হিমাগারের ঋণে বিশেষ পুনঃ তফসিল সুবিধা

কৃষি পণ্যে সংরক্ষণের জন্য হিমাগার চাহিদা বাড়ছে। সে জন্য ঋণ পরিশোধে তাদের বিশেষ সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রথম আলো

কৃষিভিত্তিক কোল্ড স্টোরেজ বা হিমাগারগুলোর বকেয়া ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খেলাপি হোক না হোক, সব ঋণ পরিশোধে ১ বছরের বিরতিসহ ১০ বছরের জন্য পুনঃ তফসিল সুবিধা পাবে এসব প্রতিষ্ঠান।

কিস্তি নির্ধারণ হবে ষাণ্মাসিক ভিত্তিতে, অর্থাৎ বছরে সর্বোচ্চ দুটি। যেসব ঋণে জাল-জালিয়াতি হয়নি, তারাই শুধু এই সুযোগ পাবে।

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গ্রাহক-ব্যাংক সম্পর্কের ভিত্তিতে ব্যাংকগুলো এ ঋণ পুনঃ তফসিল এবং এর আগের প্রজ্ঞাপনের আলোকে বকেয়া সুদ মওকুফে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকের ফসলের ন্যায্য দাম নিশ্চিতে দেশব্যাপী কৃষিভিত্তিক হিমাগার বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সুবিধা দিয়েছে। এর আগে হিমাগার খাতের জন্য বিভিন্ন নীতিমালার আওতায় ঋণ পুনর্গঠন বা পুনঃ তফসিল বা সুদ মওকুফ–সুবিধা নিয়েও যেসব হিমাগার পুনরায় ঋণখেলাপি হয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানও পুনঃ তফসিলের সুবিধা পাবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, ৩০ জুন পর্যন্ত হিমাগারগুলোর বকেয়া ঋণের সুদ ও আসলের জন্য পৃথক দুটি হিসাব সৃষ্টি করতে হবে, যেখানে সুদের অংশে নতুন সুদ যোগ করা যাবে না। তবে বকেয়া ঋণের আসল অংশে প্রচলিত হারে সুদ আরোপসহ ১০ বছর মেয়াদে পুনঃ তফসিল করা যাবে। প্রথম বছর ঋণ পরিশোধে বিরতি শেষে প্রথমে ঋণের আসল অংশ আদায় করতে হবে, পরে সুদবিহীন হিসাবের সুদ আদায় করতে হবে। তবে গ্রাহক চাইলে ঋণ পরিশোধে বিরতির সময় ঋণের অর্থ ফেরত দিতে পারবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, হিমাগারের ঋণ পুনঃ তফসিল করা হলেও ওই ঋণের বিপরীতে রক্ষিত নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে। প্রকৃত আদায় ব্যতিরেকে ওই নিরাপত্তা সঞ্চিতি আয় খাতে স্থানান্তর করা যাবে না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসল ও সুদ বাবদ পাওনা অর্থ আদায়ে ব্যর্থ হলে যথানিয়মে ঋণ শ্রেণিকরণ ও নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে। পাশাপাশি ব্যাংক আইনানুযায়ী ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় পুনঃ তফসিল সুবিধা গ্রহণে ইচ্ছুক গ্রাহকদের নগদে এককালীন অর্থ জমা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির ৯০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কাছে আবেদন করতে হবে। ঋণগ্রহীতার আবেদন পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আবেদন নিষ্পত্তি করবে।

ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত ব্যাংকগুলো এ নীতিমালা মেনে বিনিয়োগ হিসাব পুনঃ তফসিলের মাধ্যমে আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের আলোকে সুবিধা গ্রহণের সময় আলোচনার ভিত্তিতে চলমান মামলাগুলো নিষ্পত্তি করা যাবে।