ব্যাংকগুলো জমা ডলার ফেরত নেওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক রিজার্ভ কমেছে

মার্কিন ডলাররয়টার্স ফাইল ছবি

টাকা-ডলার অদলবদল বা সোয়াপ সুবিধা চালুর পর বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত বাড়ছিল। কিন্তু এখন তা আবার কমতে শুরু করেছে। ২০ মার্চ যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের মোট রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৫২৪ কোটি ডলার, সেখানে ২৭ মার্চ তা কমে ২ হাজার ৪৮১ কোটি ডলারে নেমেছে।

এর কারণ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, যেসব ব্যাংক এক মাস মেয়াদে ডলার জমা রেখেছিল, তারা টাকা জমা দিয়ে সেই ডলার নিয়ে গেছে। আবার অনেকের মেয়াদ শেষ হলেও টাকা না থাকায় ডলার ফেরত নিতে পারেনি। এসব ডলার জমা নবায়ন করা হয়েছে। ব্যাংকের দেওয়া ডলারের কারণে রিজার্ভ বাড়ছিল।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সঙ্গে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের টাকা-ডলার অদলবদল (সোয়াপ) সুবিধা চালু হয়। এরপর ব্যাংকগুলো প্রায় ১৫০ কোটি ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রেখে টাকা নেয়। সোয়াপ সুবিধা চালুর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংক উভয় পক্ষই উপকৃত হয়। কারণ, ডলার জমা রেখে টাকা নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর তহবিল খরচ হয় সর্বোচ্চ আড়াই শতাংশ। ব্যাংকগুলো সেই টাকা সাড়ে ১১ শতাংশ পর্যন্ত সুদে সরকারের ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগ করতে পারছে। পাশাপাশি এই টাকায় ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ সুদে ঋণও দিতে পারছে। ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ট্রেজারি ব্যবস্থাপকেরা কম খরচের তহবিল থেকে বেশি আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন। এ ছাড়া সুবিধাটি চালু হওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভ বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বুধবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ১ হাজার ৯৪৫ কোটি ডলার, যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ৯৯৮ কোটি ডলার। এক সপ্তাহে রিজার্ভ কমেছে ৫৩ কোটি ডলার।

এদিকে দুই বছর ধরে চলা ডলার-সংকট ইতিমধ্যে কিছুটা কেটেছে। সরকারি আমদানি দায় মেটাতে আগের মতো রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে ডলারের দাম না বেড়ে এখন কমছে। ব্যাংকগুলো আগে প্রবাসী আয়ের ডলার কিনেছে ১২০ টাকার বেশি দামে, যা এখন ১১৪-১১৫ টাকায় নেমেছে। ফলে আমদানিকারকেরাও আগের চেয়ে কম দামে ডলার পাচ্ছেন। এ ছাড়া প্রবাসী ও রপ্তানি আয় গত মাসে বেড়েছে।

এদিকে ডলারের দাম নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালুর ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ঠিক কীভাবে এই পদ্ধতি কাজ করবে, তা এখনো ঠিক করতে পারেনি আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ফলে এ পদ্ধতি কবে চালু হবে, সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।