চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমাতে রাজি ব্যবসায়ীরা: বাণিজ্যমন্ত্রী

চিনি
ফাইল ছবি

চিনির দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমাতে ব্যবসায়ীরা রাজি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। আজ রোববার সকালে সচিবালয়ে ‘দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা–সংক্রান্ত টাস্কফোর্স এর ষষ্ঠ সভা’ শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে চিনির বাজারে অস্থিরতা কমাতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক কমায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগের ৩০ থেকে কমিয়ে তা ২৫ শতাংশ করা হয়। এ ছাড়া প্রতি টন অপরিশোধিত চিনি আমদানির ওপর প্রযোজ্য তিন হাজার টাকা ও পরিশোধিত চিনিতে ছয় হাজার টাকা আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে সংস্থাটি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে এনবিআর এই শুল্ক কমায়। ব্যবসায়ীরা তখনই বলেছিলেন, হ্রাসকৃত শুল্কে চিনি এলে কেজিতে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ টাকা পর্যন্ত দাম কমতে পারে, বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে শুল্ক কমানোর দিন চিনির দাম ছিল প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকা। পরে তা বরং বেড়ে হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। অর্থাৎ শুল্ক কমানোর পর চিনির দাম আরও বাড়ে কেজিতে পাঁচ টাকা।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি আজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুল্ক কমানোর ফলে চিনির কেজি সাড়ে চার টাকার মতো কমানো যাবে। আমরা ব্যবসায়ীদের পাঁচ টাকা কমানোর অনুরোধ করছি। তারা আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন। আশা করি, রোজার প্রথম সপ্তাহেই চিনির দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমবে।’

শুল্ক কমানোর পর এর মধ্যে তিন সপ্তাহ পার হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘চিনির যে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছিল, সেই সুবিধা এখনো পাওয়া যায়নি। শুল্ক ছাড়ের চিনি কয়েক দিনের মধ্যেই বাজারে আসবে। আমরা আশা করি, রোজার প্রথম সপ্তাহেই চিনির বর্তমান যে দাম, তা থেকে কেজিতে পাঁচ টাকা কমবে।’

২৩ বা ২৪ মার্চ পবিত্র রমজান শুরু। টিপু মুনশি আরও বলেন, ‘আগামীকাল সোমবার থেকে আমরা তদারকি শুরু করব, নতুন দরে পণ্য ছাড় করতে শুরু করেছেন কি না। না করলে আমরা তিন দিনের সময় দেব। সেটা তাদের অনুসরণ করতে হবে।’

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে ভয় হচ্ছে যে চিনি নেই। চিনি কিন্তু পাইপলাইনেও প্রচুর আছে। ফলে চিনি নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। ব্যবসায়ীরা পাঁচ টাকা কম রেটে মিলগেট থেকে দেশের সব স্থানে চিনি পৌঁছে দেবেন। ব্যবসায়ীদের অবস্থান ইতিবাচক। আমরা জাতির সামনে একটি কথা বলতে চাই, রমজান সামনে রেখে আমাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।’

এদিকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি ধীরগতি করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ‘আমাদের কৃষকেরা যাতে দাম পান, সে জন্য এটা করা হয়েছে। যদি দেখি দাম বাড়ছে, তাহলে আমদানিতে আরোপ করা বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেব।’

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমলেও দেশের বাজারে কমানো হবে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমেছে সত্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তেলের দাম কমলেও ডলারের দাম বেড়ে গেছে। যদি এমনটা হতো তেলের দাম কমেছে কিন্তু ডলারের দাম আগের অবস্থায় রয়েছে, তাহলে তেলের দাম কমানো যেত। তারপরও আমরা দেখছি।’