ব্যবসা বাড়াচ্ছে ভিসা, কার্ড ছাড়াও বাংলাদেশে আরও যেসব সেবা দিতে চায়

সন্দীপ ঘোষ
সংগৃহীত

বাংলাদেশে সেবা কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করতে চায় বহুজাতিক ডিজিটাল লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ভিসা। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটি দেশে নতুন অফিস নিয়ে কার্যক্রম আরও বড় করছে। এর প্রধান লক্ষ্য ডিজিটাল বাংলাদেশে ক্যাশলেস লেনদেনের সঙ্গী হওয়া। শুধু বেসরকারি খাত নয়, সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। এ জন্য কার্ড ছাড়াও অন্যান্য সেবায়ও যুক্ত হতে চায়।

বাংলাদেশে সফরে আসা ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ায় ভিসার প্রধান সন্দীপ ঘোষ গত বুধবার রাতে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। এ সময় ভিসার বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার সৌম্য বসু উপস্থিত ছিলেন।

সন্দীপ ঘোষ বলেন, বাংলাদেশে ৩৫ বছর ধরে ডিজিটাল লেনদেনে নেটওয়ার্ক সেবা দিচ্ছে ভিসা। দেশের ৫৪টি ব্যাংকের সঙ্গে রয়েছে ভিসার চুক্তি। এসব ব্যাংক ভিসা ব্র্যান্ডের বিভিন্ন ধরনের কার্ড গ্রাহকদের দিয়েছে। দেশে ২০২২ সালে ভিসা কার্ডে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। বিভিন্ন প্রতিবেদনেই দেখা গেছে, বাংলাদেশে চালু কার্ডের সিংহভাগ ভিসা ব্র্যান্ডের।

সারা বিশ্বের ভিসার নেটওয়ার্ক ও সেবা নিয়ে সন্দীপ ঘোষ বলেন, বিশ্বের ২০০ দেশে ভিসার সেবা বিস্তৃত। ভিসার সঙ্গে যুক্ত ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের ভিসা কার্ড ব্যবহার করা যায়। এসব দেশে ১৭ হাজার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ভিসার চুক্তি রয়েছে। ভিসা শুধু কার্ড সেবা নয়, ডিজিটাল লেনদেনের সম্পূর্ণ প্ল্যাটফর্ম।

সন্দীপ ঘোষ বলেন, ভিসা দুই বছর আগে বাংলাদেশে অফিস চালু করেছে। সামনে নতুন স্থানে অফিস নিয়ে পরিসর আরও বড় করছে। এর প্রধান লক্ষ্য ডিজিটাল বাংলাদেশে ক্যাশলেস লেনদেনের সঙ্গী হওয়া।

বাংলাদেশে ভিসার পরিকল্পনা নিয়ে সন্দীপ ঘোষ বলেন, ভিসা শুধু কার্ডের নেটওয়ার্ক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নয়, আমরা আরও বড় পরিসরে বাংলাদেশে কাজ করতে চাই। রেল ও গাড়ির টিকিট, টোল পরিশোধ, স্টার্টআপদের ডিজিটাল লেনদেনে সহায়তাসহ নানা উদ্যেগে যুক্ত হতে চাই। কারণ, এসব সেবায় ভিসার রয়েছে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। আমরা কার্ডে নয়, এসব সেবায় এখন বেশি নজর দিতে চাই। আমরা শুধু বেসরকারি খাত নয়, সরকারি খাতের সঙ্গেও কাজ করতে চাই।

বাংলাদেশ ব্যাংক ‘টাকা পে’ কার্ড চালু করতে যাচ্ছে, এতে ভিসার ব্যবসা সংকুচিত হয়ে পড়বে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে সন্দীপ ঘোষ বলেন, ভিসা ব্র্যান্ড কখনো অন্য কোনো ব্র্যান্ড দিয়ে প্রতিস্থাপিত হবে না। কারণ, ভিসার সুবিধা মিলে ২০০টি দেশে। ডিজিটাল লেনদেনে আমাদের রয়েছে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশে প্রায় ১৮ কোটি মানুষ। এর মধ্যে ডেবিট কার্ড মাত্র ৩ কোটি ও ক্রেডিট কার্ড ২০ লাখ। এ সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বাড়ানো সম্ভব।

ভিসা দেশে নতুন কী সেবা চালু করছে, এ নিয়ে জানতে চাইলে সন্দীপ ঘোষ বলেন, ভিসা কার্ডে রয়েছে রেমিট্যান্স পাঠানোর সেবা। এ সেবার নাম ভিসা ডিরেক্ট। দেশের ২৬টি ব্যাংক ইতিমধ্যে এ সেবা দিচ্ছে। ফলে ভিসা কার্ড ব্যবহার করে বিদেশে থাকা যে কেউ সহজেই বাংলাদেশের ব্যাংক বা কার্ডে অর্থ পাঠাতে পারছেন। এ সুবিধা শিগগির আরও বিস্তৃত হবে, যা প্রবাসী আয় বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে।

ডিজিটাল লেনদেনের সুফল সম্পর্কে সন্দীপ ঘোষ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে লেনদেন ক্যাশলেস করার উদ্যোগ আছে। এটা মূলত নগদ টাকার ব্যবহার কমিয়ে আনার উদ্যোগ। যে দেশে নগদ টাকার ব্যবহার যত কম, সেই দেশে আর্থিক প্রতারণা তত কম। কারণ, ডিজিটাল লেনদেনে প্রতিটির প্রমাণ সংরক্ষিত থাকে। কোনো লেনদেনের পর সেবা না পেলে দ্রুত অর্থ ফেরত পাওয়া যায়।