ব্যাংকে টাকা রেখে চার বছর ক্ষতির শিকার আমানতকারীরা

সিপিডির লোগো

ব্যাংকে আমানত রেখে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে মানুষ। গত দুই বছরে দেশে মূল্যস্ফীতির হার যেভাবে বেড়েছে, সেই তুলনায় ব্যাংক আমানতের সুদহার বাড়েনি। পরিণামে ব্যাংকে টাকা রেখে মানুষ মুনাফা তো পাচ্ছেই না, উল্টো ক্ষতি হচ্ছে তাদের।

ব্যাংকিং খাত নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। তারা ব্যাংক আমানতের সুদহারের সঙ্গে মূল্যস্ফীতির হার সমন্বয় করে দেখিয়েছে, ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর থেকে ব্যাংকে টাকা রেখে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে মানুষ। অর্থাৎ প্রায় চার বছরে ধরে ব্যাংকে আমানত রেখে মানুষ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ব্যাংকে আমানত রেখে সর্বশেষ মুনাফা পাওয়া গেছে সে বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। পরের মাস মার্চে আমানতের প্রকৃত সুদহার ছিল শূন্য।

সিপিডির হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যাংক আমানতের প্রকৃত সুদহার ছিল শূন্য দশমিক ১ শতাংশ। মার্চে তা শূন্যের কোঠায় নামার পর ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রকৃত সুদহার ঋণাত্মক। ২০২২ সালের আগস্ট ও ২০২৩ সালের মে মাসে তা সর্বোচ্চ মাইনাস ৫ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত নেমেছিল। এরপর মূল্যস্ফীতির হারের সঙ্গে তা সব সময় ওঠানামা করেছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তা ছিল মাইনাস ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।

সুদহার ছয়-নয় করার পর ঋণের সুদহারের পাশাপাশি আমানতের সুদহারও কমে গিয়েছিল। কিন্তু মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ৮ আগস্ট মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে মেয়াদি আমানতের সুদহার নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন বলা হয়, আমানতের সুদহার মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম হবে না। কিন্তু অনেক ব্যাংকই তা দিতে পারেনি। এরপর ঋণের সুদহারের সীমা তুলে নেওয়া হয় এবং তার প্রতিক্রিয়ায় ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে আমানতের সুদহারের সীমাও তুলে নেওয়া হয়। এরপর ব্যাংকগুলো আমানতের সুদহারও বাড়িয়েছে।

এখন আবার অনেক ব্যাংক আমানত সংগ্রহ করতে সুদহার বাড়িয়েছে। কিন্তু সিপিডির এই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, প্রায় চার বছরে ধরে মানুষ ব্যাংকে টাকা রেখে ক্ষতির মুখে পড়ছে।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের ভবিষ্যৎ কী শিরোনামে রাজধানীর লেকশোর হোটেলে এই সংলাপ আয়োজন করেছে সিপিডি। অনুষ্ঠান এখনো চলছে।