সাক্ষাৎকার

বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী ফ্যান ব্যবহারে সরকারের নীতি প্রয়োজন

দেশে ফ্যানের বাজার, চাহিদা ও বিক্রি নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ওয়ালটন ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (সিবিও) সোহেল রানা।

প্রথম আলো:

এবার ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসা কেমন হলো?

সোহেল রানা: এ বছর ঈদ মৌসুমে ফ্যান বিক্রিতে আমরা ভালো সাড়া পেয়েছি। গত বছরের তুলনায় দেড় গুণ বেশি বিক্রি হয়েছে। আশা করছি এই মৌসুমে আমরা বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াতে পারব।

প্রথম আলো:

উচ্চ মূল্যস্ফীতির কোনো চাপ বেচাকেনার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে কি?

সোহেল রানা: ফ্যানের ক্ষেত্রে কিছুটা মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে, এটা ঠিক। তবে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। ফ্যানকে এখন দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্য হিসেবেই বিবেচনা করেন ক্রেতারা। এ জন্য ফ্যানের বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব এখনো পড়েনি।

প্রথম আলো:

কোন ধরনের ফ্যানের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি?

সোহেল রানা: এ বছর সবচেয়ে বেশি চাহিদা দেখা যাচ্ছে চার্জার (রিচার্জেবল) ফ্যানে। আমরা প্রায় চার ধরনের ১১টির বেশি মডেলের চার্জার ফ্যান বাজারে এনেছি। এর মধ্যে ৯, ১২, ১৪, ১৬ ও ১৭ ইঞ্চি আকারের ফ্যান রয়েছে।

প্রথম আলো:

দেশের ফ্যানের বর্তমান বাজার কেমন?

সোহেল রানা: বর্তমানে দেশে ফ্যানের বাজার প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার। গত কয়েক বছরে এ বাজার ২০-৩০ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে বড় একটি হিস্যা রয়েছে চার্জার ফ্যানের। শহরের তুলনায় গ্রামে চার্জার ফ্যান বেশি বিক্রি হয়।

প্রথম আলো:

ফ্যানের ধরন অনুযায়ী চাহিদা কেমন? সেখানে ওয়ালটনের অবস্থান কোথায়?

সোহেল রানা: বর্তমানে দেশে সিলিং ফ্যানের বার্ষিক চাহিদা ৫০ থেকে ৬০ লাখ পিস। এর মধ্যে ওয়ালটনের ৩০ শতাংশ চাহিদা পূরণের সক্ষমতা রয়েছে। অন্যদিকে, গত কয়েক বছরে চার্জার ফ্যানের বড় বাজার তৈরি হয়েছে। প্রতি মাসে প্রায় দুই লাখ পিস চার্জার ফ্যান উৎপাদন হয় ওয়ালটনের কারখানায়।

প্রথম আলো:

অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ওয়ালটনের ফ্যানের গুণগত বৈশিষ্ট্য কী?

সোহেল রানা: সম্প্রতি আমরা বিএলডিসি প্রযুক্তির ফ্যান নিয়ে কাজ করছি। বাসাবাড়িতে এই প্রযুক্তির ফ্যান ব্যবহারে বছরে কয়েক হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় হবে। আর শিল্পপ্রতিষ্ঠানে এই প্রযুক্তির ফ্যান ব্যবহারে ৬৫ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।

প্রথম আলো:

এ খাতের বিকাশে কী ধরনের নীতি সহায়তা প্রয়োজন?

সোহেল রানা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে সিলিং ফ্যান ব্যবহারের সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি। এই হিসাবে সাধারণ ফ্যান ব্যবহারে ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হয়। আর বিএলডিসি প্রযুক্তির ফ্যান ব্যবহারে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে প্রায় ৩ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট। ফলে সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন অবকাঠামোতে বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী ফ্যান ব্যবহারে সরকারের নীতি সহায়তা প্রয়োজন।