। কিন্তু প্রথম দেড় মাসের এমন ‘লক্ষ্মী’ করদাতার দেখা মেলেনি।

এনবিআরের একাধিক আয়কর কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মেয়াদের শেষ দিকে সাধারণত এ ধরনের সুযোগ করদাতারা বেশি নেন। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না বলে তাঁরা মনে করেন।

গত ১ জুলাই থেকে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত, অর্থাৎ এক বছরের জন্য ব্যাংকিং চ্যানেলে বিদেশ থেকে অর্থ আনলে ৭ শতাংশ কর দিয়ে তা কর নথিতে দেখালেই বৈধ হয়ে যাবে, এমন সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এই সুযোগ নিলে এনবিআরসহ অন্য কোনো সংস্থা এই বিষয়ে প্রশ্ন করবে না। পাশাপাশি বিদেশে সম্পদ বা অর্থ পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তি হিসেবে সমপরিমাণ অর্থ জরিমানা করার ক্ষমতা কর কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে।

তবে শর্ত নিয়ে কিছুটা অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। এই বিধান চালুর এক মাস সাত দিন পর ৭ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে বিদেশ থেকে অর্থ এনে
কর নথিতে দেখানোর ব্যাখ্যা দেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তিনি জানিয়েছেন, কালোটাকা নয়, বিদেশে থাকা বৈধ টাকা দেশে এনে কর নথিতে দেখানো যাবে, যদিও এনবিআর চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যের সঙ্গে প্রজ্ঞাপনের মিল নেই।

এর এক দিন পরই বাংলাদেশ ব্যাংক একটি আদেশ জারি করে। ৮ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের চিঠি লিখে জানায়, ৭ শতাংশ কর দিয়ে বাংলাদেশের বাইরে যে কোনোরূপে গচ্ছিত ও অপ্রদর্শিত অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বৈধভাবে দেশে এনে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করা যাবে।

যেহেতু ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বিদেশ থেকে ওই অর্থ দেশে আসবে, সেহেতু কোথাও প্রশ্ন করার সুযোগ নেই যে ওই অর্থ বিদেশে বৈধ, নাকি অবৈধভাবে গচ্ছিত ছিল।

তবে বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বিধিনিষেধ আছে। এসব বিধিনিষেধের কারণে অনেকেই উৎসাহী হন না।