রিয়েল এস্টেট খাতে হয়েছে ডিজিটালাইজেশন

রিয়েল এস্টেট খাতে হয়েছে ডিজিটালাইজেশন
ছবি: সংগৃহীত

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব মানুষই স্থিতু হতে চেষ্টা করে। সে জন্যই অনেকেই নিজের বাসস্থান অথবা বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে প্রপার্টিতে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক হন। কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যেকোনো প্রপার্টি ক্রয়–বিক্রয় একটি সময়সাপেক্ষ এবং জটিল ব্যাপার। চাহিদা মোতাবেক প্রপার্টি খুঁজে বের করা থেকে শুরু করে তা পছন্দ, দর–কষাকষি, মালিকানা পরিবর্তন, রেজিস্ট্রেশনসহ নানান কিছু বিবেচনা করার আছে। যেগুলো ঘরে বসে করা কখনোই সম্ভব না। আবার জীবনের ব্যস্ত দিনলিপি ও কাজের চাপের মধ্যে লম্বা সময় বের করে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ করাও অনেকের জন্য কঠিন। যেকোনো প্রপার্টি বেছে নেওয়ার আগে নির্দিষ্টভাবে পার করতে হয় বেশ কয়েকটি ধাপ। প্রথমেই বাজেট এবং পছন্দসই এলাকা অনুসারে কিছু প্রপার্টি আলাদা করা। এরপর সেগুলো স্বচক্ষে দেখা, আশপাশের এলাকা সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া, সেই প্রপার্টি কতটুকু নিজের চাহিদা পূরণ করছে, তা যাচাই–বাছাই করে তবেই দরদাম করা। দামে দুই পক্ষ সম্মতি প্রদান করলে এরপর আসে মূল্য পরিশোধ, মালিকানা হাতবদল, রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদি।

এ রকম পরিস্থিতিগুলোতেই আবাসন খাতে এখন নিয়ামক হয়ে উঠেছে ‘ডিজিটাল সাপোর্ট’। আবাসন খাতের ডিজিটালাইজেশনের কারণে প্রথম দিকের অনেকগুলো ধাপই এখন ঘরে বসেই করে ফেলা সম্ভব হচ্ছে। সেটাও শুধু একটি স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটারের সাহায্যেই! বাস্তব জীবনের অনেক জটিলতা ডিজিটালাইজেশনের কারণে এখানেই সমাধান হয়ে যাচ্ছে।

প্রপার্টি কেনাবেচা নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় আয়োজনের একটি হলো ‘আবাসন মেলা’। মেলায় আসা অসংখ্য প্রোডাক্ট থেকে নিজের পছন্দের অপশনটি বেছে নিতে পারেন একজন ক্রেতা। বেশ কিছুদিন আগে ডিজিটালাইজেশনের কারণে এই জমজমাট আয়োজনও হয়েছে অনলাইনে। চলছে আবাসন মেলার তৃতীয় আয়োজন, যেখানে কো-স্পনসর হিসেবে থাকছে বিপ্রপার্টি। বিপ্রপার্টির মতো পূর্ণাঙ্গ রিয়েল এস্টেট সলিউশন প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান, রিয়েল এস্টেট ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে বরাবরই রাখছে অগ্রগামী ভূমিকা। সহজ করে বলতে হলে, বিপ্রপার্টির সার্ভিসগুলো রিয়েল এস্টেট খাতের নানান সমস্যার সমাধানের উপায় নিয়ে সাজানো।

দেশের রিয়েল এস্টেট খাত শক্ত ভিত্তির ওপরে দাঁড়াতে শুরুর সময়েই মহামারির প্রকোপ নেমে আসে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে রিয়েল এস্টেট খাতের জন্য শুভকর বেশ কটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মহামারি–পরবর্তী সময়ে। যেমন অপ্রদর্শিত অর্থ রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগের সুযোগ, গৃহঋণের ক্ষেত্রে সুদহার কমিয়ে ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা, ল্যান্ড ট্রান্সফার ট্যাক্স ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ নামিয়ে আনা, স্ট্যাম্প ডিউটি ফি ৩ শতাংশ থেকে অর্ধেক কমিয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা ইত্যাদি। এমন কার্যকর নীতিগুলো ২০২০ সালে রিয়েল এস্টেট খাতের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে আর যোগ করেছে এক অনন্য মাত্রা।

বিপ্রপার্টি বাংলাদেশের অন্যতম পূর্ণাঙ্গ প্রপার্টি সলিউশন প্রোভাইডার। তাদের মূল লক্ষ্য গ্রাহকদের কাছে রিয়েল এস্টেট সার্ভিসকে সহজলভ্য ও সহজতর করে তোলা। বাড়ি কেনা থেকে শুরু করে ভাড়া নেওয়া কিংবা বিক্রি—সবকিছুকেই আগের চেয়ে সহজ করে ফেলতে তারা কাজ করছে। বিপ্রপার্টি.কম এমনই একটি ওয়েবসাইট, যার মাধ্যমে রিয়েল এস্টেট গ্রাহকেরা ঘরে বসেই সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় ও ভাড়ার মতো জটিল কাজগুলো নিশ্চিন্তে করতে পারছেন, যা ডিজিটালাইজেশনের প্রথম ধাপ।

বিপ্রপার্টির ওয়েবসাইট ভিজিট করলেই পাওয়া যাবে হাজারো লিস্টেড প্রপার্টির খোঁজ। ওয়েবসাইটের সার্চ বক্সটির ব্যবহার করে, সেখানে কাঙ্ক্ষিত এলাকা, বাজেট রেঞ্জ, কত স্কয়ারফিটের কত রুমের, কত বাথের ফ্ল্যাট প্রয়োজন, তা লিখে ইনপুট দিলেই সে রকম অনেকগুলো প্রপার্টির খোঁজ চলে আসবে স্ক্রিনে, যেগুলোর সব ধরনের তথ্য ওয়েবসাইটেই লিপিবদ্ধ আছে। ফলে ‘কোথায় পাব’–এর সমাধান পাওয়া যায় যেকোনো জায়গা থেকে।

কোনো একটি বা কয়েকটি প্রপার্টি পছন্দ হয়ে গেলে আসে ওয়েবসাইটের আরও ইন-ডেপথ ব্যবহারের পালা। শুধু লিখিত বর্ণনা নয় বরং নিজের চোখে প্রপার্টি দেখার প্রয়োজন থাকে, ডিজিটালাইজেশনের কারণে সেটি করা সম্ভব ওয়েবসাইটেই। ৩৬০ ডিগ্রি ভার্চ্যুয়াল ট্যুর ব্যবহার করে চারদিকে ক্যামেরা ঘুরিয়ে, জুম ইন করে সেই প্রপার্টির বিস্তারিত দেখে নিতে পারেন যে কেউ, ইন্টারনেট সংযোগ আছে এমন যেকোনো স্থান থেকে। লিস্টিং কিছুটা স্ক্রল করতেই প্রপার্টির আশপাশের এলাকা সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে। অর্থাৎ একজন গ্রাহকের প্রপার্টি কেনার অনেক বড় অংশ সম্পন্ন হয়ে যাবে ঘরে বসেই! দেশের অনেক পেশাজীবী এবং অনেক প্রবাসীর ব্যস্ত জীবনে স্বস্তির পরশ হয়ে এসেছে বিপ্রপার্টি এবং এর উন্নত মানের প্রপার্টি সার্ভিস।
শুধু প্রপার্টি কেনা বা বেচা নয়, ঢাকা শহরে অসংখ্য মানুষ ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। মনের মতো বাসা, সামর্থ্য অনুযায়ী খুঁজে পাওয়ার মতো কষ্টসাধ্য বিষয়টিও এখন বেশ সহজ করে তুলেছে বিপ্রপার্টি। আছে খুব সহজেই বাসা ভাড়া নেওয়া বা ভাড়া দেওয়ার উপায়। বিক্রির মতোই ভাড়ার জন্যও ওয়েবসাইটে লিস্টেড আছে অনেক প্রপার্টি। যেখান থেকে প্রয়োজনমতো খুঁজে নেওয়া যায় দরকারি প্রপার্টি। ঘরে বসেই এলাকা অনুসারে বাজেট বুঝে প্রপার্টি খুঁজে নিচ্ছেন অনেকেই। সময় ও অর্থ একসঙ্গে অনেকটাই বেঁচে যাচ্ছে। বিপ্রপার্টির রেন্টাল সার্ভিস নির্দিষ্টভাবে যত্নসহকারে কাজ করে আসছে, যেখানে গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করাই সবচেয়ে বড় বিষয়। অনেক বাড়িওয়ালার বাসাভাড়া কালেক্ট করার জন্য সাপোর্টের প্রয়োজন পড়ে। এ জন্য আছে ‘পে-রেন্ট’ নামক সম্পূর্ণ আলাদা একটি ইকোসিস্টেম, যেখান থেকে একজন ভাড়াটে এবং বাড়িওয়ালা খুব সহজে লেনদেন করতে পারেন তাঁদের বাড়িভাড়া।

শুধু প্রপার্টি ক্রয়–বিক্রয় বা ভাড়াই নয় বরং প্রপার্টিসংক্রান্ত আনুষঙ্গিক সব ধরনের সার্ভিস পাওয়া সম্ভব বিপ্রপার্টির কাছ থেকে। প্রপার্টি বিক্রি করতে চাইলে আছে ওয়েবসাইটে প্রপার্টি যোগ করার অপশন। যেকোনো প্রপার্টি মালিক চাইলে বিস্তারিত লিখে ওয়াবসাইটে থাকা ফরম সাবমিট করে লিস্ট করে ফেলতে পারেন তাঁর বিক্রয়যোগ্য প্রপার্টি।

তবে বিপ্রপার্টির সার্ভিস শুধু বাসা ভাড়া দেওয়া, বিক্রি করা কিংবা ক্রয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। সম্প্রতি তারা চালু করেছে সম্পূর্ণ নতুন বিপ্রপার্টি ইন্টেরিয়র সার্ভিস। আবাসিক কিংবা বাণিজ্যিক, যেকোনো ধরনের প্রপার্টির ইন্টেরিয়র গুছিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব সেখানে বিপ্রপার্টি নিয়ে নেয়। এবং এর শুরুটা হতে পারে সিম্পল একটি ই–মেইলের মাধ্যমেই। সম্পূর্ণ ইন্টেরিয়র শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়াসহ সব ধরনের কাজ করবে তারাই।

দেশের প্রপার্টি হাতবদল একটি জটিল বিষয়। প্রপার্টি–সংক্রান্ত এসব আইনি জটিলতার কথা ভেবেই অনেকে রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগ থেকে পিছিয়ে যান। ডিজিটাইলাইজেশনের পাশাপাশি দেশের রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগকে নিরাপদ করে তুলতে অবিরত কাজ করছে বিপ্রপার্টির লিগ্যাল সার্ভিস টিম। প্রপার্টি–সংক্রান্ত যেকোনো লিগ্যাল কনসালট্যান্সি বা আইনি পরামর্শ ও ডকুমেন্টেশনে হেল্প করে বিপ্রপার্টি।

অর্থাৎ শুধু কাঙ্ক্ষিত ঠিকানা খুঁজে পেতে সহায়তা করার মধ্যেই বিপ্রপার্টির সেবা সীমাবদ্ধ নয়, এরপর পরামর্শ, আইনি সহায়তা থেকে শুরু করে যত ধরনের বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়া সম্ভব, তার সবই দিচ্ছে বিপ্রপার্টি। এসবের পাশাপাশি প্রপার্টি মার্কেটিংয়ের সেবাও দিয়ে থাকে তারা। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন নামীদামি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু আবাসন প্রকল্প এক্সক্লুসিভলি বিপণন ও বিক্রয়ে কাজ করছে বিপ্রপার্টি।

বিপ্রপার্টি মূলত একটি গ্লোবাল কোম্পানি। ইএমপিজি বা ‘ইমার্জিং মার্কেটস প্রপার্টি গ্রুপের’ অধীনে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে তারা। শুধু বাংলাদেশ না, ইমার্জিং মার্কেটস প্রপার্টি গ্রুপ সংযুক্ত আরব আমিরাতের, পাকিস্তান, মরক্কো, সৌদি আরব, জর্ডান ইত্যাদি দেশেও তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আর এমন একটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের টপ কোয়ালিটি সার্ভিসে বদলে যাচ্ছে দেশের রিয়েল এস্টেট খাতের সার্বিক চিত্র। প্রপ-টেক আর ডিজিটালাইজেশনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠছে রিয়েল এস্টেট খাত।