দুটি কেন্দ্র থেকে ১১ হাজার কোটি টাকার সৌরবিদ্যুৎ কেনা হবে

রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভেতরে স্থাপিত ৭ দশমিক ৪ মেগাওয়াটের নতুন সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র।
ফাইল ছবি

জামালপুর জেলার সদর উপজেলায় ১৮০ মেগাওয়াট এবং মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় ১৩০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) ২০ বছর মেয়াদে এই বিদ্যুৎ কিনবে। এ জন্য সরকারের মোট খরচ হবে ১১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা। কেন্দ্র দুটি থেকে আসা বিদ্যুৎ সরাসরি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বিদ্যুৎ কেনার বিষয়ে দুটি আলাদা প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

সাঈদ মাহবুব খান জানান, জামালপুরের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টার ট্যারিফ হচ্ছে শূন্য দশমিক শূন্য ৯৯৯ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার দাম প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১০ দশমিক ৯৮ টাকা। সেই হিসাবে এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ব্যয় হবে ৬ হাজার ৪১০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আর মুন্সিগঞ্জের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা শূন্য দশমিক ১০ ডলার; অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১১ টাকা হিসাবে ব্যয় হবে ৪ হাজার ৬৩৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

জানা গেছে, জামালপুর সদর উপজেলায় ১৮০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও এইচ বিজিসি যৌথভাবে প্রস্তাব দাখিল করেছে। বিউবো ও প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সেই প্রস্তাব যাচাই-বাছাই শেষে তাদের সঙ্গে দর-কষাকষি করে।

এরপর ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও এইচ বিজিসির সঙ্গে ২০ বছর মেয়াদে ১৮০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে কেনার চুক্তি করে। ওই চুক্তিই অনুমোদিত হয় গতকাল।

একইভাবে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলায় যৌথভাবে ১৩০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করবে এনারগন রিনিউবেল (বিডি) লিমিটেড এবং পিডব্লিউআর এনার্জি ট্রেডিং এলএলসি। এদের সঙ্গেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ক্রয় কমিটিতে প্রস্তাব উত্থাপন করে বিউবো। তা ২০ বছর মেয়াদে ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ভিত্তিতে অনুমোদিত হয়।

টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) তৈরি ‘ন্যাশনাল সোলার এনার্জি রোডম্যাপ ২০২১-৪১’ অনুযায়ী, ২০৪১ সালের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে বাংলাদেশ। স্রেডার মতে, নদীতীরবর্তী এবং পরিত্যক্ত জমির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে সৌরবিদ্যুতের সক্ষমতা ৩০ হাজার মেগাওয়াটেও উন্নীত করার বাস্তবতা রয়েছে।

এদিকে গতকাল অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে ২০২৪ সালের জন্য সৌদি আরবের সৌদি আরামকো এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল সংস্থা থেকে ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমদানির প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদিত হয়েছে।