আগস্টে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৯%

মার্কিন ডলারফাইল ছবি: রয়টার্স

সদ্য বিদায়ী আগস্ট মাসে দেশে ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। গত বছরের আগস্ট দেশে এসেছিল ২২২ কোটি ৪১ লাখ ডলারের প্রবাসী আয়। ফলে গত বছরের আগস্টের তুলনায় গত আগস্টে প্রবাসী আয়ে প্রায় ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যদিও গত বছরের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ছাত্র–জনতার আন্দোলন ও সরকার বদলের ফলে ব্যাংকিং লেনদেন বিঘ্নিত হয়েছিল।

গত বছরের আগস্টের তুলনায় গত আগস্টে প্রবাসী আয় বাড়লেও জুলাইয়ের তুলনায় কমে গেছে। গত জুলাইয়ে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে। তাতে গত মার্চে প্রবাসী আয়ে রেকর্ড হয়। ওই মাসে ৩২৯ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল, যা এখন পর্যন্ত এক কোনো এক মাসে দেশে আসা সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। এরপর প্রবাসী আয় এক মাসে আর ৩০০ কোটি ডলার ছাড়ায়নি। প্রবাসী আয় বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, অর্থ পাচার কমে আসায় অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা কমে গেছে। এ ছাড়া ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল রয়েছে। এ জন্য বৈধ পথে আয় আসা বেড়েছে।

প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরুটা বেশ ভালোভাবেই হয়েছে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ২৯ শতাংশ। ওই মাসে প্রবাসীরা ২৪৭ কোটি ডলার দেশে পাঠান।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রবাসী আয়ের উচ্চ হারের প্রবৃদ্ধি দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। পাশাপাশি মুদ্রাবাজারে ডলারের ওপর চাপও কমেছে। অবৈধ পথে অর্থ পাঠানোর বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ এবং বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোকে উৎসাহিত করতে সরকারের দেওয়া নানা প্রণোদনা প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, গত কয়েক মাসে বিদেশি সব বকেয়া দেনা পরিশোধ হয়ে গেছে। লেনদেনের ভারসাম্যে উন্নতি হওয়ায় ডলারের ওপর চাপ কমে গেছে। আবার বাংলাদেশের প্রতি বিদেশি ব্যাংকগুলোর আস্থাও ফিরতে শুরু করেছে, যা বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় যা ছিল প্রায় সাড়ে ৬ বিলিয়ন বা ২৭ শতাংশ বেশি। খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রবাসী আয়ের এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি টাকার মান স্থিতিশীল রাখতে এবং আমদানি ব্যয় মেটাতে সহায়তা করছে।

প্রবাসী আয়ে প্রবাহ ভালো থাকায় গত বুধবার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে আবার ৩১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৬ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২৪ আগস্ট গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩০ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী ২৫ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার।