বেসরকারি ব্যাংকের কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক

দেশের বেসরকারি ব্যাংকের কর্মীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ নির্দেশনা দিয়েছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি সব ব্যাংকের এমডির কাছে পাঠানো হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়, সর্বস্তরের জনগণকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে চায় সরকার। সরকারের এ উদ্দেশ্য পূরণে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিশেষায়িত ব্যাংক ছাড়া অন্য ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারেন। তাই তাঁদের উদ্বুদ্ধ করার ব্যাপারে বেসরকারি ব্যাংকের এমডিরা যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন, সেই নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সরকারের চালু করা সর্বজনীন পেনশনে চার ধরনের স্কিম বা কর্মসূচি রয়েছে। এগুলো হলো, প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা ও প্রবাসী। বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য ‘সুরক্ষা’, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘প্রবাসী’ এবং দেশের নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য ‘সমতা’। সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালুর পাঁচ মাস বয়সে চারটি আলাদা স্কিমে মোট গ্রাহক হয়েছেন ১৭ হাজার ৯৯৫ জন। দেশ-বিদেশ থেকে মোট চাঁদা জমা হয়েছে ২৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে ইউপেনশন ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হয়। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা পাসপোর্ট নম্বর, একটি সচল মুঠোফোন নম্বর, ব্যাংক হিসাব নম্বর, নমিনির এনআইডি ইত্যাদি তথ্য লাগে।

চাঁদা দিয়ে পেনশন-ব্যবস্থার আওতায় আসতে পারেন ১৮ বছরের বেশি বয়সী যে কেউ। দেশের অন্তত ১০ কোটি মানুষ পেনশনব্যবস্থার আওতায় আসবেন, এমন প্রত্যাশা সরকারের রয়েছে। বিশাল একটি জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনা এবং নিম্ন আয় ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত সমাজের ৮৫ শতাংশ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যেই পেনশন স্কিম চালু করা হয়েছে বলে শুরু থেকেই বলে আসছে পেনশন কর্তৃপক্ষ।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, শুরুর দিকে শুধু সোনালী ব্যাংক ছিল স্কিমে নিবন্ধনের সহায়তাকারী। পরে অগ্রণী ব্যাংককেও এ তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে দি সিটি ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) হয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে পেনশন কর্তৃপক্ষের আলোচনা হচ্ছে।

২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন করে সরকার। একই বছরের ১৩ আগস্ট করা হয় সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা। সেই বিধিমালার বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৭ আগস্ট সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের দিন থেকেই তা সবার জন্য উন্মুক্ত।