সামাজিক কল্যাণে ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব

দেশের বাইকারদের বৃহত্তম সংগঠন ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব বাইকারদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করছে। দেশের প্রতিটি প্রান্তে ইয়ামাহা রাইডারদের নিয়ে ৪৭টি শাখা গড়ে তুলেছে এই বাইকিং ক্লাব। রাইডার্স ক্লাবের পক্ষ থেকে বাইকারদের নিয়ে ট্রিপ আয়োজন করা হয়। গেট টুগেদার ও অন্যান্য বিনোদনধর্মী কার্যক্রমের মাধ্যমে বাইকারদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও একতাবোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছে রাইডার্স ক্লাব। কিন্তু শুধু বিনোদন নয়, দেশের মানুষের প্রয়োজনে নানাভাবে এগিয়ে এসেছে এই ক্লাব।

চলমান কোভিড মহামারিসহ বিভিন্ন দুর্যোগে মানুষের কল্যাণে এগিয়ে এসেছে ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব। সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় মানুষদের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সংগঠনটি।

করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়। তখন ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। দেশের সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত নয়টি জেলায় অক্সিজেন সিলিন্ডার বিতরণ করে ক্লাবটি। করোনার এই দুর্যোগে অসহায় মানুষের কষ্ট কিছুটা লাঘব করাই ছিল এর লক্ষ্য।

মহামারির সময় অনেকের আয় পরিধি কমেছে। এই বাস্তবতায় সারা দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের কখনো সাত দিন, আবার কখনো তিন-চার দিন চলার মতো শুকনা খাবার, যেমন চাল, ডাল, পেঁয়াজ ইত্যাদি দিয়ে সহায়তা করেছে ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব। এ ছাড়া খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে রান্না করা খাবার বিতরণ করেছে তারা। সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে তারা।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুতে সরকার করোনা সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। বন্ধ রাখা হয় সব পর্যটনকেন্দ্র। সৈকত শহর কক্সবাজার পর্যটকহীন হয়ে পড়ে। ফলে পর্যটকদের বিনোদনে ব্যবহৃত ঘোড়াগুলো তখন অভুক্ত থেকে মারা যেতে শুরু করে। তখন অভুক্ত ঘোড়াগুলোর মালিকদের পাশে দাঁড়ান ক্লাবের সদস্যরা। প্রায় এক মাসের খাদ্যসামগ্রী বিতরণসহ ঘোড়ার মালিকদের আরও কিছু সহযোগিতা করে ক্লাবটি।

২০১৮ সালে ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব গঠিত হয়। মূলত দেশের ইয়ামাহা বাইকচালকেরা নিজ উদ্যোগে এই ক্লাব গঠন করেন। সামাজিক মাধ্যমে পেজ ও গ্রুপের মাধ্যমে ক্লাবের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ক্লাবের কার্যক্রম সম্পর্কে এর অন্যতম সদস্য কাজী মোসাদ্দেক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব সামাজিক উদ্যোগে সব সময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। কোভিডবিষয়ক সচেতনতা তৈরিতে এত দিন আমরা বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়েছি। পাশাপাশি এবার ডেঙ্গু বেড়েছে। সে জন্য মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করাসহ মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করতে প্রচারণা কার্যক্রম হাতে নিয়েছি আমরা।’

এদিকে নাগরিকদের এ–জাতীয় সংগঠন সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে থাকে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। সব কাজ এককভাবে সরকারের পক্ষে করা সম্ভব হয় না। ফলে সচেতন নাগরিকদের এ ধরনের তৎপরতা সমাজের অনেক কাজে আসে বলেই মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব মূলত সদস্যদের নিজস্ব অর্থায়নের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন কার্যক্রমে এসিআই মোটরসও সহায়তা করে থাকে।