প্রথমবারের মতো মুনাফা করল রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক

রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) প্রথমবারের মতো নিট মুনাফা করেছে। সেই সঙ্গে ব্যাংকটির লোকসানি শাখার সংখ্যাও কমেছে। সদ্য বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক হিসাব বিবরণীতে এই তথ্য উঠে এসেছে। রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের (বিকেবি) শাখাগুলো নিয়ে ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রাকাব। এত দিন পর্যন্ত ব্যাংকটি লোকসানে ছিল। প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম লোকসানের ধারা থেকে বের হয়েছে ব্যাংকটি।

রাকাবের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার জাহিদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বুধবার এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাকাবকে মুনাফা অর্জনকারী স্বাবলম্বী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে গত অর্থবছরের শুরুতেই ব্যাংক ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে। এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সময়ভিত্তিক পরিকল্পনাও প্রণয়ন করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত অর্থবছর শেষে প্রায় তিন কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে ব্যাংকটি। তার আগের অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংকটি ২২৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা লোকসান করেছিল।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে রাকাবের মোট শাখা ৩৮৩টি। এর মধ্যে গত অর্থবছর শেষে লোকসানি শাখার সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১২টিতে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে লোকসানি শাখার সংখ্যা ছিল ৬০টি। এ ছাড়া গত অর্থবছর শেষে ব্যাংকটির আমানতের স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। আমানত বৃদ্ধির পাশাপাশি ঋণও বেড়েছে ব্যাংকটির। সদ্য বিদায়ী অর্থবছর শেষে ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ঋণের স্থিতি ছিল ৭ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা।

গত অর্থবছর শেষে রাকাবের খেলাপি ঋণও কমেছে। গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ২৪২ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১৬ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে খেলাপির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা, যা ওই বছরের বিতরণ করা ঋণের ১৯ শতাংশ।

রাকাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রধান কার্যালয়সহ মাঠপর্যায়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর আন্তরিক প্রচেষ্টা ও নিরলস পরিশ্রমে মুনাফায় ফিরেছে ব্যাংকটি। ব্যাংকটির গ্রাহকেরা এখন ঘরে বসে ব্যাংক হিসাব খোলা, মোবাইল অ্যাপ ও ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিল প্রদান, সব মোবাইল অপারেটরে টপ-আপ, আরটিজিএস, বিইএফটিএনসহ আধুনিক সব ব্যাংকিং সেবা নির্বিঘ্নে করতে পাচ্ছেন।

রাকাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ব্যাংকের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আমানত ও ঋণ গ্রাহক, অংশীজন, শুভানুধ্যায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অগ্রগতির এই ধারা অব্যাহত রেখে ভবিষ্যতে রাকাবকে মডেল ব্যাংক হিসেবে গড়ে তোলা হবে।