৪৪ লাখ নারীকে গ্রাহক বানিয়েছেন এজেন্টরা

মাত্র ৭ বছরে প্রায় ৪৪ লাখ নারীকে ব্যাংকের গ্রাহক বানিয়েছে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা। নতুন ধাঁচের এই সেবা বাড়ির পাশে পৌঁছে যাওয়ায় নারীরাও সহজে গ্রাহক হয়েছেন। লেনদেন করছেন, ঋণও নিয়েছেন অনেকে। ব্যাংক শাখার পরিবর্তে এজেন্টদের কাছে নারীরা যেতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন বলে মনে করছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
সর্বস্তরের মানুষকে ব্যাংকিং সেবায় টানার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশে নতুন ধাঁচের এই ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। ব্যাংকের নিয়োগ করা এজেন্টরা এই সেবা প্রদান করেন, যার বেশির ভাগই বসেছে গ্রামেগঞ্জে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে হিসাব ছিল ৫২ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৬, যা গত বছর শেষে দাঁড়িয়েছে ৯৬ লাখ ৪৩ হাজার ১৬৩। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নারী হিসাব ছিল ২২ লাখ ৯৭ হাজার ৭৭৫, যা গত বছর শেষে বেড়ে হয়েছে ৪৩ লাখ ৯৮ হাজার ১২২। ফলে মোট হিসাবের ৪৫ শতাংশই নারী হিসাব।
ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরফান আলী এ নিয়ে বলেন, ‘এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের বড় সফলতা ঘরে থাকা নারীদের সেবায় আনা। যেসব নারী দূরের শাখায় গিয়ে সেবা নিতে আগ্রহী ছিলেন, এখন তাঁরা বাসার পাশেই ব্যাংক সেবা পাচ্ছেন। এজেন্টরা স্থানীয় হওয়ায় সেবা নিতেও কোনো ইতস্তত বোধ করছেন না।’

এদিকে করোনাকালেই সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আমানত ছিল ৭ হাজার ৫১৭ কোটি টাকার, যা গত বছর শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা।

দেশে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু হয় ২০১৪ সালে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত এই সেবায় ঋণ বিতরণ হয়েছে ১ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০১৮ সালের অক্টোবরে এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করা ব্র্যাক ব্যাংক একাই এ পর্যন্ত দিয়েছে ১ হাজার ৭০ কোটি টাকা। ঋণ পেয়েছেন ১৮ হাজার ৪১৭ জন গ্রাহক। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঋণ বিতরণকারী শীর্ষ অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে ব্যাংক এশিয়া ৫১৭ কোটি টাকা, সিটি ব্যাংক ২৬৫ কোটি, ডাচ্-বাংলা ২৬ কোটি, আল-আরাফাহ ইসলামী প্রায় ১০ কোটি ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক সাড়ে ৯ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। বর্তমানে দেশব্যাপী পাড়া-মহল্লা ও হাটবাজারে এ রকম প্রায় ১২ হাজার এজেন্ট এই সেবা দিচ্ছেন।

শীতাতপনিয়ন্ত্রিত সুপরিসর ও ছিমছাম শাখা নয়, সাদামাটা ছোট ঘর। শাখার মতো প্রটোকল কিংবা স্যুট-টাই পরা পরিপাটি কর্মীরাও নেই। এরপরও এজেন্টদের কাছে মিলছে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও এজেন্ট হয়েছেন। ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছেন।

ব্যাংকগুলো এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা ইউনিয়ন ও গ্রামপর্যায়ে নিয়ে গেছে। আমানত রাখা, ঋণ বিতরণ ও প্রবাসী আয় আনার পাশাপাশি স্কুল ব্যাংকিং চালু করেছে এবং গ্রামগঞ্জে সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ভাতাও বিতরণ করছেন এজেন্টরা।