অনুমোদনহীন ঋণের অনুমোদন মেলেনি

ন্যাশনাল ব্যাংক

নানা আলোচনার পর বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের (এনবিএল) পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় একটি পক্ষ চেয়েছিল গত তিন মাসে বিতরণ করা ঋণের অনুমোদন করাতে। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি–মার্চ—এ তিন মাসে ব্যাংকটি প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে পর্ষদের অনুমোদন ছাড়া।

অনুমোদন ছাড়া বিতরণ করা ঋণের অনুমোদনে রাজি হননি ব্যাংকটির বেশির ভাগ পরিচালক। সভায় ব্যাংকটির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ সৈয়দ আবদুল বারিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। যদিও আরেকটি পক্ষ চেয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা অতিরিক্ত এমডি এ এস এম বুলবুলকে এমডি করতে।

জানা যায়, গতকাল বেলা তিনটায় অনলাইনে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মনোয়ারা সিকদার। বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষকসহ ব্যাংকটির অন্য পরিচালকেরা সভায় অংশ নেন। ব্যাংকের দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার গত ১০ ফেব্রুয়ারি মারা যাওয়ার পর ২৪ ফেব্রুয়ারি নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার। তিন মাস ধরে কোনো ঋণ অনুমোদিত না হলেও বিতরণ ঠিকই অব্যাহত রেখেছে ব্যাংকটি। এ ছাড়া অনুমোদন না থাকলেও ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন এ এস এম বুলবুল। পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাঁকে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

গতকালের সভায় শান্তানা এন্টারপ্রাইজসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিতরণ করা ঋণ অনুমোদনের প্রস্তাব ওঠে। এতে প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের ছেলেরা সমর্থন দিলেও মেয়ে পারভীন হক সিকদারসহ অন্য পরিচালকেরা আপত্তি করেন। ফলে এসব ঋণ আর অনুমোদিত হয়নি। এরপর ব্যাংকটির এমডি পদে শূন্যতার বিষয়টি আসে। এ ক্ষেত্রেও ছেলেরা এ এস এম বুলবুলকে এমডি করার প্রস্তাব দেন। তবে পারভীন হক সিকদারসহ অন্যরা আপত্তি করলে শেষ পর্যন্ত উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ সৈয়দ আবদুল বারিকে ভারপ্রাপ্ত এমডি করার সিদ্ধান্ত হয়।

ন্যাশনাল ব্যাংক প্রথম প্রজন্মের বেসরকারি ব্যাংক, যার ঋণের পরিমাণ ৪২ হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০০৯ সালে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিচালনা পর্ষদেরও বদল হয় ন্যাশনাল ব্যাংকে। ব্যাংকটির কর্তৃত্ব চলে যায় সিকদার গ্রুপের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদারের কাছে।