সর্বোচ্চ মূলধন নিয়ে আসছে রবি

আইপিও অনুমোদন দিল বিএসইসি। ৫ হাজার ২৩৮ কোটি টাকার মূলধনের এ কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে বেড়ে যাবে বাজার মূলধনও।

দেশের সবচেয়ে বড় মূলধনি কোম্পানি হিসেবে শেয়ারবাজারে যুক্ত হচ্ছে মুঠোফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা। মুঠোফোন অপারেটরদের মধ্যে দ্বিতীয় কোম্পানি হিসেবে এটি শেয়ারবাজারে যুক্ত হচ্ছে। গতকাল বুধবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানিটির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পথে বড় ধাপটি পার করল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুঠোফোন অপারেটরটি।

রবি আজিয়াটার প্রধান করপোরেট ও রেগুলেটরি কর্মকর্তা সাহেদ আলম এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার অনুমোদন পাওয়ার মাধ্যমে রবিতে জনগণের অংশীদার হওয়ার সুযোগ তৈরি হলো। সরকারের কাছে আমাদের কিছু প্রত্যাশা ছিল, আশা করছি, সেগুলো বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বিবেচনা করা হবে।’

বিএসইসি জানিয়েছে, রবি আজিয়াটা শেয়ারবাজারে ১০ টাকা অভিহিত মূল্য বা ফেসভ্যালুতে ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি শেয়ার ছেড়ে প্রায় ৫২৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। এর মধ্যে ১৩৬ কোটি টাকা দেবেন কোম্পানিটির কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। শেয়ার ছেড়ে সংগ্রহ করা টাকায় কোম্পানিটি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করবে। রবি আজিয়াটাকে শেয়ারবাজারে আনার ক্ষেত্রে ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্বে রয়েছে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত আর্থিক বছরের হিসাব বিবরণীর ওপর ভিত্তি করে কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদন দেওয়া হয়। তাতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস দাঁড়িয়েছে চার পয়সায়। আর একই সময়ে কোম্পানিটির প্রকৃত সম্পদমূল্য বা এনএভি দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৬৪ পয়সায়।

রবি আজিয়াটা এখন পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে বড় মূলধনি কোম্পানি। এটির পরিশোধিত মূলধন ৫ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় মূলধনি কোম্পানি ন্যাশনাল ব্যাংক। পাশাপাশি রবির তালিকাভুক্তির মধ্য দিয়ে শেয়ারবাজারে বহুজাতিক কোম্পানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১২ টি।

২০০৯ সালে গ্রামীণফোন শেয়ারবাজারে আসার ১১ বছর পর দ্বিতীয় মুঠোফোন অপারেটর হিসেবে রবি শেয়ারবাজারে আসছে।

এদিকে ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত রবির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, উল্লেখিত পাঁচ অর্থবছরের মধ্যে ২০১৬–১৭ সালে পরপর দুই বছর কোম্পানিটি কর–পরবর্তী লোকসান করেছে। বাকি তিন বছরই লাভ করেছে। তবে ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে এসে কোম্পানিটির মুনাফায় বড় পতন ঘটে। ২০১৯–২০ অর্থবছরে লাভ–লোকসাননির্বিশেষে মুঠোফোন অপারেটরে মোট আয়ের ওপর ন্যূনতম ২ শতাংশ হারে কর আরোপ করায় মুনাফা ব্যাপকভাবে কমে যায়। তাই ২০১৮ সালে কোম্পানিটি ২১৫ কোটি টাকা মুনাফা করলেও ২০১৯ সালে তা নেমে আসে মাত্র ১৭ কোটি টাকায়।

মুনাফা বেড়েছে ৬ মাসে

গত জানুয়ারি থেকে জুনের শেষে রবির শেয়ার প্রতি আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ পয়সায়। ২০১৯ সাল শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৪ পয়সা, গত ছয় মাসে তা চার গুণ বেড়েছে। এই সময় ৩ হাজার ৭১০ কোটি টাকা আয় করেছে রবি।

আরও পড়ুন