এখন থেকে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের অর্ধেক এজেন্ট হবেন নারী

এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালুর ফলে প্রত্যন্ত এলাকায় পাহাড়েও পৌঁছে গেছে ব্যাংক সেবা।ফাইল ছবি: প্রথম আলো

এখন থেকে দেশের ব্যাংকগুলোর এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার ন্যূনতম অর্ধেক বা ৫০ শতাংশ এজেন্ট হবেন নারী। বাংলাদেশ ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে নতুন এই নির্দেশনা জারি করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আর্থিক লেনদেনে নারীর সক্ষমতা ও নারীর অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধির জন্য নারীবান্ধব ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। তারই অংশ হিসেবে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার চাহিদা ও গুরুত্ব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ সহজতর ও সহজলভ্য হচ্ছে। দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে গ্রামীণ এলাকায় এজেন্ট ব্যাংকিং সুবিধা চালু হওয়ায় নারী গ্রাহকদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সেই তুলনায় নারী এজেন্টের সংখ্যা এখনো সীমিত পর্যায়ে রয়েছে। এ কারণে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায় নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ভবিষ্যৎ এজেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নারী এজেন্ট নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি শেষে দেশে এজেন্ট আউটলেটের সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৪৩। এর মধ্যে ১৮ হাজার ১৯টি গ্রামাঞ্চলে আর ৩ হাজার ২৪টি শহরাঞ্চলে। আর ফেব্রুয়ারি শেষে সারা দেশে এজেন্টের সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৮৬০। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৩৫৯ জনই গ্রামীণ এলাকার। আর শহরাঞ্চলে এ সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৫০১।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি শেষে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায় পুঞ্জীভূত আমানতের পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা। আর ফেব্রুয়ারিতে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৩৩ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারি শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিতরণ করা প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা।

বিশ্বের প্রথম এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু হয়েছিল ব্রাজিলে। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা–সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে। ওই নীতিমালার ওপর ভিত্তি করে দেশে ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রথম এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করে ব্যাংক এশিয়া। তারা পরীক্ষামূলকভাবে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলায় এই কার্যক্রম শুরু করে। ওই উপজেলার জৈনসার ইউনিয়নের ব্যবসায়ী ইসলাম শেখকে প্রথম এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করে ব্যাংকটি। প্রায় ১১ বছরের ব্যবধানে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ব্যাপক প্রসার ঘটে দেশে। সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারি শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আওতায় গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৪৪ লাখে।