রাশিয়া ছাড়ার চেষ্টা করা বিদেশি কোম্পানিগুলোর বিপদ

ছবি: রয়টার্স

রাশিয়া ছাড়ার চেষ্টা করা কিছু কোম্পানি সম্প্রতি দেশটিতে থাকা তাদের সম্পত্তি বিক্রি করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। কোম্পানিগুলো যে দামে তাদের সম্পত্তি বিক্রি করতে চাইছে, তার ওপর বড় ধরনের মূল্যছাড়ের দাবি করেছে রাশিয়া।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দেশটিতে কাজ করা বিদেশি কোম্পানিগুলোর মূল্যায়ন করেছে রাশিয়া। এরপর এসব কোম্পানির সম্পদ বিক্রির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের দাবি জানিয়েছে দেশটি। বিষয়টি সম্পর্কে জানেন—এমন তিনটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের বেশিও ছাড় দাবি করা হচ্ছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। এরপর অনেক পশ্চিমা কোম্পানি রাশিয়ায় তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। আরও অনেক বিদেশি কোম্পানি দেশটি ছাড়ার চেষ্টা করছে। তবে এসব কোম্পানির চলে যাওয়ার পথ দিন দিন কঠিন হচ্ছে। এর সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছে কম দামে সম্পদ বিক্রি।

বিদেশি কোম্পানিগুলোর নির্বাহীরা বলছেন, রাশিয়ার আরোপিত নিয়মগুলো মেনে চলা তাঁদের জন্য কঠিন হয়ে উঠছে।

রাশিয়ায় কার্যক্রম চালানো বিদেশি কোম্পানিগুলোর তথ্য যাচাই করে রয়টার্স জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত রাশিয়ায় প্রায় ৮ হাজার কোটি ডলারের বেশি লোকসান করেছে এসব কোম্পানি। ফলে রাশিয়ার মূল্যছাড়ের নতুন দাবির ফলে এই লোকসান আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত সপ্তাহের শেষে রাশিয়া ছেড়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মদ প্রস্তুতকারক কোম্পানি হাইনিকেন। তারা রাশিয়ার আর্নেস্ট গ্রুপের কাছে মাত্র এক ইউরোর বিনিময়ে (প্রতীকী মূল্য) তাদের সব সম্পদ বিক্রি করে রাশিয়া থেকে বেরিয়ে গেছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, বিদেশি কোম্পানিগুলোর রাশিয়া ছাড়ার পথে ধীরে ধীরে বাড়তি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে মস্কো। এমনকি জাতীয়করণের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত জুলাই মাসে ডেনমার্কের মদ প্রস্তুতকারক কার্লসবার্গ ও ফ্রান্সের দই প্রস্তুতকারক কোম্পানি ড্যানোনের সম্পদ জব্দ করে রাশিয়া।

এখনো যেসব বিদেশি কোম্পানি রাশিয়া ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে, তাদের মধ্যে রয়েছে টেলিকম খাতের ভিয়ন, প্রযুক্তি কোম্পানি ইয়ানডেক্স ও ইতালির ঋণ প্রদানকারী কোম্পানি ইনটেসা।

এ বিষয়ে রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা কোনো কোম্পানির চূড়ান্ত বিক্রয়মূল্য কমাতে বাধ্য করছে না। তবে এ সংশ্লিষ্ট সরকারি কমিশন কর্তৃক বিদেশি কোম্পানির বাজারমূল্যের ‘ভুল মূল্যায়ন’ হয়েছে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া মূল্যায়ন সামঞ্জস্যের সুযোগ নেই। অর্থাৎ সে ক্ষেত্রে কোনো বিদেশি কোম্পানির যে বিক্রয়মূল্য অনুমান করা হয়েছে, তার ৫০ শতাংশের বেশি ছাড়েই সম্পদ বিক্রি করতে হবে।