শরিয়াহসম্মতভাবে সর্বোচ্চ করছাড় পাওয়ার উপায়

আইডিএলসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট শরিয়াহ ফান্ড

জুন মাসই চলতি অর্থবছরের ট্যাক্স ইনভেস্টমেন্ট করে ফেলার শেষ সময়। তাই এ সময়টাতেই বেশির ভাগ কর প্রদানকারী ট্যাক্স ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে উঠেপড়ে লাগেন, যাতে সর্বোচ্চ করছাড় নিশ্চিত করা যায়। এককালীন এই অর্থ জোগাড় করা যেমন অনেকের জন্য কষ্টসাধ্য হয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তার চেয়েও ঝামেলার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় কোথায় এই বিনিয়োগ করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া।

মূলত, যাঁরা শরিয়াহসম্মতভাবে নিজের অর্থ জোগাড় করেন, তাঁদের জন্য সর্বোচ্চ করছাড় পাওয়ার উপায় কী, সেটাই আজকের আলোচ্য বিষয়।

যাঁরা শরিয়াহ মেনে অর্থ জোগাড় করতে চান, তাঁদের অনেকেই ইসলামিক ব্যাংকগুলোতে মুদারাবা ডিপিএস, এফডিআর করে থাকেন। মুদারাবা এফডিআরে যে অর্থ রাখা হয়, তার ওপর কোনো করছাড় পাওয়া যায় না। ডিপিএসে পাওয়া যায় বটে, তবে তা সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ওপর।

আপনি পুরো বছরে যত টাকাই মুদারাবা ডিপিএসে রাখেন না কেন, করছাড় হবে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকার ওপরই, অর্থাৎ বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের ডিপিএস থেকে আপনি সর্বোচ্চ ৬০ হাজারের ১৫ শতাংশ, অর্থাৎ ৯ হাজার টাকা করছাড় পেতে পারেন। যাঁদের এর বেশি প্রয়োজন, তাঁদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় খাত হিসেবে পরিচিত ‘সঞ্চয়পত্র’।

ভালো ও নিশ্চিত রিটার্ন, সঙ্গে সর্বোচ্চ করছাড়ের জন্য সঞ্চয়পত্রে অনেকেই বিনিয়োগ করলেও এ ক্ষেত্রে শরিয়াহসম্মতভাবে ফাইন্যান্স জোগাড় করতে চাওয়া মানুষের পিছপা হতে হয়। কারণ, দিন শেষে সঞ্চয়পত্র একটি সুদনির্ভর আর্থিক পণ্য।

যে কারণে অনেকেই স্টক মার্কেটে শরিয়াহসম্মত স্টকে বিনিয়োগের কথা ভাবেন। স্টক মার্কেটে বিনিয়োগও সর্বোচ্চ করছাড়ের জন্য প্রযোজ্য একটি খাত। কিন্তু একটি সমস্যা ঠিকই থেকে যায়, কোন স্টক প্রকৃত অর্থে শরিয়াহ স্টক, সেটা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষে সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয় না।

শরিয়াহ স্টক নির্ধারণের বিভিন্ন স্ক্রিনিং মেথড আছে, যেগুলোর মাধ্যমেই কেবল নির্ণয় করা সম্ভব, কোনটি শরিয়াহ স্টক, কোনটি নয়। তাই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য শরিয়াহ মোতাবেক সর্বোচ্চ করছাড় পাওয়ার সঠিক খাতের অভাব অপূরণীয়ই থেকে যায়। এ সমস্যার সঠিক সমাধান আছে ঠিকই, কিন্তু তুলনামূলক নতুন হওয়ার কারণে এখনো হয়তো অনেক বিনিয়োগকারীরই অজানা।

শরিয়াহসম্মতভাবে সর্বোচ্চ করছাড়ের জন্য কোথায় বিনিয়োগ করা যেতে পারে? এ প্রশ্নের সহজ উত্তর হচ্ছে: আইডিএলসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট শরিয়াহ ফান্ড। এটি একটি ‘শরিয়াহ মিউচুয়াল ফান্ড’, যেখানে বিনিয়োগের মাধ্যমে বিনিয়োগকৃত সম্পূর্ণ অর্থের ওপরই করছাড় পেতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। এতে মুদারাবা ডিপিএসের মতোই মাসিক একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করার সুবিধা আছে। ফলে একসঙ্গে বড় অঙ্কের এককালীন বিনিয়োগের বোঝা না নিয়ে ছোট ছোট করেই মাসে মাসে হয়ে যায় ট্যাক্স ইনভেস্টমেন্টের সমাধান।

উদাহরণস্বরূপ, কারও যদি সর্বোচ্চ করছাড়ের জন্য বছরে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হয়, তাহলে তিনি প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে আইডিএলসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট শরিয়াহ ফান্ডে বিনিয়োগ করে সহজেই পুরো বছরের ট্যাক্স ইনভেস্টমেন্ট করে ফেলতে পারেন। এ ক্ষেত্রে মুদারাবা ডিপিএসের মতো সীমা না থাকায় এ ফান্ডে বিনিয়োগের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা তাদের জন্য প্রযোজ্য সর্বোচ্চ করছাড় নিশ্চিত সহজেই করতে পারেন।

‘আইডিএলসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট শরিয়াহ ফান্ড’ শরিয়াহ ইনভেস্টমেন্ট গাইডলাইন অনুযায়ী স্বতন্ত্র শরিয়াহ সুপারভাইজারি বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের শরিয়াহ ইনডেক্সের অন্তর্ভুক্ত স্টকে বিনিয়োগ করে থাকে।

এ ছাড়া শরিয়াহ কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গঠিত এ ফান্ডের শরিয়াহ ইনভেস্টমেন্ট গাইডলাইন ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি অর্জন করেছে দুবাইভিত্তিক বিশ্বের অন্যতম আন্তর্জাতিক শরিয়াহ ফাইন্যান্সিয়াল পরামর্শক সংস্থা আমানি অ্যাডভাইজার্স লিমিটেডের এবং এখন পর্যন্ত এই ফান্ডই বাংলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শরিয়াহ মিউচুয়াল ফান্ড।

এ ফান্ডে একদিকে মুদারাবা ডিপিএসের মতোই মাসে মাসে নিজের সাধ্য অনুযায়ী একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করা যায়, আবার বিনিয়োগের শুরু থেকে ভাঙানো, ট্যাক্স সার্টিফিকেট পাওয়া—সবই সেরে নেওয়া যায় অনলাইনে।

সবকিছু মিলিয়ে, যাদের করছাড়ের জন্য বিনিয়োগ করা প্রয়োজন এবং যাঁরা শরিয়াহসম্মতভাবে সর্বোচ্চ করছাড় পাওয়ার একটি উপায় খুঁজছেন, তাঁদের জন্য ‘আইডিএলসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট শরিয়াহ ফান্ড’ই হতে পারে সবচেয়ে যুগোপযোগী ও সহজসাধ্য সমাধান।