জানুয়ারিতে ডলার সংকট কমবে, আশা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের  

ডলার
ছবি: সংগৃহীত

ডলার-সংকটের কারণে আমদানি তদারকি জোরদার করা হয়েছে। ফলে ঋণপত্র খোলার পরিমাণ কমেছে। এরপরও আরও দুই মাস ডলার-সংকট চলবে। আগামী  জানুয়ারির শুরু থেকে ডলার-সংকট কমে আসবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের এক আলোচনায় এমন মতামত উঠে এসেছে।

দেশের বর্তমান সার্বিক আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার গতকাল রোববার সকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও নির্বাহী পরিচালকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ওই মতবিনিময় সভায় এমন মতামত তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। সভায় আলোচনার বড় অংশজুড়েই ছিল ডলার-সংকট ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি।

মূল্যস্ফীতি ও সুদহার নিয়ে আলোচনা উঠলেও তা এগোতে দেননি ডেপুটি গভর্নররা। আজ ব্যাংক পরিদর্শনের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার সূচি রয়েছে গভর্নরের। 

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, সভায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও দেশের আর্থিক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গভর্নর কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

জানা যায়, আব্দুর রউফ তালুকদার গত ১২ জুলাই গভর্নর হিসেবে যোগ দেন। তাঁর যোগদানের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিস্থিতি কেমন হয়েছে, তা নির্বাহী পরিচালকদের কাছে জানতে চান। এ সময় দেশের আর্থিক খাতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও নির্বাহী পরিচালকদের কাছে মতামত জানতে চান তিনি।

সভায় নির্বাহী পরিচালকেরা বিচ্ছিন্নভাবে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন। নির্বাহী পরিচালকদের বেশির ভাগই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে ঢালাও সমর্থন দিয়ে আলোচনা করেন।

একজন নির্বাহী পরিচালক মূল্যস্ফীতির চেয়ে আমানতের সুদহার কমে গেছে, এ জন্য সুদহারের সীমা প্রত্যাহারের আলোচনা তুললে একজন ডেপুটি গভর্নর তাঁকে থামিয়ে দেন। এ সময় একজন বলেন, ব্যাংকে টাকা রাখলে অনেক দেশে খরচ দিতে হয়। মুনাফার জন্য শেয়ারবাজার আছে, অন্য বিনিয়োগের জায়গা আছে। ব্যাংক তো সুদ আয়ের মাধ্যম হতে পারে না।

ডলার বাজার পরিস্থিতি নিয়ে সভায় বলা হয়, ৩০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের আমদানি ঋণপত্র তদারকি করা হচ্ছে। এতে ঋণপত্র খোলার পরিমাণ কমে গেছে। ফলে সামনের দিনে সংকট কেটে যাবে।

গত মার্চ থেকে দেশে ডলারের সংকট তৈরি হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক দীর্ঘদিন ডলারের দাম আটকে রেখে সংকটকে ত্বরান্বিত করে। পরে বাধ্য হয়ে ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব ব্যাংকগুলোর ওপর ছেড়ে দেয়। মতবিনিময় সভা হলেও সভার আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি। এদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হলেও এ নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি সভায়।