‘মূল্যস্ফীতি অসহনীয়’, ৬ শতাংশের লক্ষ্য অর্জন নিয়ে সংশয় পরিকল্পনামন্ত্রীর

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান
ফাইল ছবি

আগামী অর্থবছরে ৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য অর্জন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি লক্ষ্য অনুযায়ী ৬ শতাংশে নামাতে না পারলেও চেষ্টা থাকতে হবে। বাজারব্যবস্থা মসৃণ করতে হবে। চাঁদা, বাঁশ দিয়ে পথ আটকে রাখা—এসব বাধা (ডিস্টার্বেন্স) রাজনৈতিক কারণে হয়। এটি হতে দেওয়া যাবে না।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নামানোর পথ আছে। দাম না কমলে আমদানি করব।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনাসচিব সত্যজিৎ কর্মকারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক দিন আগে বলা হয়েছে, দাম না কমলে পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। কিন্তু ১৫ দিন পর আমদানি করার সিদ্ধান্ত এল, এখন পেঁয়াজের দাম পড়তে শুরু হলো। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি যদি পরের দিন পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিতেন, তাহলে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৯০ টাকা হতো না। তাই দ্রুত ও ক্ষিপ্রগতিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সরকারকে “ট্রিগার”-এ হাত দিয়ে বসে থাকতে হবে।’

এম এ মান্নান আরও বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। গত মাসে বলেছিলাম, মে মাসে মূল্যস্ফীতি কমবে। কিন্তু মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এটা আমার জন্য লজ্জার বিষয়। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির এই প্রবণতা দুঃখজনক।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগামী দুই-তিন সপ্তাহে মূল্যস্ফীতি কমবে, এটা বলতে পারব না। তবে শিগগিরই কমবে।’

একনেক সভায় অর্থনীতির চলমান সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, অর্থনীতিতে এখন দুটি প্রধান উদ্বেগ আছে। একটি হলো বিদ্যুৎ সমস্যা, অপরটি মূল্যস্ফীতি। স্বীকার করে বসে থাকলে চলবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মূল্যস্ফীতি আর বাড়তে দেওয়া যাবে না। বরং কমাতে হবে। এ জন্য আমদানি ও উৎপাদন বা সরবরাহ বাড়িয়ে মজুত বাড়াতে হবে। মূল্যস্ফীতি কেন বাড়ছে, তা নিয়ে গবেষণা করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

গত সোমবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মে মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা গেছে, গত মাসে সার্বিকভাবে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে, যা গত ১১ বছর ২ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

আজকের একনেক সভায় রেকর্ড ১৮টি প্রকল্প পাস হয়েছে। এসব প্রকল্পে সব মিলিয়ে খরচ হবে ১১ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা।