ডলার–সংকট: ইডিএফ ঋণ পরিশোধের ব্যর্থতায় দিতে হবে দণ্ডসুদ
ডলার–সংকটের কারণে ডলারে দেওয়া ঋণের তদারকি জোরদার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ঋণের অর্থ সময়মতো পরিশোধ না হলে দণ্ডসুদ আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সাড়ে ৪ শতাংশ সুদ আরোপ করা হবে। ফলে গ্রাহককে বেশি সুদ দিতে হবে।
গতকাল রোববার বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এক নির্দেশনায় এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ডলার–সংকটের কারণে এর আগে ইডিএফ তহবিল থেকে ঋণস্থিতি কমাতে এবং আদায় জোরদার করতে দফায় দফায় সুদহার বাড়ানো হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, লক্ষ করা যাচ্ছে ইডিএফ থেকে ঋণ নিয়ে সময়মতো পরিশোধ করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় পরিশোধের তারিখের পর সময়কালের জন্য ব্যাংকগুলোকে সাড়ে ৪ শতাংশ অতিরিক্ত সুদ দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোর হিসাব থেকে বাড়তি সুদের অর্থ কেটে নেবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, একসময় ইডিএফের সুদহার ছিল অনেক কম। তবে ডলার–সংকটের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে সুদের হার কয়েক দফায় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ২ ফেব্রুয়ারি শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ব্যাংকগুলোর জন্য ৩ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে সাড়ে ৪ শতাংশ করা হয়। কোনো ঋণ সময়মতো ফেরত না এলে এখন থেকে দণ্ডসহ ব্যাংক পর্যায়ে সুদহার দাঁড়াবে সাড়ে ৭ শতাংশ, আর গ্রাহককে দিতে হবে ৯ শতাংশ।
বর্তমানে ইডিএফের আকার ৭০০ কোটি ডলার। তবে তহবিল থেকে ৬০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ দেওয়া হচ্ছে না। এটি একটি পুনঃ অর্থায়ন তহবিল। এই তহবিল থেকে রপ্তানিকারকেরা ঋণ নিলে তা ২৭০ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে যে প্রভাবশালী রপ্তানিকারকেরা ঋণ নিয়ে সময়মতো অর্থ ফেরত দেন না। ফলে ব্যাংকগুলোকে ডলারের ঋণ শোধ করতে হয়।
অন্যদিকে ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের নামে টাকায় ঋণ সৃষ্টি করে। দেখা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের ঋণ একসময় খেলাপি হয়ে পড়েছে। এসব কারণে তদারকি জোরদার করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ইডিএফের আকার কমিয়ে আনার সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি রিজার্ভের প্রকৃত হিসাব করতেও বলেছে আইএমএফ।