করোনায় ব্যাংক পরিচালনায় বড় পরিবর্তন এসেছে

বেসরকারি খাতের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ দিনে ব্যাংকটির বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রথম আলোকে লিখিত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: গত ২২ বছরে আপনাদের ব্যাংকের সাফল্য বা অর্জন কী?

সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের যাত্রা শুরু ১৯৯৯ সালের ২৫ অক্টোবর। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে ব্যাংকটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়। শুরু থেকে ছোট ছোট ধাপে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে দেশজুড়ে আমাদের ১৯৩টি পূর্ণাঙ্গ শাখা, ১২২টি উপশাখা ও ৬৫টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট রয়েছে। ২০২০ সাল শেষে আমাদের ব্যাংকের মোট আমানত ছিল ৪২ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা। এ বছর এখন পর্যন্ত¯আমানত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ১৮৪ কোটি টাকায়। ব্যাংকিং সেবা গ্রাহকের আরও দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ডিজিটাল ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। আমাদের ‘ক্লাউড অ্যাপস’ ব্যবহার করে গ্রাহকেরা চাইলে ঘরে বসেই ই-কেওয়াইসি পূরণ করে নিজেই নিজের হিসাব খুলতে পারছেন।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

ওয়াসেক মো. আলী: দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে আমরা নিজেদের সম্পৃক্ত রেখেছি। ২০২০ সাল শেষে আমাদের ব্যাংকের আমদানি বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪ হাজার ৩০২ কোটি টাকা। চিনি, ভোজ্যতেল, মূলধনি যন্ত্রপাতি, তুলা, ফেব্রিকস, আনুষঙ্গিক দ্রব্যসহ নানা পণ্য আমদানিতে আমরা অর্থায়ন করে থাকি। আর রপ্তানি বাণিজ্যে প্রায় ১ হাজার ২৪১ কোটি টাকার রপ্তানি দলিল নিষ্পত্তি করেছি। তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার, প্রক্রিয়াজাত চামড়ার পণ্য, কৃষিসহ নানা রপ্তানি পণ্যের ব্যবসায় আমরা অর্থায়ন করেছি। ইসলামি ধারার ব্যাংক হিসেবে আমরা ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রাম, এক্সপ্রেস মানি, প্লাসিড এন কে করপোরেশন, ট্রান্সফাস্ট, রিয়া মানি ট্রান্সফার, প্রভু মানি ট্রান্সফারসহ খ্যাতনামা সব রেমিট্যান্স সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। বিদেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ দ্রুত তাঁদের পরিবারের সদস্যদের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রায় এক হাজার কোটি টাকার প্রবাসী আয় এসেছে আমাদের ব্যাংকের মাধ্যমে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: দেশে ইসলামি ব্যাংকিংয়ের ভবিষ্যৎ কেমন? এ ধরনের ব্যাংকিংয়ের প্রসারে আপনাদের পরিকল্পনা কী?

ওয়াসেক মো. আলী: দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনো ধারণা প্রচলিত ও ইসলামি ব্যাংকিং একই, শুধু নাম আলাদা। মূলত তাদের কাছে ইসলামি ব্যাংকিং সম্পর্কে পরিপূর্ণ বার্তা না পৌঁছানোর কারণেই এমন ধারণা তৈরি হয়েছে। কীভাবে শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকিং কাজ করে, তা আমরা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। এ জন্য শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ে প্রয়োজনীয় জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ গড়ে তুলতে কাজ করছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। পাশাপাশি মানুষের মধ্যে ইসলামি ব্যাংকিংয়ের পরিপূর্ণ ধারণা পৌঁছে দিতে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করছি।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: করোনার কারণে ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে?

ওয়াসেক মো. আলী: করোনার কারণে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত পরিচালনায়ও বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। করোনাকালে আমরা সরকারি সব নির্দেশনা মেনে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। এ সময়ে গ্রাহকদের ব্যাংকিং সেবা দিতে সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা চালু রাখা হয়েছিল।