বিকাশে সালামি বিনিময়ে রঙিন ঈদ

পাঁচ ভাইবোনের ছয়টি সন্তান, সিরাজুল ইসলাম ডাকেন ‘বিচ্ছুবাহিনী’। এই বিচ্ছুবাহিনীকে সালামি দেওয়া ছাড়া তাঁর ঈদ অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। এবার ঈদের আগেই বিচ্ছুবাহিনীর ফোন নম্বরগুলো দিয়ে গ্রুপ তৈরি করে রেখেছেন। ঈদের চাঁদ দেখা গেলে এক ক্লিকেই বিচ্ছুবাহিনীর ঈদসালামি পাঠাবেন বিকাশে। কেবল সন্তানদের নয়, অফিসের সহকর্মী, বন্ধুদেরও আলাদা গ্রুপ তৈরি করে রেখেছেন। এখন কেবল ঈদের চাঁদ দেখার অপেক্ষা।

কয়েক বছর ধরে সিরাজুল ইসলামের মতো অসংখ্য মানুষ ঈদসালামি বিতরণ করছেন বিকাশে। টাকা পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে মজার খুদে বার্তাসহ ডিজিটাল ঈদসালামি হয়ে উঠেছে ঈদের অনুষঙ্গ। আর এবার ‘গ্রুপ সেন্ড মানি’ ফিচারের কল্যাণে একসঙ্গে অনেককে সালামি দেওয়ার সুযোগ যোগ করেছে বাড়তি আনন্দ।
একটা সময় পর্যন্ত ঈদের সালামি মানেই ছিল নতুন টাকা। আত্মীয়স্বজন বা পাড়া-প্রতিবেশীর কাছ থেকে কচকচে নোটের সালামি ঈদের আনন্দকে বাড়িয়ে দিত বহুগুণ।

‘ছোটবেলায় আমরা কোয়ার্টারে ঈদ করতাম। ঈদের দিন সকালে তিন ভাইবোন মিলে আশপাশের সবাইকে সালাম করতে যেতাম। আমাদের এক চাচি ছিলেন, তিনি প্রতিবছরই আমাদের নতুন পাঁচ টাকার নোট দিতেন। এখন বড় হয়েছি, সালামির ধরনও পাল্টেছে। তবে দুই বছর ধরে আমি বিকাশের মাধ্যমেই ডিজিটাল ঈদসালামি পাচ্ছি বেশি। আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা নেই; কিন্তু তাঁরা ছোট্ট একটি খুদে বার্তার মাধ্যমে ঈদের সালামিটা পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এটা আমার কাছে খুব অভিনব ও ভীষণ ভালো লাগার অনুভূতি দেয়,’ বললেন রাজধানীর ইস্কাটনে বসবাসরত সামিরা আঞ্জুম।

শহর ও গ্রামগঞ্জে সব শ্রেণির মানুষের মধ্যেই সাড়া জাগিয়েছে বিকাশ অ্যাপের সেন্ড মানি থেকে ডিজিটাল গ্রিটিংস কার্ডের মাধ্যমে সালামি পাঠানোর এই উদ্ভাবনী ফিচার।
‘বুড়ো হয়ে গেছিস, তাও সালামি দিলাম। —শামারুখ।’ ছোট বোনকে বুড়ো বলে চিরকালীন খুনসুটি ধরে রেখে এভাবেই ঈদের সালামি পাঠিয়েছেন এক বিকাশ-গ্রাহক। বোনের সালামি পেয়ে হালকা রাগ মেশানো আনন্দ ফেসবুকে দিয়ে সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন শামারুখ।

গত কয়েক বছরের ঈদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন করে অনেক গ্রাহককেই বিকাশ সালামির আনন্দ ভাগ করে নিতে দেখা যায়। গ্রাহকেরা তাঁদের ব্যাপক আগ্রহের কারণে ‘ঈদের চাঁদ আকাশে, সালামি দিন বিকাশ-এ’র মতো স্লোগানও ব্যবহার করছেন। চাঁদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে প্রোফাইল ছবিও বদলে নেন অনেকেই। এভাবেই ডিজিটাল সালামি আদান-প্রদানে ঈদকে আরও রঙিন করে দিচ্ছে বিকাশ।

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কীভাবে পাঠানো যায় এই সালামি?

গ্রিটিংস কার্ডসহ সালামি পাঠাতে বিকাশ অ্যাপ থেকে যে নম্বরে সেন্ড মানি করা হয়েছে, তা নির্বাচন করার পরপরই নিচের অংশে ‘আপনার উদ্দেশ্য সিলেক্ট করুন’ ট্যাবটি দেখতে পারবেন গ্রাহক। সেখানে থাকা ‘ঈদ সালামি’ অথবা ‘ঈদ মোবারক’ অপশনগুলো থেকে যেকোনো একটি নির্বাচন করে প্রিয়জনকে সালামি পাঠাতে পারবেন। সালামির সঙ্গে বাংলা বা ইংরেজিতে খুদে বার্তা লিখে দেওয়ার অপশন আছে। স্বাক্ষরের অংশে নিজের নাম বা সম্পর্কের পরিচয় যেমন মা, মামা, চাচা, ভাই, বোন ইত্যাদি লিখে দিতে পারবেন গ্রাহক। সব শেষ ধাপে বিকাশ পিন দিয়ে গ্রিটিংস কার্ডসহ সেন্ড মানি করে পাঠিয়ে দেবেন সালামি।

যে গ্রাহক ঈদ মোবারক বা ঈদসালামি গ্রিটিংস কার্ড পাবেন, তিনি তাঁর ডিভাইসের নোটিফিকেশনে একটি গিফট বক্স দেখতে পারবেন। বক্সে ক্লিক করে বিকাশ অ্যাপে ঢুকলেই সালামির পরিমাণ এবং খুদে বার্তা দেখতে পারবেন।

দৈনন্দিন নানা লেনদেনকে সহজ, সময় ও খরচ-সাশ্রয়ী করে তোলার পাশাপাশি আনন্দময় করে তুলতে ২০২১ সালে বিকাশ অ্যাপে সংযুক্ত হয় বার্তাসহ উপহার পাঠানোর অনন্য ফিচারটি।

কেবল ঈদ নয়, দেশের বড় উৎসবগুলোকে কেন্দ্র করেও শুভেচ্ছা বার্তাসহ টাকা পাঠানোর সেবা চালু থাকে বিকাশে। এর সঙ্গে আছে বছরজুড়ে গিফট, জন্মদিন, বিয়ে, অভিনন্দন, অ্যানিভার্সারি, শুভকামনা এসব শিরোনামে প্রিয়জনকে বিকাশ অ্যাপের সেন্ড মানি থেকেই বার্তাসহ শুভেচ্ছা পাঠানোর সুযোগ। উপহারের পরিবর্তে বিকাশে টাকা পাঠিয়ে জীবনকে রঙিন করে তোলেন প্রিয়জনেরা।

এ প্রসঙ্গে বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশন্স শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, ‘আর্থিক লেনদেনে আরও সক্ষমতা ও স্বাধীনতা আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিকাশ। গ্রাহকের লেনদেন আরও স্মৃতিময় এবং আনন্দময় করতেই বিকাশের এই ঈদসালামি উদ্ভাবন। এটি গ্রাহকের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। দিন দিন শুভেচ্ছা কার্ডসহ সালামি পাঠানোর হার বাড়ছে। ঈদের সপ্তাহে লাখ লাখ গ্রাহক বিকাশের ঈদসালামি ফিচার ব্যবহার করে প্রিয়জনকে ডিজিটাল অর্থ ও পছন্দমতো বার্তা দিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকেন। মূলত উৎসবের আমেজকে আরও রাঙিয়ে দিতেই বিকাশের এই সালামি ব্যবস্থা।’