ব্যাংকিং পেশা ছাড়ছেন ব্যাংক এশিয়ার এমডি আরফান আলী

আরফান আলী

ব্যাংকিং পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরফান আলী। আগামীকাল বৃহস্পতিবারই ব্যাংকে তাঁর শেষ কর্মদিবস। পরদিন শুক্রবার এমডি পদে তাঁর মেয়াদ শেষ হবে। ২০১৬ সাল থেকে ব্যাংকটির এমডি তিনি। এরপর আর অন্য কোনো ব্যাংকে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন আরফান আলী। যদিও এমডি পদে চাকরি করার জন্য তাঁর আরও ১০ বছরের বেশি বয়স রয়েছে। এর পরিবর্তে তিনি আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রম নিয়ে বড় পরিসরে কাজ শুরুর পরিকল্পনা করেছেন বলে জানা গেছে।

ব্যাংক এশিয়ার এমডি হলেও আরফান আলীর একটি বড় পরিচয় ছিল, এজেন্ট ব্যাংকিং নিয়ে শুরু থেকে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ব্যাংকের এ রকম শীর্ষ পদের কর্মকর্তারা যখন বড় গ্রাহকদের পেছনে ছুটেছেন, তখন তিনি গেছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাংক হিসাব খুলতে। ফলে ব্যাংক খাতে তাঁর স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি হয়েছে।

কেন ব্যাংক পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন জানতে চাইলে আরফান আলী বলেন, ‘আমি কর্মজীবনে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আরও বড় পরিসরে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কাজের জন্য ব্যাংক পেশা ছেড়ে দিচ্ছি। আশা করছি, এর মাধ্যমে প্রান্তিক জনগণের জীবনমান আরও উন্নত করা যাবে।’

তবে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আরফান আলী ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তা থেকে এমডি হয়েছেন। ব্যাংকটির মূল উদ্যোক্তারা তাঁকে যতটা কাজের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, পরবর্তী প্রজন্ম ততটা সুযোগ দিচ্ছে না। ফলে আরফান আলীর জন্য ব্যাংকে থেকে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। একই পরিবেশ অন্যান্য ব্যাংকেও। এ জন্য অন্য কোনো ব্যাংকেও তিনি যাচ্ছেন না।

আরফান আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) থেকে এমবিএ ডিগ্রি নেন। ১৯৯১ সালে আরব বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশনারি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৯৬ সালে কোরীয় হানিল ব্যাংকে (উরি ব্যাংক) যোগ দিয়ে ঢাকায় অফিস স্থাপনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৯৯ সালে ব্যাংক এশিয়া প্রতিষ্ঠার আগে তিনি ব্যাংকটিতে যোগদান করেন। ২০১৬ সালের আগস্টে তিনি ব্যাংক এশিয়ার এমডি হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিন বছর করে দুই মেয়াদে তাঁর ছয় বছরের মেয়াদ শেষ হবে শুক্রবার।

কর্মজীবনে আরফান আলী এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্বে দিয়েছেন। এ ছাড়া ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পে (বর্তমানে আমার বাড়ি আমার খামার) প্রযুক্তি ও ব্যাংকিং সুবিধা দিতে এবং কিউআর কোডের মাধ্যমে মাইক্রো মার্চেন্ট লেনদেন চালুতে ভূমিকা রেখেছেন। অর্থাৎ তাঁর কর্মজীবনের সবকিছুই ছিল প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ঘিরে।