রেকর্ড ৬৮১ কোটি টাকা মুনাফা পূবালী ব্যাংকের

রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা করেছে বেসরকারি খাতের পূবালী ব্যাংক। প্রথমবারের মতো ব্যাংকটির মুনাফা সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গত বছর এই ব্যাংক শুধু ব্যাংক ব্যবসা থেকে মুনাফা করেছে ৬৮১ কোটি টাকা, যা সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা যোগ করলে দাঁড়ায় ৬৯৪ কোটি টাকা।

মুনাফায় রেকর্ড করার সুবাদে পূবালী ব্যাংক ২০২৩ সালের বিপরীতে শেয়ারধারীদের জন্য নগদ ও বোনাস মিলিয়ে ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, যা গত এক যুগে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। এর আগে সর্বশেষ ২০১১ সালে ব্যাংকটি শেয়ারধারীদের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল।

এটি দেশের সবচেয়ে পুরোনো ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংক। ১৯৫৯ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি মালিকানায় ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংক নামে যাত্রা শুরু করে এই ব্যাংক। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে সরকার ব্যাংকটিকে জাতীয়করণ করে। তখন এটির নামকরণ করা হয় পূবালী ব্যাংক। পরে ১৯৮৩ সালে ব্যাংকটিকে আবার বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর ১৯৮৪ সালে এটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

পূবালী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের জন্য নগদ যে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে, সেটি বাবদ শেয়ারধারীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে ১২৯ কোটি টাকা। গত তিন বছর ব্যাংকটি প্রতিবারই শেয়ারধারীদের মধ্যে ১২৯ কোটি টাকা করে নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করেছে। এবার নগদ লভ্যাংশের পাশাপাশি সাড়ে ১২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশও দেবে। তাতে রেকর্ড তারিখে যাঁর হাতে ১০০ শেয়ার থাকবে, তিনি সাড়ে ১২টি শেয়ার পাবেন।

গত বৃহস্পতিবার পূবালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়। একই সভায় ব্যাংকের গত বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনও অনুমোদন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, শুধু ব্যাংক ব্যবসা থেকে এক বছরে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা বেড়েছে ১৪৯ কোটি টাকা বা ২৮ শতাংশ। ২০২২ সালে ব্যাংক ব্যবসা থেকে পূবালী ব্যাংক মোট ৫৩২ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। এর সহযোগী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মুনাফা বিবেচনায় নিলে ২০২২ সালে ব্যাংকটির সমন্বিত মুনাফা দাঁড়ায় ৫৬৫ কোটি টাকা।

গত বছর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা অর্জনের কারণ জানতে চাইলে পূবালী ব্যাংকের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছর সুদ আয় থেকে ভালো মুনাফা এসেছে। এ কারণে রেকর্ড মুনাফা হয়েছে। আর সুদ আয় বৃদ্ধির পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ ছিল। প্রথমত, গত বছর আমরা ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি নতুন ঋণ বিতরণ করেছি। দ্বিতীয়ত, গত জুলাই থেকে ঋণের সুদহারের নির্ধারিত সীমা উঠে যাওয়ায় তার সুফল মিলেছে। তৃতীয়ত, ঋণের সুদ বাড়লেও আমানতের সুদ হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়েনি।

এদিকে রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা অর্জন ও এক যুগ পর সর্বোচ্চ লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও গত বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে পূবালী ব্যাংকের শেয়ারের দাম কমেছে। সেদিন এই ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ারের দাম ৫০ পয়সা বা পৌনে ২ শতাংশ কমে ২৮ টাকা ১০ পয়সায় নেমেছে।