আগারগাঁও গড়ে উঠছে যেনতেনভাবে
আগারগাঁও বস্তিই ছিল একসময় এলাকাটির পরিচিতি। সেই আগারগাঁওয়ে যাচ্ছে সরকারের সব সংস্থার দপ্তর। কিন্তু প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পরিকল্পনার অভাব এখনই স্পষ্ট।
রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় যাঁরা একসময় বস্তি, খালি জায়গা দেখে বড় হয়েছেন; সেই স্থানীয়রা আগারগাঁওয়ের রূপান্তরে উচ্ছ্বসিত। রাস্তাঘাট হয়েছে। একের পর এক ভবন হচ্ছে। সরকারি দপ্তরগুলো আসছে। মানুষে সরগরম এলাকা। তাঁদের চোখে আগারগাঁও—‘সে এক এলাহি কাণ্ড!’
কিন্তু যাঁরা মতিঝিল দেখেছেন, যাঁদের নিত্য যাতায়াত সচিবালয় এলাকায় সরকারি ভবনে; তাঁদেরও এখন আসতে হয় আগারগাঁওয়ে। তাঁদের চোখে আগারগাঁও আরেকটি মতিঝিলের ছায়া ফেলছে। এই শঙ্কার ছায়ার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে নগর-পরিকল্পনাবিদদের আশঙ্কাও। এই আধুনিক সময়ে আগারগাঁওয়ে কিছু কিছু ভবন হচ্ছে পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না রেখে। তাদের গাড়ি রাখা হচ্ছে রাস্তার ওপর। পুকুর ভরাট করে হচ্ছে ভবন। নেই কোনো সবুজের ব্যবস্থা। নেই ফাঁকা জায়গা, নেই একটা পার্ক বা মাঠ।
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার বাসিন্দা মনির হোসেন জীবিকার সন্ধানে ১৯৯০ সালে রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় আসেন। তখন এলাকায় থাকার মধ্যে ছিল বস্তি, রিকশা গ্যারেজ। কোথাও ডোবা, ঝিল। চলাচলের জন্য ছিল একটিমাত্র রাস্তা। সন্ধ্যার পর এলাকার কিছু জায়গায় যাওয়ার সাহস পেত না কেউ। নৌকা দিয়ে চলাচলের স্মৃতিও ভাসছে মনির হোসেনের চোখে। সেই চোখেই গত তিন দশকে আগারগাঁও এলাকার রূপান্তর দেখেছেন তিনি। ৫৮ বছর বয়সের মনির হোসেন একজন মুদিদোকানি থেকে এখন পশ্চিম আগারগাঁও (বিএনপি বাজার) বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তাঁর চোখে ‘আগারগাঁও এখন রাজকীয় এলাকা।’
এখানে অনেক ভবন পরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়নি, হচ্ছে না। কথা ছিল সব ভবন একই নকশায় হবে। কিন্তু একেক দপ্তর নিজেদের তৈরি নকশায় ভবন নির্মাণ করছে। অনেক দপ্তর ভবন বানাচ্ছে গাড়ি পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না রেখে।
নগর-পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম কীভাবে দেখছেন আজকের আগারগাঁওকে? তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আগারগাঁও এলাকাটি দেশের প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবেই পরিকল্পনায় রাখা হয়। যদিও সরকারি দপ্তরগুলো অনেক দেরিতেই সেখানে যাচ্ছে। কিন্তু এখানে অনেক ভবন পরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়নি, হচ্ছে না। কথা ছিল সব ভবন একই নকশায় হবে। কিন্তু একেক দপ্তর নিজেদের তৈরি নকশায় ভবন নির্মাণ করছে। অনেক দপ্তর ভবন বানাচ্ছে গাড়ি পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না রেখে।
তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা নেই। ভবনের বাইরে গাড়ি রাখতে হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সব গাড়ি রাস্তার ওপর রাখা হচ্ছে। পাসপোর্ট অফিসে এত মানুষ সেবা নিতে যায়, সেখানেও পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এখনই ওই এলাকার যে অবস্থা, তাতে ভবিষ্যতে এখানে কী মাত্রায় যানজট হবে, তা সহজে অনুমেয়। বড় দুর্বলতা নিয়ে গড়ে উঠছে এলাকাটি।
সরকারি কর্মকমিশন ভবনেও গাড়ি রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। পাসপোর্ট অফিস ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সামনের রাস্তা দখল করে দুই ধারে গাড়ি রাখা হচ্ছে।
আগারগাঁওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের দপ্তর। এই ভবনের দুই পাশে দুটি বড় পুকুর ছিল। সেখানে একটি পুকুর ভরাট কমিশনই করছে আরেকটি বহুতল ভবন। সংকুচিত হয়ে পড়ছে অন্য পুকুরটিও। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি প্রায় দেড় শ বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্ততা আছে। নিয়মিত যাতায়াত থাকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের। সবার গাড়ি রাখতে হয় রাস্তার ওপর।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের উপপরিচালক দেওয়ান গোলাম সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, কমিশনের পাঁচতলাবিশিষ্ট ভবনটি যখন করা হয়, তখন নকশা সঠিকভাবে করা হয়নি। বেসমেন্ট রাখা হয়নি। এখন কমিশনের জন্য নতুন একটি ভবন হচ্ছে। সেখানে গাড়ি পার্কিংসহ অন্যান্য সুবিধা থাকবে।
সরকারি কর্মকমিশন ভবনেও গাড়ি রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। পাসপোর্ট অফিস ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সামনের রাস্তা দখল করে দুই ধারে গাড়ি রাখা হচ্ছে। এলজিইডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ মোহসীন প্রথম আলোকে বলেন, এলজিইডির জন্য আগারগাঁও এলাকায় নতুন একটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে গাড়ি রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। বন ভবনেও গাড়ি রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোতে (বিবিএস) যে হারে গাড়ি বাড়ছে, তা মাথায় রেখে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এখন ভবনের সামনে রাখা হচ্ছে গাড়ি।
আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) কার্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০২ সালে। তখন পিকেএসএফের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) ছিলেন জসীম উদ্দিন। এখন তিনি অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি)। জসীম উদ্দিন বলেন, তখন পিকেএসএফ ভবনের চারপাশে ছিল বস্তি। রাতে আলো ছিল না। এখন আগারগাঁও এলাকায় এলইডি বাতির আলোয় দিন-রাতের ব্যবধান করা কঠিন। মসৃণ রাস্তা। বহুতল ভবন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সামনে থেকে সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসএসি) কার্যালয়ের সামনে পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেলে অস্থায়ী দোকান বসে। চার লেনের সড়কের দুই পাশে রাত ১০টা পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য থাকে।
আগারগাঁও এলাকায় পরিবর্তন শুরু হয় ২০০৯ সালের পর থেকে। ধীরে ধীরে সেখানে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর যেতে শুরু করে। অনেকগুলো বিশেষায়িত হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিনোদন, আবাসনসহ নানা কারণে এই এলাকা থেকে মিরপুর পর্যন্ত বসবাসের চাহিদাও বাড়ছে। মেট্রোরেল চালু হলে পুরো এলাকার গুরুত্ব আরও বাড়বে। তবে দেশের প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র হতে চলা আগারগাঁও অপরিকল্পিত উন্নয়নের একটা উদাহরণও হতে পারে বলে আশঙ্কা নগর-পরিকল্পকদের মধ্যে আছে।
গত ৮ জুলাই ঘুরে দেখা গেল, বেশ কিছু ভবনের কাজ চলছে। আবার বেশ কিছু ভবনের কাজ শেষের পথে। নির্বাচন কমিশন অফিস একসময় ছিল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত পরিকল্পনা কমিশন চত্বরের ভেতরে। দুটি ভবনে চলত নির্বাচন কমিশন অফিস ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কাজ। চার বছর আগে নির্বাচন কমিশন অফিস নিয়ে যাওয়া হয় আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারের পাশে। নির্বাচন কমিশন এখন ১১তলা এক ভবনে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নিজস্ব ১২ তলা ভবন নির্মিত হচ্ছে আগারগাঁওয়ে। কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির কর্মকর্তারা। রাজধানীর শাহবাগে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) ভবনে তিন ফ্লোর ভাড়া নিয়ে সংস্থাটির অফিস কার্যক্রম চলছে এখন। বিটিআরসি ভবনের সঙ্গে লাগোয়া নির্মাণাধীন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) নিজস্ব ভবন। এখন রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে চলছে ইপিবি অফিস।
বিটিআরসির পাশেই নির্মিত হচ্ছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নিজস্ব ১৪ তলা অফিস। ভবনের কয়েকটি তলার কাজ শেষ করে সেখানে অফিস করছেন কর্মকর্তারা। এ বছরের শেষ নাগাদ পুরো কাজ শেষ হওয়ার কথা জানিয়েছে বিডা। বিনিয়োগ বোর্ড ও বেসরকারীকরণ কমিশনকে একীভূত করে ২০১৬ সালে বিডা গঠন করে সরকার। ১৪ তলা ভবনের কাজ শেষ হলে সেখানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) অফিস এবং জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) অফিসও চলে আসবে।
বিডার কর্মকর্তারা বলছেন, একই ভবনে সরকারের তিনটি সেবাদানকারী সংস্থার অফিস থাকলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সরকারি দপ্তরে ঘোরাঘুরির হয়রানি কিছুটা কমবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রথমে বিডা অফিসে নিবন্ধন করতে হয়। এখন তারা একই ভবনে বেজার কাছে গিয়ে জমি চাইতে পারবেন। একই ভবনে দক্ষ শ্রমিকের বিষয়ে এনএসডিএর কাছে সহযোগিতা চাইতে পারবেন।
পশ্চিম আগারগাঁও বাজার, যেটিকে মানুষ বিএনপি বাজার হিসেবে চেনে, সেই বাজার চলে যাচ্ছে পাশের বহুতল ভবনে। ১৭ তলা ভিতের ওপর এখন ৬ তলা নির্মিত হবে। বাজারের নাম মমতা টাওয়ার শপিং কমপ্লেক্স। সরকার বাজার কমিটিকে এক একর জায়গা দিয়েছে। কমিটি ৮১ কোটি টাকা খরচ করে ভবন নির্মাণ করছে।
পশ্চিম আগারগাঁও বাজার চলে গেলে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পুরান ঢাকা থেকে এখানে চলে আসবে। জায়গাটি ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পুরান ঢাকার নয়াবাজারে ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা একসঙ্গে অফিস করেন। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পাশাপাশি পুলিশ সুপার কার্যালয়ও আগারগাঁও এলাকায় চলে আসবে। মমতা টাওয়ারের পাশেই নির্মিত হচ্ছে কপিরাইট ভবন। এ বছরই নতুন ১২ তলা ভবনে ওঠার কথা জানিয়েছেন কপিরাইট অফিসের কর্মকর্তারা।
আগারগাঁওকে কীভাবে দেখছেন, জানতে চাইলে নগর-পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব প্রথম আলোকে বলেন, লুই আই কানের নকশায় প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র ছিল এই আগারগাঁও। ৫০ বছর পর এসে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। সব সরকারি দপ্তর আগারগাঁও চলে গেলে সেবা নিতে সময় কম লাগবে। তিনি বলেন, সব সরকারি দপ্তর আগারগাঁও চলে গেলে সেখানে চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু করা উচিত। গুলশান এলাকায় চক্রাকার বাস সার্ভিসের কারণে মানুষ বেশ উপকৃত হচ্ছে।
আগারগাঁওয়ে ২৫টি ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। আরও অন্তত ১০টি ভবনের কাজ চলছে। করোনার মধ্যে গত এক বছরে উদ্বোধন হয়েছে বেশ কয়েকটি নতুন ভবন। এর একটি ডাক ভবন। গুলিস্তানে এত দিন ডাক বিভাগের কার্যক্রম চলছিল। নির্বাচন কমিশনের পাশেই ১৪ তলার ভবনটি নির্মাণে খরচ হয়েছে ৯২ কোটি টাকা। ডাক ভবনের পেছনে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্স। ১৩ তলা ভবনটির নির্মাণকাজ ২০১৪ সালে শুরু হয়ে শেষ হয় ২০১৯ সালে। খরচ হয় ২২২ কোটি টাকা। দেশের বিজ্ঞানীদের একটি প্ল্যাটফর্ম করার পাশাপাশি সচিবালয় থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে ভবনটি করা হয়। এখনো এটি উদ্বোধন হয়নি।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের অফিসও মহাখালী থেকে চলে এসেছে আগারগাঁওয়ে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উল্টো পাশে ১৩ তলা পর্যটন করপোরেশনের ভবন উদ্বোধন হয়েছে গত বছর। এই ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশনের অফিসও রয়েছে, যা আগে ছিল কারওয়ান বাজারে।
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আগারগাঁও এলাকায় সব ভবন ২০ তলা করতে পারলে ভালো হতো। যদিও সেখানে ২০ তলা ভবন করতে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) আপত্তি রয়েছে। আবার এবিআর এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার অফিসের জন্য যথাক্রমে ৩০ এবং ১৯ তলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আগারগাঁওয়ে পুকুর ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ করায় উদ্বেগ জানালেন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তাঁর প্রশ্ন, বৃষ্টি হলে এ এলাকার পানি যাবে কোথায়? নিষ্কাশন ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে এ এলাকায়ও জলাবদ্ধতা তৈরি হবে। পুরো এলাকায় কোথাও সবুজায়ন রাখা হয়নি। যখন মেট্রোরেল চালু হবে, ওই এলাকায় মানুষের যাতায়াত আরও বাড়বে। তাই এখনই উচিত, সেখানে গাড়ির পার্কিংয়ের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা করা। একই সঙ্গে জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া। আর কিছু জায়গা সবুজায়নের জন্য রাখা।
জানতে চাইলে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে আমাদের যেভাবে নকশা দেওয়া হয়, আমরা সেভাবেই ভবন করে দিই। সেখানে আমাদের নিজেদের কিছু বলা বা করার থাকে না।’ তিনি বলেন, সরকারি দপ্তরগুলোতে গাড়ির ব্যবহার বাড়ছে। এ জন্য ভবনগুলোতে গাড়ি পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা উচিত। কোন দপ্তরের কেমন পার্কিং ব্যবস্থা দরকার কিংবা আগারগাঁও এলাকাকে সবুজায়ন ও পানিনিষ্কাশন করতে সরকারের এক দপ্তরের সঙ্গে আরেক দপ্তরের সমন্বয়ের ঘাটতি আছে বলেও মনে করেন গিয়াস উদ্দিন। তিনি বলেন, এটা ঠিক, আগারগাঁও এলাকায় পুরোদমে যখন প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হবে, তখন যানবাহনের ব্যাপক চাপ তৈরি হবে।