এখন থেকে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) চাইলেই পদত্যাগ করে প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যেতে পারবেন না। কর্তৃপক্ষও পারবে না যখন-তখন কোনো এমডিকে সরিয়ে দিতে। মেয়াদ শেষের আগে কোনো এমডিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়তে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে ব্যাখ্যা দিতে হবে। কমিটি যে সিদ্ধান্ত দেবে, তা-ই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা অনুমোদন করলে এক মাস পর তা কার্যকর হবে।
এমডি হিসেবে নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগ পেতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমিটির কাছে মৌখিক পরীক্ষাও দিতে হবে। এরপরই তাঁর নিয়োগ ও মেয়াদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এমডির চুক্তির মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ তিন বছর। এ ছাড়া কেউ এমডি হিসেবে নিয়োগ পেতে চাইলে দ্বৈত নাগরিক কি না, সে তথ্য জানাতে হবে। যদি কোনো দেশে দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের অনুমতির জন্য আবেদন প্রক্রিয়াধীন থাকে, জানাতে হবে তা–ও। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বিদেশ ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা থাকলে তার ঘোষণাও দিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল সোমবার এসব শর্ত জুড়ে দিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডিদের নিয়োগ ও দায়দায়িত্ব সম্পর্কিত নীতিমালা জারি করেছে। এতে এমডিদের সুরক্ষা দেওয়ার কথা যেমন বলা আছে, নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে তাঁদের দায়দায়িত্বও।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঋণখেলাপি, করখেলাপি ও আর্থিক অনিয়মে জড়িত কেউ এমডি হতে পারবেন না। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে আছেন, তেমন কোনো সদস্যের পরিবারের কেউ পারবেন না এমডি হতে। এমডি হতে ২০ বছরের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। পদে থাকা যাবে ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত। তবে কেউ একবারে তিন বছরের বেশি সময়ের জন্য নিয়োগ পাবেন না।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এমডিরা সর্বোচ্চ দুটি উৎসব ভাতা পাবেন, যা এক মাসের মূল বেতনের বেশি হবে না। এমডিকে কোনো ক্লাবের জন্য চাঁদা, বিদেশে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা খরচ, পরিবারের সদস্যদের ভ্রমণ ভাতা দিতে পারবে না কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এমডির বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি হবে না। নববর্ষ ভাতা, ছুটি নগদায়নসহ অন্য সুবিধাও পাবেন না তাঁরা। তবে এমডিকে উৎসাহ বোনাস হিসেবে বছরে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা দিতে পারবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এর বেশি নয়।
মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কোনো এমডি পদত্যাগ করতে চাইলে পর্ষদের সুপারিশসহ পদত্যাগপত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কমিটি ওই এমডির শুনানি গ্রহণ করে যে সুপারিশ করবে, সেটিই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। তবে পর্ষদের কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর মনে হলে এমডি তা লিখিত বা মৌখিকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে পারবেন।