ভেঙে দেওয়া হলো মেঘনা, এনআরবি ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ
চতুর্থ প্রজন্মের মেঘনা ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার তিন ব্যাংকে চিঠি দিয়ে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সুশাসন ফেরাতে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল একটি সূত্রে জানা গেছে। তবে এসব ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতি এখনো ভালো। ব্যাংক তিনটি ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করে। তখন রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের জানান।
জানা গেছে, মেঘনা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এইচ এন আশিকুর রহমান। এ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর পরিবার ও তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ব্যাংকটির বেশির ভাগ শেয়ার এখন তাঁদের হাতে। পরিচালকদের অনেকে দেশের বাইরে, ফলে সুশাসন ব্যাহত হচ্ছিল। ব্যাংকটিতে নতুন পরিচালক করা হয়েছে শেয়ারধারী উজমা চৌধুরী ও প্রতিনিধি পরিচালক তানভীর আহমেদকে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক দুই নির্বাহী পরিচালক মামুনুল হক ও রজব আলী, যমুনা ব্যাংকের সাবেক এমডি নজরুল ইসলাম, প্রাইম ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত এমডি হাবিবুর রহমান ও হিসাববিদ আলি আকতার রিজভীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্য থেকে ব্যাংক নিজেই চেয়ারম্যন নির্ধারণ করবে।
এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন আল হারামাইন পারফিউমের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান। সরকার বদলের পর তিনিসহ অনেক পরিচালক দেশে ফিরছেন না। এ জন্য ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পরিচালক করা হয়েছে সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ ওবিইকে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র পরিচালক করা হয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ফেরদৌস আরা বেগম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শেখ মো. সেলিম, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক এমডি কামরুল ইসলাম চৌধুরী, প্রাইম ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি শেখ মতিউর রহমান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শরীফ নুরুল আহকাম ও হিসাববিদ মিজানুর রহমানকে।
এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন রাশিয়া আওয়ামী লীগের নেতা এস এম পারভেজ তমাল। এ ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হয়েছে আলী হোসেন প্রধানিয়াকে। তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের (বিকেবি) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১১ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়। এর মধ্যে সাতটিই ছিল এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে। পর্ষদ ভেঙে দেওয়া ব্যাংকগুলো হলো ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি, সোশ্যাল ইসলামী, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী, বাংলাদেশ কমার্স, ন্যাশনাল, আল-আরাফাহ্, আইএফআইসি, ইউসিবি ও এক্সিম ব্যাংক। এর মধ্যে ছয়টি ব্যাংকের সম্পদের মান যাচাই করছে বৈশ্বিক দুই নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়াং ও কেপিএমজি।