বুরাক ঔজচিভিতের সঙ্গে রূপান্তর যাত্রা শুরু সিঙ্গার বেকোর

সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের ‘ট্রান্সফরমেশন জার্নি উইথ বুরাক ঔজচিভিত’-এর সংবাদ সম্মেলনছবি : সংগৃহীত

তুরস্কের কচ গ্রুপের ফ্ল্যাগশিপ প্রতিষ্ঠান আর্চেলিকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ট্রান্সফরমেশন জার্নি উইথ বুরাক ঔজচিভিত’ শীর্ষক পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। এতে উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এম এইচ এম ফাইরোজ, আর্চেলিকের সাউথ এশিয়া রিজিওনাল মার্কেটিং, বিজনেস ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড গ্রোথের পরিচালক মসি হানদান আবদুররাহমানোগলু এবং সিঙ্গার বাংলাদেশের এ রূপান্তর যাত্রার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর জনপ্রিয় তুর্কি অভিনেতা বুরাক ঔজচিভিত।

চলতি বছররে শুরুতে প্রতিষ্ঠানের নতুন লক্ষ্যের সঙ্গে মিল রেখে একটি অত্যাধুনিক ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট, নতুন কনসেপ্ট স্টোর, ওয়ার্কস্পেসসহ বেশ কিছু রূপান্তরের ঘোষণা দিয়েছে সিঙ্গার বাংলাদেশ। এই রূপান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশে কচ গ্রুপ ও আর্চেলিকের বৈশ্বিক দক্ষতা ও মান নিয়ে আসা হয়েছে, যা ক্রেতাদের অভিজ্ঞতা আরও সমৃদ্ধ করবে। এই পদক্ষেপ সিঙ্গার বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিশ্রুতিকেই পুনর্ব্যক্ত করে। রূপান্তরের এই ধারাবাহিক প্রক্রিয়া শুরু করার পর বুরাক ঔজচিভিত বেশ কিছু ক্রিয়েটিভ কমিউনিকেশনে অংশ নিয়ে এই যাত্রার সহযোগী হন। বুরাক বিভিন্ন ধারাবাহিক নাটকে নিজের অসামান্য অভিনয় প্রতিভা দেখানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

রূপান্তরের এই প্রচেষ্টার বিষয়ে সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এম এইচ এম ফাইরোজ বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রমের মূল স্তম্ভ গ্রাহক-কেন্দ্রিকতা। বাংলাদেশের ক্রেতাদের জন্য সমসাময়িক ও বৈশ্বিক মানদণ্ড নিশ্চিত করতে সিঙ্গার বাংলাদেশের কার্যক্রমে পরিবর্তন নিয়ে আসছে। বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও এই খাতে অবদান রাখার জন্য বৈশ্বিক দক্ষতা ও মান নিয়ে আসার মাধ্যমে দেশের শীর্ষ ব্র্যান্ড হওয়াই সিঙ্গার বাংলাদেশের লক্ষ্য।’

বাংলাদেশে জনপ্রিয় অভিনেতাদের মধ্যে বুরাক ঔজচিভিত অন্যতম উল্লেখ করে এম এইচ এম ফাইরোজ আরও বলেন, ‘ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে তুরস্কের সঙ্গে আমাদের দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। তুর্কি মান ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে আমরা আমাদের রূপান্তর যাত্রা শুরু করেছি। আমাদের এই সফল রূপান্তর যাত্রার গল্প আমরা ক্রেতাদের সঙ্গেও ভাগাভাগি করে নিতে চাই। আর আমাদের বিশ্বাস, আমাদের ক্রেতাদের কাছে গল্পটি তুলে ধরার জন্য বুরাক ঔজচিভিতই সবচেয়ে উপযুক্ত।’

এ বিষয়ে আর্চেলিকের সাউথ এশিয়া রিজওনাল মার্কেটিং, বিজনেস ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড গ্রোথের পরিচালক হানদান আবদুররাহমানোগলু বলেন, সিঙ্গার বাংলাদেশ অধিগ্রহণের পর থেকে স্থানীয় বাজারে বৈশ্বিক দক্ষতা ও মান নিয়ে আসার চেষ্টা করছে আর্চেলিক। এ দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করতে ও কনজ্যুমার ডিউরেবলস খাতকে সমৃদ্ধ করতে তাঁরা তুরস্ক থেকে বাংলাদেশে সেরা অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে আসার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। উৎপাদন, রিটেইল অভিজ্ঞতা ও কর্মিবান্ধব কর্মস্থল নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সিঙ্গার বাংলাদেশের সব ধরনের কার্যক্রমকে উন্নত করতে প্রয়োজনীয় রূপান্তর নিয়ে আসছেন তাঁরা।

গুলশান–১-এ দেশের প্রথম কনসেপ্ট স্টোর চালু করেছে সিঙ্গার বাংলাদেশ। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত আর্চেলিকের পুরস্কার বিজয়ী কনসেপ্ট স্টোরের ডিজাইনের আদলে চালু করা এই স্টোরে সিঙ্গার ও বেকোর (ইউরোপের শীর্ষ ৩ ব্র্যান্ডের একটি) বিস্তৃত পণ্যের সমাহার প্রদর্শনের জন্য কিউরেটেড এক্সপেরিয়েন্স জোন রয়েছে। এই স্টোর থেকে ক্রেতারা পণ্যটি কেনার আগেই যাচাই করে দেখতে পারবেন, যা কেনাকাটার অভিজ্ঞতায় যোগ করবে নতুন মাত্রা। এতে প্রথমবারের মতো আর্চেলিকের বৈশ্বিক ব্র্যান্ড বেকোর সঙ্গে শপ-ইন-শপ পদ্ধতি নিয়ে আসা হয়েছে। সিঙ্গারের নতুন এই স্টোরের ধারণা রিটেইল অভিজ্ঞতায় বৈচিত্র্য নিয়ে আসবে। গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ ও পণ্য উপস্থাপনের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক মান নিয়ে আসার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রিটেইল খাতে নতুন মানদণ্ড নিশ্চিত করছে সিঙ্গার। দেশের প্রধান শহরগুলোতে এ ধরনের আরও সিঙ্গার বেকো কনসেপ্ট স্টোর চালু করা হবে এবং এই বছর দেশজুড়ে রিটেইল স্টোরগুলোয় একই রকম ডিজাইন নিশ্চিত করা হবে।

সিঙ্গার বাংলাদেশ রাজধানীর গুলশান–২-এ করপোরেট হেডকোয়ার্টার স্থানান্তর করছে। তুর্কি স্থপতিদের ডিজাইন করা নতুন এ অফিসে কর্মীদের জন্য ওপেন ওয়ার্কস্টেশন, কলাবোরেশন জোন, টাউন হল এরিয়া, প্রোডাক্ট শোরুম, লাঞ্চ রুম, প্রেয়ার রুম, সোশ্যালাইজিং এরিয়াসহ বিশ্বমানের কর্মস্থলের অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা হয়েছে। এটি কাজ, দলগত দক্ষতা, সহযোগিতা, সৃজনশীলতা বা অগ্রসর চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে কর্মীদের উৎসাহী করে তুলবে। এই হেডকোয়ার্টার সিঙ্গার বাংলাদেশের প্রগতিশীল মনোভাবকে প্রতিফলিত করে, যা এই প্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিক সফলতার ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে।

সিঙ্গার বাংলাদেশের নতুন ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টে উৎপাদন শুরু হয়েছে। আর্চেলিকের ৭৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত নতুন কারখানাটি চার হাজারের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে এবং স্থানীয় উৎপাদনে কোম্পানির প্রতিশ্রুতিকেও ছাড়িয়ে যাবে। সিঙ্গার বাংলাদেশের লক্ষ্য হলো ৯০ শতাংশের বেশি পণ্য দেশেই উৎপাদন করা, আমদানির ওপর নির্ভরতা হ্রাস করা এবং একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরবরাহকারী ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা। উৎপাদন–প্রক্রিয়ায় টেকসই হওয়ার জন্য সিঙ্গার ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টটি লিড গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী তৈরি করা হচ্ছে।