ঋণের যথাযথ ব্যবহার হলেই কিস্তি ছাড়

প্রতীকী ছবি

আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সহজে ঋণ পাওয়া যায় এবং সেই ঋণের ব্যবহারও তেমন দেখা হয় না, এমন ধারণা বেশ পুরোনো। সে জন্য সুদ বেশি হলেও অনেকেই ঋণের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দ্বারস্থ হন। কিন্তু এবার আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন সময় এ নির্দেশনা জারি করল, যার আগে বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনেক কেলেঙ্কারি ঘটে গেছে। এর মধ্যে প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান দখল করে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন। আবার অনেক পরিচালক নিজেদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নামে-বেনামে টাকা বের করে নিয়ে এখন আর ফেরত দিচ্ছেন না। এ জন্য ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্তত ১০টি গ্রাহকদের আমানতের টাকা ফেরত দিতে পারছে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদ্য জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঋণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত না হলে তা পুরো আর্থিক খাতের ওপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে এবং এ খাতের সুশাসনকে বাধাগ্রস্ত করে। এ জন্য যে উদ্দেশ্যে ঋণ বা লিজ কিংবা বিনিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সে অনুযায়ী তা ব্যবহার হচ্ছে কি না, সেটি নিশ্চিত করতে নিয়মিত তদারকি কার্যক্রম চালাতে হবে। কিস্তিভিত্তিক প্রকল্প ঋণের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী কিস্তির সদ্ব্যবহার সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই পরবর্তী কিস্তির টাকা ছাড় করতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, যে উদ্দেশ্যে ঋণ দেওয়া হয়েছে, সেটির পরিবর্তে অন্য খাতে ঋণের অর্থ ব্যবহার হলে সেই কারণ উদ্‌ঘাটনসহ তা রোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে। এক ঋণের অর্থ দিয়ে কোনোভাবেই অন্য ঋণের দায় পরিশোধ করা যাবে না। এ ছাড়া ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ পরিদর্শন প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে এবং তা ঋণসংক্রান্ত নথিপত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। ঋণের সদ্ব্যবহার-সংক্রান্ত সরেজমিন পরিদর্শনে কোনো গুরুতর অনিয়ম ধরা পড়লে তা তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগকে অবহিত করতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে সংস্থাটির আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর এসব নিয়ম চালু করা হচ্ছে। এদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ফেরাতে নতুন করে আরও অনেক নিয়মকানুন আসবে বলে জানা গেছে।