ভারতের অর্থনীতি এখন ভালো অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছে ঋণমান নির্ণয়কারী বহুজাতিক সংস্থা এসঅ্যান্ডপি। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে তারা বলেছে, মধ্য মেয়াদে ভারতে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ভালোই হতে পারে। ২০২৪ থেকে ২০২৬ অর্থবছরে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ থেকে ৭ দশমিক ১ শতাংশ।
‘গ্লোবাল ব্যাংকস কান্ট্রি-বাই-কান্ট্রি আউটলুক ২০২৪’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসঅ্যান্ডপি ভারতের ব্যাংক খাতের পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেছে। তারা মনে করছে, ভারতে মন্দঋণের পরিমাণ কমবে। ২০২৫ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে অনাদায়ি হওয়ার আশঙ্কাপূর্ণ মন্দঋণের পরিমাণ কমে দেশটির ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ৩ থেকে ৩ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে।
কারণ হিসেবে এসঅ্যান্ডপি বলেছে, ভারতের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যালান্স শিট বা স্থিতিপত্রের উন্নতি ঘটবে। সেই সঙ্গে আরও উন্নত হবে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা। সব মিলিয়ে ভারতের কাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। এই মুহূর্তে ভারতের মূল্যস্ফীতি ও অর্থনীতির যে অবস্থা, তাতে সুদের হার আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা কম। সংস্থাটি বলেছে, প্রবৃদ্ধির শ্লথ গতি কিংবা মূল্যবৃদ্ধির মতো বিষয় বিশ্ব অর্থনীতিতে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে, ভারতীয় অর্থনীতিতে তার প্রভাব তেমন একটা পড়বে না।
ভারতের অর্থনীতি অভ্যন্তরীণভাবে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে বলেই তারা বাহ্যিক ধাক্কা মোকাবিলা করতে পারবে বলে মনে করে এসঅ্যান্ডপি।
চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ভারতের প্রকৃত জিডিপিতে বার্ষিক ভিত্তিতে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে; যা মার্চ প্রান্তিকে ছিল ৬ দশমিক ১ শতাংশ। এদিকে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৬ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে।
বর্তমানে ভারতে যে হারে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, তাতে আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে দেশটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির স্বীকৃতি পাবে বলে মনে করছে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এসবিআই রিসার্চ। এই প্রক্রিয়ায় তারা জাপান ও জার্মানিকে অতিক্রম করবে।
এর আগে এসবিআইয়ের করা এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ভারত আগামী ২০২৯ সালের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির স্বীকৃতি পাবে বলে মনে করা হচ্ছিল। এখন তারা সেই ক্ষণ আরও দুই বছর এগিয়ে এনেছে।
জিডিপির আকার অনুযায়ী, এখন বিশ্বের প্রথম ও দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হচ্ছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। তিন নম্বরে আছে জাপান। চতুর্থ স্থানে থাকা জার্মানির ঠিক পেছনেই, অর্থাৎ পাঁচ নম্বরে আছে ভারত।