চতুর্থবারের মতো বেস্ট ব্র্যান্ডের স্বীকৃতি পেল এপেক্স

জুতার ক্যাটাগরিতে টানা চতুর্থবার সেরা ব্র্যান্ডের গৌরব অর্জন করেছে এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড
সংগৃহীত

ভোক্তাদের নিরন্তর ভালোবাসা, বিশ্বাস ও সমর্থনে চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের সেরা জুতার ব্র্যান্ড হিসেবে ‘বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’ স্বীকৃতি পেয়েছে এপেক্স।
সারা দেশে ভোক্তাদের জরিপের ভিত্তিতে প্রতিবছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দেশের বেস্ট ব্র্যান্ড নির্বাচিত করে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম। টেকসই ও সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করেছে—এমন ব্র্যান্ডগুলোকে দেড় দশক ধরে বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম।

এপেক্স-কারুশিল্প ও প্রযুক্তির মিশ্রণে অনন্য এক দেশীয় জুতার ব্র্যান্ড। গুণগত মান, ব্যবহারকারীর স্বাচ্ছন্দ্য, ভোক্তাবান্ধব পরিষেবা ও বাহারি শৈলীতে গুরুত্ব দিয়ে জুতা প্রস্তুত করে বাজারে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করেছে দেশীয় ব্র্যান্ডটি।

১৯৯০ সালে যাত্রা শুরু হওয়া এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। জুতা প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশের পথিকৃৎ এপেক্স। বৈশ্বিক বাজারের পাশাপাশি বাংলাদেশের জুতার বাজারে উল্লেখযোগ্য অবস্থান করে নিয়েছে এই কোম্পানি। ক্রেতাদের ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা ও রুচির বিষয় মাথায় রেখে জুতা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে নয়টি অভ্যন্তরীণ ব্র্যান্ড। সেগুলো হলো ভেনচুরিনি, এপেক্স , স্প্রিন্ট, ম্যাভেরিক, মুচি, নিনো রসি, টুইঙ্কলার, ডক্টর মক ও স্কুলস্মার্ট। পরিবারের সব সদস্যের সঠিক জুতা বাছাইয়ের জন্য পছন্দের গন্তব্য এপেক্স; কারণ সব শ্রেণি ও বয়সের ভোক্তার জন্য টেকসই, সুলভ ও গুণগত মান বিবেচনায় দেশীয় ক্রেতাদের জন্য জুতা প্রস্তুত করে তারা।

গুণগত মান, ভোক্তাবান্ধব ও উৎপাদনশীলতা বিবেচনায় এপেক্স ইতিমধ্যে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০১৫ সালে চামড়া খাতের বৈশ্বিক সংস্থা লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) নিরীক্ষায় সেরা মান, অর্থাৎ গোল্ড কারখানার মর্যাদা পায় এপেক্স। পাশাপাশি ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড রেসপন্সিবল অ্যাক্রেডিটেড প্রোডাকশন’ (ডব্লিউআরএপি) সনদ ও ‘বিজনেস সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স ইনিশিয়েটিভ’ (বিএসসিআই) রেটিংয়ে স্বীকৃত বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান এপেক্স। দেশের চামড়া ও জুতার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এপেক্সেই প্রথম স্বেচ্ছায় নিজেদের টেকসই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এপেক্স সবচেয়ে বেশি বিক্রীত আইকনিক স্যান্ডেলের নাম ‘ফ্রাঙ্কো’, যেটি দুই হাজার সালের শুরুর দিকে সর্বজনীন জুতার স্টাইলে পরিণত হয়। সারা দেশে এপেক্সের ৪৫০টিরও বেশি দোকান রয়েছে, আছে প্রতি শিফটে নয় হাজার জোড়া জুতা উৎপাদনের ক্ষমতা। উৎপাদনের জন্য জ্বালানি চাহিদার ২৫ শতাংশেরও বেশি সৌরশক্তি ব্যবহার করা হয় কারখানায়। এপেক্সের সংগ্রহে আছে ‘নাইকি’র মতো বিখ্যাত বৈশ্বিক লেবেলও। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের জুতার বাজারের অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা এখন এপেক্সের হাতে। বর্তমানে জুতার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি ফ্যাশন ব্র্যান্ড, আনুষঙ্গিক সামগ্রী ও পোশাক সরবরাহ করে।

১৯৯০-এর দশকে ইতালির এক জুতা প্রদর্শনীতে অংশ নেয় এপেক্স। পরিচয় হয় ইতালির বৃহৎ জুতা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান এডেলচির সঙ্গে। তারপরই দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে রপ্তানি শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি; বর্তমানে তারা বিশ্বের ৪০টি দেশে জুতা রপ্তানি করছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ার বড় বড় জুতা বিক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় বর্তমানে শীর্ষে আছে এপেক্স। ইতালির অনুপ্রাণিত নকশায় ও বাংলাদেশি কারুশিল্পের সংমিশ্রণে বিশ্বের জুতার বাজারে এপেক্সের কল্যাণে যুক্ত হয়েছে গর্বিত ট্যাগলাইন—‘মেড ইন বাংলাদেশ’।