ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের কাজ চালুর অনুমতি

সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে আবার কাজ শুরু করার অনুমতি দিয়েছে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এমআরএ)। সংস্থাটি গত সোমবার এক প্রজ্ঞাপন জারি করে এ অনুমতি দিয়েছে।

গ্রাহকের সঞ্চয় ফেরত দেওয়া ও বোরো মৌসুমে মানুষের প্রয়োজনীয় ঋণের চাহিদা মেটাতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের নিয়ম মেনে দূরত্ব বজায় রাখা, উঠান বৈঠক না করা, নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে অফিসে না থাকা, অফিস জীবাণুমুক্ত রাখাসহ আনুষঙ্গিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রথম দফায় গত ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরে আরও একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং করার অনুমতি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম আগের প্রজ্ঞাপন অনুসারে এত দিন বন্ধ ছিল।

দেশে এখন বোরো ধান কাটার মৌসুম চলছে। এ কাজে অর্থ দরকার। এ ছাড়া অশস্য কৃষি উদ্যোক্তারাও (যেমন মৎস্য, পোলট্রি, পশুসম্পদ) অর্থের জন্য বিনিয়োগ করতে পারছিলেন না নতুন করে। প্রজ্ঞাপন জারি করতে এসব বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে নতুন ঋণ দেওয়া, প্রবাসী আয় পৌঁছে দেওয়া ও সামাজিক উন্নয়ন খাতে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা করতে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম দরকার বলে মনে করছে এমআরএ।

এমআরএ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে নিবন্ধিত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান আছে ৭৪৬টি। আর ক্ষুদ্রঋণ গ্রাহক প্রায় সাড়ে ৩ কোটি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রাহক ব্র্যাক ও আশার। ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ আদায়ের হার ৯৭ শতাংশের বেশি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে গ্রাহকেরা ঋণ নিয়েছেন প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। দেশে ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের সঞ্চয়ের পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা।

ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ গত সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতারা প্রান্তিক মানুষ, যাঁরা করোনার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখতে ঋণ প্রয়োজন। আর এখন ফসল কাটার মৌসুম চলছে, কৃষকদেরও ঋণ প্রয়োজন। এই সময়ে কৃষকেরা তাৎক্ষণিকভাবে ঋণ না পেলে সময়মতো ফসল বাজারে পৌঁছাবে না। এসব বিবেচনায় চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।