এক যুগ পূর্তি করল মিডল্যান্ড ব্যাংক পিএলসি। এই দীর্ঘ সময়ে আপনাদের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে কোনটিকে বিবেচনা করছেন?
আহসান-উজ-জামান: এক যুগ পূর্তি আমাদের জন্য গর্বের, আনন্দের এবং একই সঙ্গে কৃতজ্ঞতার। গ্রাহকের আস্থাই এক যুগে মিডল্যান্ড ব্যাংকের সবচেয়ে বড় অর্জন। আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে আমরা গ্রাহকদের পাশে থেকেছি। মূলত সুপরিকল্পিত পরিচালনা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে চলা এবং সময়োপযোগী সেবা প্রদানের মাধ্যমেই এই বিশ্বাস গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে।
১২ বছরের পথচলায় চ্যালেঞ্জ কী ছিল এবং সেগুলো কীভাবে মোকাবিলা করেছেন? এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে কী ধরনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন?
আহসান-উজ-জামান: একটি নতুন ব্যাংক হিসেবে প্রথম দিকে আমাদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ ছিল গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন। সেই সঙ্গে বাজারে নিজেদের অবস্থান তৈরি করা। তবে সুশাসন, পেশাদারি এবং সময়োপযোগী সেবা নিশ্চিতের মাধ্যমে আমরা সেটি করতে পেরেছি। এ ছাড়া ২০২০ সালে করোনাকালে আর্থিক লেনদেন বৈশ্বিক ও দেশীয় অর্থনৈতিক অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, করোনা–পরবর্তী পুনরুদ্ধারের সময়সহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। আমরা সব সময় চেষ্টা করেছি দৃঢ়তা, সততা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে সেগুলো মোকাবিলা করতে।
পাশাপাশি এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের নীতিনির্ধারকদের সহযোগিতা অত্যন্ত প্রশংসনীয় ছিল। তাঁদের সময়োপযোগী নীতিমালা, দিকনির্দেশনা এবং সহনশীল মনোভাব আমাদের সাহস জুগিয়েছে। ভবিষ্যতেও আমরা চাইব, নীতিনির্ধারকেরা ব্যাংকিং খাতের আধুনিকায়ন, গ্রাহক নিরাপত্তা এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে এমন সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন।
মিডল্যান্ড ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পেছনে মূল ভাবনা ও প্রেরণা কী ছিল?
আহসান-উজ-জামান: গ্রাহকসেবা, সততা, উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তি—এ চারটি বিষয় ছিল মূল ভাবনায়। কারণ, ব্যাংকিং মানে শুধু আর্থিক লেনদেন নয়; বরং একটা সম্পর্ক, একটা দায়বদ্ধতা। সেই সঙ্গে গ্রাহকের আস্থা অর্জনকে আমরা রেখেছি সর্বোচ্চ প্রাধান্যের তালিকায়।
আর প্রেরণার বিষয়ে বলব, আমরা দেখতে পাই, দেশের কিছু জায়গায় ব্যাংকিং সুবিধার অভাব আছে। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই আমরা ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে চেয়েছি শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রান্তিক জনগণের কাছে, বিশেষ করে ব্যাংকিং সেবাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায়। যা ভবিষ্যতেও উন্নয়নের অংশীদার হয়ে গ্রাহকের পাশে থেকে এগিয়ে চলবে।
প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন বা ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে মিডল্যান্ড ব্যাংক কী কী উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে?
আহসান-উজ-জামান: মিডল্যান্ড ব্যাংক শুরু থেকেই প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিয়েছে। যাত্রার প্রথম দিকেই ‘কন্ট্যাক্ট সেন্টার’ চালু করা হয়েছে, যেখানে গ্রাহক তাঁর যেকোনো দরকারে সহজেই ব্যাংকের সঙ্গে ১৬৫৯৬ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন। সেই সঙ্গে রয়েছে ‘মিডল্যান্ড অনলাইন’ অ্যাপ, যা একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা। এর মাধ্যমে কাস্টমার অনবোর্ডিং, ফান্ড ট্রান্সফার থেকে শুরু করে এফডিআর বা ডিপিএস খোলা, ইউটিলিটি বিল প্রদান, চেক বইয়ের অনুরোধ, ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, ডিজিটাল ল্যান্ডিং ইত্যাদি সেবা ঘরে বসেই গ্রহণ করতে পারেন। এ ছাড়া করপোরেট ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকদের জন্য রয়েছে ‘মিডল্যান্ড ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট’ (এমসিএম), যা একটি আধুনিক ও কার্যকর প্ল্যাটফর্ম। এ ছাড়া ‘ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ’ (এনপিএসবি), ‘আরটিজিএস’, ‘বিইএফটিএন’, ‘বিনিময়’, ‘একপে’ ইত্যাদি প্রযুক্তিনির্ভর সেবা চালু রয়েছে মিডল্যান্ড ব্যাংকে।
পাশাপাশি আমরা ‘ই-কেওয়াইসি’ প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘরে বসে অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা চালু করেছি। এ ছাড়া ‘গ্রিন পিন’ সুবিধা দিয়ে গ্রাহকেরা তাঁদের ডেবিট কার্ডের পিন নিজেরাই নির্ধারণ বা পরিবর্তন করতে পারেন।
কোন কোন বিশেষত্বের কারণে মিডল্যান্ড ব্যাংককে আপনি অন্যান্য ব্যাংকের চেয়ে আলাদা ভাবেন?
আহসান-উজ-জামান: আমাদের অন্যতম বিশেষত্ব হলো, আমরা একটি সুশাসননির্ভর, প্রযুক্তিনির্ভর এবং গ্রাহককেন্দ্রিক ব্যাংক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমাদের মূল শক্তি দক্ষ মানবসম্পদ, যাদের মধ্যে রয়েছে দৃঢ় ঐক্য, নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধ। আমাদের কর্মীরা কেবল কাজের অংশ নন, তাঁরা একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল, সহযোগিতাপূর্ণ এবং সম্মিলিতভাবে এগিয়ে চলার মানসিকতা ধারণ করেন। যা আমাদের সাংগঠনিক সংস্কৃতিকে আরও দৃঢ় করেছে।
এ ছাড়া আমরা একটি সুসংগঠিত ও শক্তিশালী পোর্টফোলিও গড়ে তুলেছি। সেখানে আকার নয়, গুণগত মানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। আমাদের প্রতিটি কার্যক্রমে থাকে যথাযথ পরিকল্পনা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণের সর্বোচ্চ প্রয়াস। এই কমপ্লায়েন্স-সংস্কৃতি আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়িয়েছে এবং ব্যাংক হিসেবে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছে।
গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আপনারা কোন বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখেন?
আহসান-উজ-জামান: মিডল্যান্ড ব্যাংক বরাবরই বিশ্বাস করে, একটি ব্যাংকের সাফল্যের মূল ভিত্তি হচ্ছে গ্রাহক সন্তুষ্টি। এ জন্য আমরা গ্রাহকসেবাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিই। প্রথমত, আমরা এমন একটি ব্যাংকিং পরিবেশ গড়ে তুলেছি, যেখানে গ্রাহকেরা দ্রুত, সহজ ও নির্ভরযোগ্য সেবা পেয়ে থাকেন। পাশাপাশি আমাদের ডিজিটাল ব্যাংকিং অ্যাপ এবং এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সেবা পৌঁছে দিচ্ছে সময়মতো ও কার্যকরভাবে। এ ছাড়া গ্রাহকের চাহিদা বুঝে প্রোডাক্ট ডিজাইন করি, যা বাস্তবিকভাবে গ্রাহকের প্রয়োজন পূরণ করে। আমাদের ঋণসেবা, সুপার সেভার, স্কুল সেভার, ডিপিএস স্কিম বা লাখপতি, কোটিপতি স্কিমগুলো তারই বাস্তব প্রমাণ। যেখানে গ্রাহকের সামর্থ্য এবং ধর্মীয় ভাবাপন্নতার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়। সার্বিকভাবে আমরা গ্রাহককে শুধু একটি সংখ্যা নয়; বরং একটি সম্পর্ক হিসেবে বিবেচনা করি। এ মূল্যবোধই আমাদের গ্রাহকসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও আলাদা করে তুলেছে।
ব্যাংকের মানবসম্পদ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ বিষয়ে কী ধরনের উদ্যোগ রয়েছে আপনাদের?
আহসান-উজ-জামান: মিডল্যান্ড ব্যাংক একটি কর্মিবান্ধব প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে আমাদের প্রায় ৯০০ কর্মী আছে। এখানে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ, সময়মতো ইনক্রিমেন্ট, প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণোত্তর কার্যক্রম চালু আছে। কর্মীদের বাৎসরিক একটা মূল্যায়ন সময়মতো করে থাকি। এ ছাড়া আমরা পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে ব্যাংকিং খাতে আমরাই প্রথম প্রতিষ্ঠান, যাঁরা কর্মীদের ঐচ্ছিকভাবে এই গণপ্রস্তাবে অংশগ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করেছি। অনেক কর্মী স্বতঃস্ফূর্তভাবে এখানে অংশগ্রহণও করেছে। এ ছাড়া আমাদের কর্মীদের নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণ ও পুনঃপ্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়, যাতে তারা সব সময় পরিবর্তনশীল ব্যাংকিং প্রেক্ষাপট ও প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে।
ভবিষ্যতে ব্যাংকটিকে আরও গ্রাহকবান্ধব করতে কোনো নতুন সেবা, প্রযুক্তি বা প্রোডাক্ট চালুর পরিকল্পনা কি আছে?
আহসান-উজ-জামান: সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবং গ্রাহকের চাহিদাকে সামনে রেখে ভবিষ্যৎমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করে মিডল্যান্ড ব্যাংক। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি, একটি ব্যাংকের উন্নয়ন মানেই কেবল আয় বৃদ্ধি নয়; বরং গ্রাহকের অভিজ্ঞতা উন্নত করা এবং প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে আরও সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ভবিষ্যতে গ্রাহক যেন ঘরে বসেই আরও বেশি সেবা নিতে পারেন, সে জন্য ‘মিডল্যান্ড অনলাইন’ প্ল্যাটফর্মে নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করছি। যেখানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলা, ঋণ আবেদন কিংবা পরামর্শ নেওয়ার সুযোগ তৈরি করবে।
এ ছাড়া আমরা কিছু নতুন সেবা চালু করেছি। যেমন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, যার মাধ্যমে বিনিয়োগ-সচেতন গ্রাহকদের জন্য বৈচিত্র্যপূর্ণ সেবা চালু আছে। আরেকটি হলো ব্যাংকাস্যুরেন্স, যার মাধ্যমে গ্রাহকদের জন্য আর্থিক সুরক্ষার নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি ‘মার্চেন্ট ব্যাংকিং’–এর মতো নতুন কিছু সেগমেন্ট চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি। আরও রয়েছে ‘ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি উইং’ গঠন করার উদ্যোগ। যাতে দেশের জনগণ, বিশেষ করে তরুণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আর্থিক শিক্ষা ও সচেতনতার বিষয়ে জানতে পারে।
নারীবান্ধব ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে আপনাদের উদ্যোগ ও অবদান সম্পর্কে জানতে চাই।
আহসান-উজ-জামান: দেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী যেহেতু নারী, তাঁদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা ছাড়া প্রকৃত অর্থে জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ বিশ্বাস থেকেই মিডল্যান্ড ব্যাংক নারীবান্ধব ব্যাংকিং সেবায় শুরু থেকেই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। সেটির অংশ হিসেবে নারী উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, ব্যাংকিং সেবার সঠিক ধারণা প্রদান এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে নারী গ্রাহকদের আর্থিক ক্ষমতায়নে আমরা কাজ করছি। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩০ কোটি টাকার ঋণ নারী উদ্যোক্তাদের দেওয়া হয়েছে, যেখানে উপকারভোগী হয়েছেন প্রায় ৭ হাজার নারী উদ্যোক্তা।
পাশাপাশি এ বছরের শুরুতেই বিশেষভাবে নারী গ্রাহকদের জন্য ‘এমডিবি সাথী’ (কনভেনশনাল) এবং ‘এমডিবি সালাম সাথী’ (ইসলামি) নামে নতুন প্রোডাক্ট এনেছি আমরা। মাত্র পাঁচ মাসে এই দুই প্রোডাক্টে ইতিমধ্যে হাজারের বেশি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। যেখানে মোট জমার পরিমাণ সাড়ে তিন কোটি টাকার কাছাকাছি। এটি নিঃসন্দেহে আমাদের এ উদ্যোগের প্রতি নারীদের আস্থার প্রমাণ দেয়।
বাংলাদেশের বর্তমান ব্যাংকিং খাতকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? সেখানে সামগ্রিক বিবেচনায় মিডল্যান্ড ব্যাংকের অবস্থান জানতে চাই।
আহসান-উজ-জামান: বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত একটি চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাময় সময়ের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, আমদানি ব্যয় এবং ঋণখেলাপি বৃদ্ধির মতো কিছু বাস্তব চ্যালেঞ্জ এ খাতের ওপর প্রভাব ফেলেছে। তবে এর মধ্যেও আমাদের ব্যাংকিং খাত টিকে আছে—নিয়ন্ত্রক সংস্থার সময়োপযোগী নীতি এবং ব্যাংকগুলোর অভিযোজন ক্ষমতার কারণে। তবে আশঙ্কা করছি, ভবিষ্যতের পথ আরও কঠিন হতে পারে। তবে আমরা প্রস্তুত। আমরা চাই, আগামী দিনগুলোতে আরও গ্রাহকবান্ধব সেবা এবং অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে গ্রাহকদের আরও কাছে যেতে।
নিরাপদ ব্যাংকিং নিশ্চিতে মিডল্যান্ড ব্যাংক কী ধরনের সুরক্ষাব্যবস্থা অনুসরণ করে?
আহসান-উজ-জামান: আমরা সব সময় চেষ্টা করি যেন গ্রাহকের লেনদেন ও তথ্য সুরক্ষিত থাকে। প্রতিটি ডিজিটাল লেনদেনে দ্বিস্তর প্রমাণীকরণ বা ‘টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন’ ব্যবস্থা চালু রয়েছে। পাশাপাশি ‘মিডল্যান্ড অনলাইন’ অ্যাপে লগইন কিংবা লেনদেনের সময় ‘ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড’ (ওটিপি) ও ‘বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন’–এর মতো আধুনিক নিরাপত্তাব্যবস্থা ব্যবহার করেছি। এ ছাড়া গ্রাহকের যেকোনো লেনদেনের পরপরই এসএমএস ও ই–মেইল অ্যালার্ট পাঠানো হয়। যাতে গ্রাহক তাৎক্ষণিকভাবে সব ধরনের লেনদেন সম্পর্কে অবগত থাকতে পারেন এবং প্রয়োজনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারেন। পাশাপাশি যেকোনো নিরাপত্তাজনিত বিষয়েই তাৎক্ষণিক সেবা নিশ্চিতে রয়েছে কন্ট্যাক্ট সেন্টার। আর নিয়মিতভাবে কর্মী ও গ্রাহকদের সাইবার সিকিউরিটি ও নিরাপদ ব্যাংকিং চর্চা নিয়ে সচেতন করা হয়।
নতুন প্রজন্মের ব্যাংকারদের জন্য আপনার পরামর্শ কী? এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে গ্রাহকদের উদ্দেশে কী বলতে চান?
আহসান-উজ-জামান: ব্যাংকিং খাত অত্যন্ত গতিশীল ও প্রযুক্তিনির্ভর একটি ক্ষেত্র। তাই একজন ভালো ব্যাংকার হওয়ার জন্য দরকার সততা, ধৈর্য, শৃঙ্খলা এবং নিয়মকানুন বা কমপ্লায়েন্সের প্রতি আন্তরিকতা ও অঙ্গীকার। সেই সঙ্গে ডিজিটাল সেবা এবং সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে সচেতন থাকা ও নিজেকে আপডেট রাখা প্রয়োজন।
মিডল্যান্ড ব্যাংকের এক যুগ পূর্তিতে আমাদের সব গ্রাহক, কর্মী ও স্টেকহোল্ডারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনাদের আস্থা, সহযোগিতা ও ভালোবাসার কারণেই আমরা এ পর্যায়ে পৌঁছাতে পেরেছি। আধুনিক, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করাই আমাদের সব সময়ের লক্ষ্য। ভবিষ্যতেও আপনাদের পাশে থেকে এ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর।
প্রথম আলো: ধন্যবাদ।
আহসান-উজ-জামান: আপনাকেও ধন্যবাদ।