দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববাজারে হাতিল

ভুটানে হাতিলের বিক্রয়কেন্দ্র।
ছবি: হাতিল

শীতের ছুটিতে ভুটান ঘুরতে যাওয়াটা অনেকেরই চেকলিস্টে উপরের দিকেই থাকে। স্বচক্ষে তুষারপাত দেখতেই এত আগ্রহ ভুটান ভ্রমণের। আপনার চেকলিস্টেও ভুটান ভ্রমণ থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আর দেশের বাইরে ঘুরতে গিয়ে কেনাকাটা করাটা তো অত্যাবশ্যক ব্যাপার। ভুটানের শপিংমলে সাজিয়ে রাখা জামার মধ্যে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ লেখা পেলে আপনি কিছুটা খুশি হলেও অবাক হবেন না নিশ্চয়ই। কারণ, বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের জয়জয়কার সবারই কমবেশি জানা। ভুটানের রাস্তায় তুষারপাত উপভোগের পর হোটেলের আলিশান বিছানায় শুতে গিয়ে খাটের গায়ে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ লেখা দেখলে নিশ্চয়ই কিছুটা অবাক আপনি হবেন! সেই সঙ্গে খাটের গায়ে লেখা হাতিল ফার্নিচারের নামও আপনার চোখে পড়বে। তবে অবাক হলেও সত্যি, শুধু ভুটানই না, দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্ববাজারে ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশি ফার্নিচার ব্র্যান্ড হাতিলের পণ্য।

ভারতের জম্মুতে হাতিলের বিক্রয়কেন্দ্র
ছবি: হাতিল

দেশের বাজারে শীর্ষস্থান দখল করে নিয়েছে হাতিল ফার্নিচার। সেই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে হাতিলের ফার্নিচার। ভারত, নেপাল ও ভুটানে বিশাল বাজার দখল করে আছে বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া এই ব্র্যান্ডটি।

হাতিলের বার্ষিক লেনদেন প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ১৫ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশের এই আসবাব ব্র্যান্ড, যা দেশীয় মুদ্রায় ১২ কোটি টাকারও বেশি।

বিশ্ববাজারে হাতিলের পথচলা শুরু আট বছর আগে। ২০১৩ সালে হাতিলের প্রথম আন্তর্জাতিক বিক্রয়কেন্দ্র চালু হয় অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। সে বছরই প্রথমবারের মতো কুয়েত, সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি শুরু করে তারা। পরের বছরই কানাডায় চালু হয় আরেকটি বিক্রয়কেন্দ্র। ধীরে ধীরে হাতিল ছড়িয়ে পড়ে বিশ্ববাজারে।

সারা দেশে হাতিলের আছে ৭২টি বিক্রয়কেন্দ্র। দেশের বাইরেও ব্র্যান্ডটির বিক্রয়কেন্দ্র আছে। ভারতে ১৫টি বিক্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানেও আছে হাতিলের নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র। এই দেশগুলোতে প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের নামেই পণ্য বিক্রি করে। ১৯৮৯ সাল থেকে শুরু হওয়া তিন দশকের যাত্রায় হাতিল তাই এখন শুধু দেশি নয়, হয়ে উঠেছে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড।

অনলাইন দুনিয়ায় হাতিল
হাতিলের মূল ওয়েবসাইটের পাশাপাশি ভারতীয় গ্রাহকদের জন্য রয়েছে আলাদা ওয়েবসাইট। ভারতে হাতিলের ১৫টি বিক্রয়কেন্দ্র থাকায় সেখানেও তৈরি হয়েছে অনেক গ্রাহক। বিশ্ববাজার ধরে রাখতে ও নিজেদের আরও এগিয়ে নিতে অনলাইন দুনিয়াকেও বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

হাতিলের ওয়েবসাইটে গ্রাহক পায় নানামুখী সেবা। সব পণ্য দেখার পাশাপাশি চাইলে ওয়েবসাইট থেকে পছন্দের ফার্নিচার কিনতেও পারবেন আপনি। এর বাইরে গ্রাহকদের জন্য হাতিলের আছে ‘হাতিল লাইফস্টাইল’ ব্লগ। বাড়ি বা অফিসের অন্দরসজ্জা ও হাতিলের পণ্যসহ জীবনযাপনের বিভিন্ন বিষয়ের লেখা পড়া যাবে এই ব্লগে।

ভার্চ্যুয়াল বিক্রয়কেন্দ্র
কিছুদিন আগেও বাংলাদেশে ভার্চ্যুয়াল শোরুম বা বিক্রয়কেন্দ্রের ধারণাটি খুব একটা পরিচিত ছিল না। ২০১৮ সালে দেশে প্রথম ভার্চ্যুয়াল বিক্রয়কেন্দ্র নিয়ে আসে হাতিল। বাস্তবের বিক্রয়কেন্দ্র মতোই তৈরি ভার্চ্যুয়াল বিক্রয়কেন্দ্রে ভিআর বক্সের সাহায্যে ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে উপভোগ করা যায়। ভার্চ্যুয়াল বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে ঘরে বসেই এক ক্লিকে ৮০০–রও বেশি আসবাব দেখে পছন্দ করতে পারবেন যে কেউ।