দেশে ৭৬ শতাংশ পরিবার আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করে

প্রতীকী ছবি

দেশে বর্তমানে ৭৬ শতাংশ পরিবার আয়োডিনযুক্ত প্যাকেট লবণ ব্যবহার করছে। এর ফলে দৃশ্যমান গলগণ্ড ও বামনত্বের মতো রোগ দেশ থেকে নির্মূলের পর্যায়ে চলে গেছে। আর এ কাজে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)।

আজ শনিবার বিশ্ব আয়োডিন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা জানান বক্তারা। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বিসিক ভবনে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিসিকের চেয়ারম্যান মুহ. মাহবুবর রহমান। বিসিকের লবণ সেল আয়োজিত অনুষ্ঠানে সহায়তা করেছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল (এনআই)।

আলোচনা সভায় বক্তারা জানান, আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যা একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা। এ সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে ও জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন দেশে প্রতিবছরের ২১ অক্টোবর বিশ্ব আয়োডিন দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশেও এই প্রথম স্বল্প পরিসরে দিবসটি পালন করেছে বিসিক।

বিসিকের চেয়ারম্যান মুহ. মাহবুবর রহমান বলেন, কয়েক দশক আগে দেশের বেশ কিছু স্থানে, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোয় আয়োডিন ঘাটতিজনিত সমস্যা ব্যাপক আকারে দেখা দেয়। এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নব্বইয়ের দশক থেকে বিসিক সর্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশের লবণ মিলগুলোকে নিবন্ধন প্রদান, তাদের কাছে পটাশিয়াম আয়োডেট সরবরাহ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান, লবণমিল ও বাজার পর্যায়ে তদারকি এবং আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানান বিসিক চেয়ারম্যান।

অনুষ্ঠানে বিসিকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশে আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদন কার্যক্রমের শুরুর দিকে, অর্থাৎ ১৯৯৩ সালে আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যার হার ছিল প্রায় ৬৯ শতাংশ। তবে বিসিকের এসব কার্যক্রমের ফলে তা কমে ২৪ শতাংশে নেমেছে। একটি দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করলে সে দেশ আন্তর্জাতিকভাবে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। বাংলাদেশও সেই স্বীকৃতি অর্জনের পথে রয়েছে।

আয়োডিন দিবস পালন অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক খালেদা ইসলাম ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গুলজারুল আজিজ।

অন্যদের মধ্যে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের (এনআই) কান্ট্রি ডিরেক্টর সায়কা সিরাজ, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশনের (গেইন) পোর্টফোলিও লিড আশেক মাহফুজ ও বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির বক্তব্য দেন।

এ ছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. নূরুজ্জামান, বিসিকের পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস, মো. আহসান কবীর, মোহাম্মদ জাকির হোসেন, শ্যামলী নবী ও কাজী মাহাবুবুর রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।