খুচরা বিক্রেতাদের দিকে দায় ঠেললেন মিলার–পাইকারেরা

দেশে খুচরা বাজারে চালের দাম কেন বাড়ছে তার কারণ জানেন না বলে দাবি করেছেন মিল মালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, উৎপাদন ও আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের পণ্যের দাম কিছুটা বাড়াতে হয়েছে। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করা তাঁদের কাজ নয়।

তবে পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ানো নিয়ে মিল মালিকদের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তাঁর অভিযোগ, ব্যবসায়ী ও মিল মালিকেরা সুযোগ পেয়ে কোনো কারণ ছাড়াই চালের দাম বাড়িয়েছেন।

দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর আমদানি, মজুদ, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে এফবিসিসিআই আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তাঁরা নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বিভিন্ন খাতের অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী নেতা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জয়পুরহাট চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল বারী বলেন, ‘চলতি মৌসুমে কালবৈশাখী ও বন্যার পানিতে প্রায় ২৫ শতাংশ ধান নষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি উৎপাদন খরচও বেড়েছে। এসব কারণে চিকন চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু আমরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জেনেছি, মিল রেট থেকে খুচরা পর্যায়ে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দরে চাল বিক্রি হচ্ছে, যেটা সর্বোচ্চ পাঁচ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়।

এখন খুচরা পর্যায়ে কেন এত বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে তা আমরা জানি না।’ এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘মিল গেট পর্যন্ত চালের দামের বিষয়ে আমরা দায়িত্ব নিতে পারব, কিন্তু খুচরা পর্যায়ে বাড়তি দামের দায় আমরা নেব না।’ সভায় একই সুরে কথা বলেন আরও কয়েকজন চালকল মালিক ও ব্যবসায়ী।

অন্যদিকে চালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে প্রাথমিকভাবে মিল মালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদেরই দায়ী করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘চালের একটা সংকট এখন আছে বলে মনে হচ্ছে। আসলে তো কোনো সংকট নেই। কয়েক দিনের বন্যা ও বৃষ্টিতে মিল মালিকেরা সুযোগ পেয়ে কোনো কারণ ছাড়াই চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

ধান নষ্ট হলে তার প্রভাব পড়বে আরও পরে। এখনই কেন দাম বাড়বে? দাম বাড়ার পরে সরকার যখন আপনাদের ধরতে গেছে, তখন আবার দাম কমতে শুরু করেছে। এভাবে দাম বাড়ানোর সংস্কৃতি থেকেও আমাদের বের হতে হবে।’

জসিম উদ্দিন আরও বলেন, প্যাকেটজাত চালের দাম নির্ধারণপ্রক্রিয়া ঠিক আছে কি না, তা তদারক করতে আলাদা নীতিমালা প্রয়োজন।

দেশে পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল, গম ও ভুট্টাজাতীয় খাবারের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেন, কোরবানির ঈদ পর্যন্ত এসব পণ্যের দাম ও সরবরাহ নিয়ে সংকট হবে না।