অনলাইন ব্যবসায় নীতিসহায়তা দরকার

ফাহিম মাশরুর

করোনা মহামারিতে অনলাইনে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। অন্যান্য দেশে অনলাইনে পণ্য কিনলে মূল্য কম পড়ে। আর আমাদের দেশে বেশি। এটির মূল কারণ হচ্ছে ভ্যাট। ২০১৮ সালে অনলাইন কেনাকাটায় ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়। অন্যদিকে দেশের ৯০ শতাংশ দোকানপাটেই ভ্যাট দিতে হয় না। এ জন্য দোকানপাটের চেয়ে অনলাইনে কেনাকাটায় বেশি খরচ হয়।

সম্প্রতি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারের আটটি বিপণিবিতানে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের এক জরিপে দেখা গেছে, ৮৮ শতাংশ দোকান ভ্যাট দেয় না। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকায় এই অবস্থা হলে মফস্বলের চিত্র আরও করুণ হবে। সে কারণে অনলাইন কেনাকাটায় আগামী দুই-তিন বছরের জন্য ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হলে খাতটি বেড়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

আমরা সবাই চাই, দেশের অর্থনীতি অপ্রাতিষ্ঠানিক থেকে প্রাতিষ্ঠানিক হোক। দুই বছর আগে সরকার ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় আনার জন্য ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয়। এমন নয় যে বিদেশ থেকে প্রবাসীরা বেশি টাকা পাঠাচ্ছেন। তাঁরা আগেও পাঠাতেন, যার একটি বড় অংশ হুন্ডির মাধ্যমে আসত। সরকার ৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে সেই অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে নিয়ে এসেছে। অনলাইন কেনাকাটার ক্ষেত্রেও সরকারের এ রকম নীতিগত সিদ্ধান্ত দরকার।

অনলাইন ব্যবসায় আরেকটি বড় প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে ইন্টারনেটের খরচ। শহরাঞ্চলে আমরা স্বল্প ব্যয়ের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করি। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের লোকজনের ভরসা হচ্ছে মুঠোফোনে থ্রি-জি বা ফোর-জির ইন্টারনেট। ইন্টারনেটের ওপর ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ও ৫ শতাংশ সারচার্জ মওকুফ করা দরকার।

বাংলাদেশের ২-৩ শতাংশ মানুষ অনলাইনে কেনাকাটা করে। চীনে সেটি ৫০ শতাংশ ও ভারতে ১৫ শতাংশের কাছাকাছি। ভারতে জিও কোম্পানি ইন্টারনেট খরচ কমানোর পর তিন বছরের ব্যবধানে অনলাইনে কেনাকাটার এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আমাদের দেশেও সেই সুযোগ আছে।