যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চেক নিষ্পত্তিতে বিঘ্ন

গতকাল সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা স্বয়ংক্রিয় নিকাশব্যবস্থার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। দুপুরে সেবাটি চালু হলেও সব চেক নিষ্পত্তি সম্পন্ন হয়নি।

ব্যাংক
প্রতীকী ছবি

সকালে এক ব্যাংকে অন্য ব্যাংকের চেক জমা দিলে, বিকেলে সেই টাকা সুবিধাভোগীর হিসাবে জমা হয়ে যায়। এরপর প্রয়োজনে উত্তোলন বা লেনদেন করা যায়। তবে গতকাল এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের চেক নিলেও গ্রাহকের হিসাবে টাকা জমা হয়নি।

কারণ, গতকাল সকাল থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ ছিল চেক লেনদেন নিষ্পত্তির কাজে নিয়োজিত বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউস (বিএসিএইচ) বা স্বয়ংক্রিয় নিকাশব্যবস্থা।

দুপুরের পর এ সেবা চালু হলেও সব চেক নিষ্পত্তি করতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জানা গেছে, বিএসিএইচের অ্যাপসে ত্রুটির কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়।

অ্যাপসের ত্রুটির কারণ জানিয়ে গতকাল সকালে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোকে ই-মেইলে জানিয়ে দেওয়া হয়, কম অঙ্কের ও বেশি অঙ্কের চেকের অর্থ নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। আর বিকেলে জানানো হয়, যেসব চেকের লেনদেন নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি, সেগুলো সোমবার নিষ্পত্তি করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, দুপুর ১২টা পর্যন্ত চেক নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। দুপুরের পর সমস্যা ঠিক হয়ে গেছে।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসলামী ব্যাংকের ঢাকার গুলশান শাখার এক কর্মকর্তা জানান, তাঁদের শাখায় জমা নেওয়া কোনো চেকই গতকাল সারা দিনে নিষ্পত্তি হয়নি।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে ব্যাংকের লেনদেন সময়ে পরিবর্তন আনায় গত ২৪ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচিতে চলছে চেক নিষ্পত্তি কার্যক্রম। স্বয়ংক্রিয় নিকাশব্যবস্থার মাধ্যমে হাই ভ্যালু চেক (পাঁচ লাখ টাকার বেশি) এবং রেগুলার ভ্যালু চেক (পাঁচ লাখ টাকার কম) নিষ্পত্তি করা হয়।

এখন পাঁচ লাখ টাকার বেশি অঙ্কের চেক নিষ্পত্তির জন্য বেলা ১১টার মধ্যে বিএসিএইচে পাঠাতে হয়। এসব চেক বেলা আড়াইটার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়। আর যেকোনো নিয়মিত চেক বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য পাঠাতে হয়। এসব চেক বিকেল চারটার মধ্যে নিষ্পত্তি হওয়ার কথা। কিন্তু ত্রুটির কারণে গতকাল অনেক চেক নিষ্পত্তি হয়নি।

গত জুনে হাই ভ্যালু চেক নিষ্পত্তি হয় ২ লাখ ৬১ হাজার ১৫০টি, এসব চেকে টাকার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮১ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা। আর জুনে রেগুলার ভ্যালু চেক নিষ্পত্তি হয় ২০ লাখ ৩৫ হাজার ২৯৫টি, যেখানে টাকার পরিমাণ ছিল ৯৮ হাজার ১০৩ কোটি টাকা।

স্বয়ংক্রিয় নিকাশব্যবস্থায় দুই ধরনের আন্তব্যাংক লেনদেন নিষ্পত্তি হয়। একটি হচ্ছে, বাংলাদেশ অটোমেটেড চেক প্রসেসিং সিস্টেম, যার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর ক্লিয়ারিং কার্যক্রম পরিচালিত হয়। অপরটি হচ্ছে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ডস ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক, যার মাধ্যমে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের আন্তব্যাংক লেনদেন নিষ্পত্তি হয়ে থাকে।