৩০৫ কোটি টাকার জার্মান বিনিয়োগ পেল প্রাণ–আরএফএল

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাড্ডায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে বিবিএমএল ও ডিইজির চতুর্থ অর্থায়ন চুক্তি সই হয়। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ফাইন্যান্স) উজমা চৌধুরী ও ডিইজির এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট (শিল্প ও সেবা) পারভেজ আখতার চুক্তিতে সই করেনছবি: প্রাণ–আরএফএলের সৌজন্যে

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বঙ্গ বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস লিমিটেডে (বিবিএমএল) ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা ৩০৫ কোটি টাকা অর্থায়ন করছে জার্মান বিনিয়োগ ও উন্নয়ন সংস্থা ডিইজি।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাড্ডায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে বিবিএমএল ও ডিইজির চতুর্থ অর্থায়ন চুক্তি সই হয়। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ফাইন্যান্স) উজমা চৌধুরী ও ডিইজির এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট (শিল্প ও সেবা) পারভেজ আখতার চুক্তিতে সই করেন। খবর বিজ্ঞপ্তি

প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এর মধ্যে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির জন্য ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার অর্থায়ন করবে ডিইজি। এই অর্থায়ন আংশিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইএফএসডি+ (ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইউরোপীয় ফান্ড ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট প্লাস) এর গ্যারান্টি পাবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইএফএসডি+ গ্যারান্টি কর্মসূচি অর্থায়ন পদ্ধতি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। এর আওতায় সর্বোচ্চ ৪০ বিলিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ইউরো গ্যারান্টির মাধ্যমে অংশীদার দেশগুলোতে ১৩৫ বিলিয়ন বা ১৩ হাজার ৫০০ কোটি ইউরোর টেকসই বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিবিএমএলে কী উৎপাদন হচ্ছে

বিবিএমএল ২০০৮ সালে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে নিজস্ব শিল্প পার্কে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। এর পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি পিভিসি ডোর, ফিটিংস, ইলেকট্রিক্যাল সুইচ ও সকেট, ফ্যান, এনার্জি সেভিং বাল্ব, মেলামাইন, স্টেশনারি, ওপাল ও রিসাইকেল পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করে আসছে।

বর্তমানে বিবিএমএলে প্রায় ৯ হাজার ৫০০ কর্মী কাজ করছেন। নতুন এই বিনিয়োগের ফলে হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে অতিরিক্ত ১ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডিইজি হলো জার্মান উন্নয়নমূলক অর্থায়ন সংস্থা ও কেএফডব্লিউ গ্রুপের সহায়ক প্রতিষ্ঠান। সংস্থাটি উন্নয়নশীল ও উদীয়মান দেশে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন করে বেসরকারি খাতের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কাজ করছে। ১৯৬২ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘমেয়াদি ঋণ, ইকুইটি এবং পরামর্শসেবা প্রদান করে আসছে।

ডিইজির নতুন এই অর্থায়ন প্রসঙ্গে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণামূলক। যে ডিইজি সব সময় আমাদের অংশীদার ও পরামর্শদাতা হিসেবে পাশে রয়েছে। এই অর্থায়ন আমাদের লক্ষ্যমাত্রাকে আরও শক্তিশালী করেছে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কাঁচামাল ব্যবহার করে আমরা দেশে আমদানি-পরিবর্তিত পণ্য উৎপাদন করতে প্রস্তুত। এতে গ্রামীণ এলাকায় ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জার্মান দূতাবাসের দেশটির উন্নয়ন সহযোগিতা বিভাগের প্রধান উলরিখ ক্লেপমান, আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরএন পাল, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সার্কুলার ইকোনমি, প্রাইভেট সেক্টর ও পরিবেশবিষয়ক প্রোগ্রাম ম্যানেজার হুবার্ট ব্লম, ডিইজির কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ (বাংলাদেশ ও নেপাল) ফাহমিদা আহমেদ ও বিনিয়োগ ব্যবস্থাপক ফাইয়াজ হোসেন, অ্যানালিস্ট শামস আরেফিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ডিইজির চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার ও ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের সদস্য মনিকা বেক বলেন, ডিইজি উন্নয়নশীল দেশ ও উদীয়মান বাজারগুলোর বেসরকারি খাতে টেকসই উন্নয়ন উৎসাহিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। অনেক বছর ধরে আমরা অর্থায়ন ও ব্যবসায়িক সহযোগিতার মাধ্যমে বঙ্গ বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস লিমিটেডের টেকসই প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করছি। এই চুক্তির মাধ্যমে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারি আরও দৃঢ় হবে।